এটিএমে নিরাপত্তারক্ষী নেই, সাবধান করতে তাই পোস্টার পড়েছে বারাসতের এটিএমে। নিজস্ব চিত্র
রেল স্টেশন সংলগ্ন এটিএম। রাত পর্যন্ত লোকের আনাগোনা লেগেই থাকে। কিন্তু থাকেন না কোনও রক্ষী!
যশোর রোড লাগোয়া বেসরকারি ব্যাঙ্কের এটিএম কাউন্টার। দিনের বেলা সর্বক্ষণ গ্রাহকদের ভিড়। কিন্তু রাত এগারোটার পরে এলাকা সুনসান হয়ে যায়। এটিএম কাউন্টার পাহারা দেওয়ার জন্য থাকেন না কোনও রক্ষী।
এই দু’টি নেহাতই উদাহরণ। আদতে শহরতলির বিভিন্ন পাড়ায় থাকা এটিএম কাউন্টারের ছবিটা এমনই। সম্প্রতি রক্ষীবিহীন এটিএম কাউন্টারের বিপদ টের পেয়েছেন খাস কলকাতার বাসিন্দারা। রোমানীয় জালিয়াতদের খপ্প়়রে পড়ে লোপাট হয়েছে প্রচুর মানুষের টাকা। সেই ঘটনার পরে শহরের এটিএম কাউন্টারগুলির নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি নজরে এসেছে। কিন্তু অনেকেই বলছেন, কলকাতা লাগোয়া শহরতলিতেও প্রচুর এটিএম কাউন্টার রয়েছে। তার অধিকাংশেই নিরাপত্তারক্ষী থাকেন না বলে অভিযোগ।
গ্রাহকদের একাংশের বক্তব্য, শহরতলি এবং মফস্সলেও এটিএম কার্ড ব্যবহারকারীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। ফলে কলকাতার পরে শহরতলির এটিএম কাউন্টারগুলিও যে জালিয়াতদের নিশানায় পড়বে না, তার নিশ্চয়তা কোথায়? গোয়েন্দাদেরও একাংশ বলছেন, শুধু রোমানীয় নয়, এটিএম কাউন্টারে স্কিমিং মেশিন লাগিয়ে তথ্য হাতিয়ে নেওয়া এবং সেই তথ্য ব্যবহার করে কার্ডের প্রতিলিপি তৈরি করে তা দিয়ে আসল গ্রাহকের টাকা লোপাট করার ছক আরও দুষ্কৃতী দলের জানা রয়েছে। ফলে একটি গ্যাং ধরা পড়লেই যে অপরাধ কমে গেল, তা বলা যায় না।
আরও পড়ুন: ‘ঠাঁইহারা’ ছাত্রীর পাশে বিশ্ববিদ্যালয়
তা হলে এটিএম কাউন্টারে যাওয়া গ্রাহকদের নিরাপত্তার উপায় কী? বিভিন্ন ব্যাঙ্কের কর্তারা অবশ্য বারবারই এটিএম ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্কতার দায় গ্রাহকদের সচেতনতার উপরে চাপিয়েছেন। যদিও পুলিশ সূত্রে অবশ্য এ-ও দাবি, কলকাতার ঘটনার পরেই এটিএম কাউন্টারের নিরাপত্তা নিয়ে বেশ কিছু পদক্ষেপ করা হয়েছে। হাওড়া কমিশনারেটের এক কর্তা জানান, রাতে টহলদার ভ্যানকে এটিএম কাউন্টারগুলির উপরে নজরদারি বাড়াতে বলা হয়েছে। সিসিটিভি নজরদারিও বাড়াতে বলা হয়েছে। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের গোয়েন্দা বিভাগের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘বিভিন্ন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করা হয়েছে। সব এটিএমে যাতে রক্ষী থাকেন, সেটা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। সিসিটিভি বসানো এবং তা নিয়মিত পরীক্ষা করতে বলা হয়েছে। এর বাইরেও আরও কিছু পদক্ষেপ করা হয়েছে। কিন্তু সেগুলি গোপন থাকাই ভাল।’’
বিধাননগর কমিশনারেটের এক কর্তা জানান, ব্যাঙ্কের কর্তাদের নিয়ে প্রতিটি থানা এলাকার এ়টিএমে পরিদর্শন করা হয়েছে। সে বিষয়ে কমিশনারেটের শীর্ষ কর্তাদের রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে। ব্যাঙ্কগুলিকে কিছু নির্দেশিকাও পাঠানো হয়েছে। রাজ্য পুলিশের এক কর্তা জানান, শহরতলি ও মফস্সলের বহু জায়গাতেই ব্যাঙ্কের শাখার সঙ্গেই এটিএম রয়েছে। স্থানীয় থানার যে দলগুলি ব্যাঙ্কের এলাকায় টহলদারিতে যায়, তাদের রাতে এটিএম কাউন্টার তল্লাশিতে জোর দিতে বলা হয়েছে। বাইক চেপে টহলদারি বাড়ানো হয়েছে।