গরমে বাস ছেড়ে ভিড় বেশি মেট্রোয়

অন্য বারের তুলনায় গরমের দাপট এ বার অনেক বেশি থাকায় সমাবেশে আসা কর্মী সমর্থকদের বড় অংশ মেট্রোমুখী ছিলেন বলে খবর। দুপুর ১২ টার পর থেকেই দক্ষিণে কালীঘাট থেকে উত্তরে চাঁদনি চকের মধ্যে থাকা স্টেশনগুলিতে ভিড় বাড়তে শুরু করে। 

Advertisement

ফিরোজ ইসলাম

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০১৯ ০৩:৪৩
Share:

ঠেলাঠেলি: সমাবেশ শেষে মেট্রোয় যাত্রীদের ঠেলে ভিতরে ঢোকাচ্ছেন এক আরপিএফ কর্মী। রবিবার। চাঁদনি চক স্টেশনে। নিজস্ব চিত্র

সমাবেশের কারণে রুট বন্ধ রেখে যথেচ্ছ বাস তুলে নেওয়ার পথে হাঁটল না শাসক দল। দলীয় কর্মী-সমর্থকদের ধর্মতলার সমাবেশে নিয়ে আসার জন্য শহরের কমবেশি সব বেসরকারি রুট থেকেই বাস এবং মিনিবাস নেওয়া হলেও, রবিবার বেসরকারি পরিবহণ পুরোপুরি স্তব্ধ হয়ে যায়নি। উত্তর এবং দক্ষিণ শহরতলি ছাড়াও সল্টলেক, নিউ টাউন, বাগুইআটি, বাঙুর এবং বিমানবন্দর এলাকার বিভিন্ন বাসরুটে কমবেশি বাস চলেছে। প্রায় ছ’শোর কাছাকাছি মিনিবাস নেওয়া হয়েছিল বলে খবর।

Advertisement

জয়েন্ট কাউন্সিল অব বাস সিন্ডিকেট্‌সের সহ-সম্পাদক টিটু সাহা এবং মিনিবাস অপারেটর্স কো অর্ডিনেশন কমিটির সহ সভাপতি প্রদীপনারায়ণ বসু বলেন, ‘‘পরিবহণ শ্রমিকদের অনেকেই সমাবেশে যোগ দিয়েছিলেন। ফলে বাসকর্মী না থাকার কারণেও কিছু রুটে বাস কম চলেছে। তবে সে ভাবে রুট বন্ধ থাকার ঘটনা ঘটেনি।’’

তবে অন্য বারের তুলনায় গরমের দাপট এ বার অনেক বেশি থাকায় সমাবেশে আসা কর্মী সমর্থকদের বড় অংশ মেট্রোমুখী ছিলেন বলে খবর। দুপুর ১২ টার পর থেকেই দক্ষিণে কালীঘাট থেকে উত্তরে চাঁদনি চকের মধ্যে থাকা স্টেশনগুলিতে ভিড় বাড়তে শুরু করে।

Advertisement

সমাবেশ শেষ হওয়ার কিছু ক্ষণের মধ্যে দুপুর ২ টো নাগাদ ময়দান, পার্ক স্ট্রিট, এসপ্লানেড এবং চাঁদনি চক স্টেশন সমাবেশে আগত তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের ভিড় উপচে পড়ে। ওই সময়ে উত্তরে দমদম এবং দক্ষিণে কবি সুভাষগামী কোনও মেট্রোতেই পা রাখার জায়গা ছিল না। বিভিন্ন স্টেশনে ভিড় সামলানোর জন্য রেলরক্ষী বাহিনীর কর্মীদের মোতায়েন করা হলেও ভিড়ের চাপে একাধিক মেট্রোকে অতিরিক্ত সময় থামতে হয়।

পরিস্থিতি সামাল দিতে দুপুরের দিকে মেট্রোর পক্ষ থেকে ৬টি অতিরিক্ত ট্রেন চালাতে হয়। গত রবিবার থেকে মেট্রোর সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। আগে রবিবার ১১০টি ট্রেন চললেও গত রবিবার থেকে ওই সংখ্যা বেড়ে ১২৪ টি করা হয়েছে। কিন্তু তার পরেও এ দিন ভিড়ের কারণে আর ছয়টি ট্রেন বেশি চালাতে হয় বলে মেট্রো সূত্রে খবর। কলকাতা মেট্রো রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক ইন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কয়েকটি স্টেশনে যাত্রীদের ভিড় খুব বেশি থাকায় এ দিন ৩ জোড়া অতিরিক্ত ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’’

মেট্রো সূত্রে খবর, এ দিন সকাল থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত যাত্রীর সংখ্যা ছিল ২ লক্ষ ৩০ হাজারের কাছাকাছি। গত রবিবার ওই একই সময়ে মেট্রোতে যাত্রীদের সংখ্যা ছিল ১ লক্ষ ৬০ হাজারের মতো। ফলে সমাবেশের কারণে এ দিন দুপুর থেকে বিকেলের মধ্যে প্রায় ৭০ হাজার যাত্রী মেট্রোতে বেশি চাপেন। সন্ধ্যার দিকে অবশ্য ওই ভিড়ের পার্থক্য গত রবিবারের তুলনায় কিছুটা কমে আসে।

সপ্তাহের কাজের দিনের তুলনায় রবিবার হাওড়া এবং শিয়ালদহে লোকাল ট্রেনের সংখ্যা প্রায় অর্ধেক থাকে। তবে এ দিন সমাবেশের কারণে সপ্তাহের অন্যান্য দিন চলে এমন ৪টি ট্রেন হাওড়া থেকে অতিরিক্ত চালানো হয়েছে। শিয়ালদহ থেকে সপ্তাহের অন্যান্য দিন চলে এমন দু’টি ট্রেন বেশি চালানো হয়। এ ছাড়াও শিয়ালদহ মেন এবং দক্ষিণ শাখা মিলে ৮টি অতিরিক্ত লোকাল ট্রেন চালানো হয়।

দুপুরের দিকে শহরের বিভিন্ন রুটে অটো পেতে গিয়েও সমস্যায় পড়েন যাত্রীদের কেউ কেউ। সকালে হাওড়া এবং শিয়ালদহ থেকে প্রিপেড ট্যাক্সি পাওয়ার ক্ষেত্রেও যাত্রীদের অনেকেই সমস্যায় পড়েন। তবে সন্ধ্যার দিকে পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন