ফের একাধিক পেট্রোল পাম্পের বিরুদ্ধে সরকারি নির্দেশ অমান্য করে হেলমেটবিহীন মোটরবাইক আরোহীকে তেল দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। যার ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার বন্দর এলাকার দু’টি পেট্রোল পাম্পের বিরুদ্ধে পশ্চিম বন্দর এবং দক্ষিণ বন্দর থানায় সরকারি নির্দেশ অমান্যের অভিযোগ দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রের খবর, হেলমেট না পরলে সেই বাইক-আরোহীকে পেট্রোল পাম্প জ্বালানি দেবে না— প্রায় দেড় বছর আগে এমনই ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মোতাবেক কলকাতার পুলিশ কমিশনারের নির্দেশে শহরের সমস্ত পেট্রোল পাম্পে ‘নো হেলমেট, নো পেট্রোল’ নিয়ম চালু হয়েছিল। অভিযোগ, প্রথম দিকে পুলিশের কড়া নজরদারির ফলে হেলমেট ছাড়া মোটরবাইক আরোহীদের তেল বিক্রি বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু নজরদারি শিথিল হতেই বিভিন্ন পেট্রোল পাম্পে ওই সরকারি নির্দেশ লঙ্ঘিত হতে শুরু করে বলে অভিযোগ। বিশেষ করে বন্দর এলাকায় সেই প্রবণতা বেশি মাত্রায় নজরে আসে পুলিশকর্তাদের। যার জেরে ওই এলাকার থানাগুলিকে পেট্রোল পাম্পের উপরে নজরদারি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
পুলিশ জানায়, পেট্রোল পাম্পের বিরুদ্ধে প্রথম অভিযোগটি দায়ের হয় বৃহস্পতিবার বিকেলে, পশ্চিম বন্দর থানায়। ওই দিন এলাকায় টহলদারিতে বেরিয়েছিলেন থানার দুই অফিসার। সিজিআর রোড ও ব্রুক লেনের সংযোগস্থলের একটি পেট্রোল পাম্পে তাঁরা দেখতে পান, হেলমেট ছাড়াই বাইক আরোহীরা তেল নিয়ে যাচ্ছেন। এক অফিসার পাম্পে গিয়ে জানতে চান, সরকারি নিয়ম অমান্য করে তেল দেওয়া হচ্ছে কেন? কিন্তু পাম্প কর্তৃপক্ষ সদুত্তর দিতে পারেননি। এর পরেই ওই পেট্রোল পাম্প কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে পশ্চিম বন্দর থানায় সরকারি নির্দেশ অমান্যের অভিযোগ দায়ের করেন ওই অফিসার।
সেই রাতে একই অভিযোগ দায়ের করা হয় দক্ষিণ বন্দর থানা এলাকার ডিইবি রোডের একটি পেট্রোল পাম্পের বিরুদ্ধে। সেখানেও নিয়মের তোয়াক্কা না করে হেলমেটহীন আরোহীদের তেল দেওয়া হচ্ছিল বলে অভিযোগ।
লালবাজার জানিয়েছে, ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ অভিযানের মধ্যেই রয়েছে ‘নো হেলমেট, নো পেট্রোল’।
কিন্তু বন্দর এলাকার বিভিন্ন জায়গায় সেই নিয়ম মানা হচ্ছে না বলে একাধিক বার অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। মেটিয়াবুরুজ-নাদিয়ালের মতো এলাকায় অধিকাংশ মোটরবাইক আরোহীই হেলমেট পরেন না বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। চলতি সপ্তাহে কলকাতা পুলিশের বন্দর এলাকার কর্তারা ‘নো হেলমেট, নো পেট্রোল’ কর্মসূচির উপরে জোর দিয়ে ব্যবস্থা নিতে বলেন। এক পুলিশকর্তার কথায়, ‘‘মহানগরে গত এক বছর ধরে প্রচার চালানোর ফলে দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে। কিন্তু হেলমেট ছাড়া বেপরোয়া মোটরবাইকের দাপট বজায় ছিল শহরের রাস্তায়। তা আটকাতেই নজরদারি কঠোর করার জন্য থানাকে বলা হয়েছিল।’’