টিটাগড়

প্রসাদ বিলির দশ ঘণ্টা পরে মিলল দম্পতির মৃতদেহ

বাড়িতে ঘটা করে লক্ষ্মীপুজো করেছিলেন ওঁরা। শনিবার রাত ১১টা পর্যন্ত প্রসাদ বিলি করতেও দেখেছেন পড়শিরা। রবিবার সকালে সেই দম্পতিরই নিথর দেহ উদ্ধার হল তাঁদের বাড়ি থেকে। মৃতদের নাম সঞ্জয় পাল (৩৫) এবং সীমা পাল (২৭)। কী ভাবে মৃত্যু হল পাল দম্পতির?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০১৬ ০২:৪৭
Share:

সঞ্জয় ও সীমা।

বাড়িতে ঘটা করে লক্ষ্মীপুজো করেছিলেন ওঁরা। শনিবার রাত ১১টা পর্যন্ত প্রসাদ বিলি করতেও দেখেছেন পড়শিরা। রবিবার সকালে সেই দম্পতিরই নিথর দেহ উদ্ধার হল তাঁদের বাড়ি থেকে। মৃতদের নাম সঞ্জয় পাল (৩৫) এবং সীমা পাল (২৭)। কী ভাবে মৃত্যু হল পাল দম্পতির? উত্তর নেই প্রতিবেশী-পরিজন কারও কাছেই। মৃত্যুর কারণ নিয়ে ধন্দ রয়েছে তদন্তকারীদেরও।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, টিটাগড় থানার মোহনপুরের চালবাজারে তিন কামরার বাড়িটিতে আট বছরের ছেলে সায়নকে নিয়ে থাকতেন সঞ্জয় ও সীমা। পেশায় সোনার দোকানের কারিগর সঞ্জয়বাবু সচ্ছল জীবনযাপনেই অভ্যস্ত ছিলেন বলে জানিয়েছেন প্রতিবেশীরা। বাড়িতে পাশাপাশি দু’টি ঘরের একটিতে থাকতেন স্বামী-স্ত্রী। সেই ঘরেই লক্ষ্মীপুজো হয়েছিল। পাশের ঘরে থাকে সায়ন।

পুলিশ জানায়, এ দিন সকাল সাড়ে সাতটায় ঘুম ভেঙে বাবা-মার ঘরে গিয়েছিল সায়ন। ভেজানো দরজা ঠেলতেই দেখে, গলায় দড়ি দেওয়া অবস্থায় মাটিতে পড়ে রয়েছেন বাবা। মা উপুড় হয়ে পড়ে খাটের উপরে। মুখ থেকে বেরিয়ে আসছে রক্ত। এমন ভয়াবহ দৃশ্য দেখে ভয়ে সায়ন চিৎকার করে ওঠে। তা শুনে ছুটে আসেন আশপাশের বাড়ির বাসিন্দারা।

Advertisement

প্রতিবেশীরা এসে দেখেন, ঘরের সিলিং থেকে তখনও ঝুলছে ছিঁড়ে যাওয়া দড়ির অংশ। তাঁরাই সীমার বাপেরবাড়িতে খবর দেন। খবর দেওয়া হয় স্থানীয় থানার পুলিশকেও। পুলিশ এসে ঘর থেকে ওই দম্পতির দেহ দু’টি উদ্ধার করে।

পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার পরে ওই ঘরে তল্লাশি চালিয়ে এখনও কোনও সুইসাইড নোট মেলেনি। দু’জনের মৃত্যু কী ভাবে ঘটল, ধন্দ রয়েছে তা নিয়েও। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, সম্ভবত কীটনাশক খেয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন সীমা। অথবা স্ত্রীকে খুন করে আত্মঘাতী হয়েছেন সঞ্জয়। কেন এমন করলেন তাঁরা, তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।

ঘটনার আকস্মিকতায় হতবাক আত্মীয়-প্রতিবেশী সকলেই। তাঁদের প্রশ্ন, কী এমন হল যে পুজোর প্রসাদ বিলির দশ ঘণ্টার মধ্যে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেল পাল দম্পতিকে? আগামী মঙ্গলবার সায়নের জন্মদিন। প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, এর জন্য তুমুল প্রস্তুতি চলছিল। আত্মীয়-বন্ধু মিলে প্রায় দুশো জন নিমন্ত্রিত ওই দিন।

সঞ্জয়বাবুর বাড়ির পাশেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকেন তাঁর আত্মীয়েরা। আত্মীয়-প্রতিবেশীদের কথায়: সকলের সঙ্গেই সুসম্পর্ক ছিল পাল দম্পতির। বাজারে তাঁদের কোনও ধার-দেনার খবরও নেই। তবে সঞ্জয় ও সীমা দু’জনেই খুব চাপা স্বভাবের ছিলেন। ফলে তাঁদের নিজেদের মধ্যে কোনও অশান্তি ছিল কি না, তা জানা নেই কারওরই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন