কালীঘাট মন্দিরের আকর্ষণ বাড়াতে মন্দির চত্বর ও দুধপুকুরের চারপাশ সৌন্দর্যায়নের কর্মসূচি নেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মাস সাতেক আগে মুখ্যমন্ত্রী এ নিয়ে নবান্নে বৈঠক করে কলকাতা পুর প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, দ্রুত কাজ সম্পন্ন করতে। কিন্তু নবান্ন সূত্রে খবর, কাজ বিশেষ এগোয়নি। সেই কাজেরই হাল জানতে আগামী ৩১ জানুয়ারি পুর প্রশাসনের এক দল অফিসারকে ডেকে পাঠিয়েছেন মুখ্যসচিব মলয় দে। পুরসভা সূত্রে খবর, ওই দিন দুপুর ১২টায় মুখ্যসচিবের ঘরে বৈঠক হবে। নবান্ন সূত্রের খবর, কালীঘাট মন্দির সংলগ্ন এলাকার উন্নয়ন, সৌন্দর্যায়ন-সহ আনুষঙ্গিক কাজের তালিকা ধরে আলোচনা হবে। এই কাজে আইনত কোনও জটিলতা আছে কি না এবং কী ভাবে তার সমাধান হতে পারে, সবিস্তার তা তুলে ধরা হবে সেখানে।
পুরসভা সূত্রের খবর, গত অগস্টে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরেই পুরভবনে এ নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক হয়েছে। সেখানে এলাকার বিধায়ক তথা মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, দক্ষিণ কলকাতার সাংসদ সুব্রত বক্সী, মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম-সহ মন্দির কমিটির কর্মকর্তারাও ছিলেন। তখনই ওই কাজে পরামর্শদাতা হিসেবে নিযুক্ত করা হয় একটি সংস্থাকে। একশো বছরেরও আগে মন্দিরের কাঠামো এবং রাস্তাঘাট কেমন ছিল, তা নিয়ে তথ্যচিত্র পুরসভার বৈঠকে দেখানো হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রীর মতে, দেশ-বিদেশের মানুষের কাছে আকর্ষণীয় স্থান কালীঘাট মন্দির। সেই মতো চত্বরটি সাজানো দরকার। সে কথা মাথায় রেখেই ওই পরামর্শদাতা সংস্থা নানা দেশের বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী এলাকার সাজসজ্জা দেখায়। দেখানো হয়, কী ভাবে সে সব এলাকাকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর মতে, এ ভাবে কাজ করলে শুধু মন্দিরের আকর্ষণ বৃদ্ধি নয়, রাজ্যের পর্যটন শিল্পও চাঙ্গা হবে।
কিন্তু গত ছ’মাসে বার কয়েক বৈঠক হয়েছে। মন্ত্রী, মেয়র, সাংসদেরা এলাকা ঘুরে দেখেছেন। তবে কাজ চালু হয়নি। যত দ্রুত সম্ভব, কাজ শুরু করতে চায় নবান্ন। সেই লক্ষ্যেই ৩১ তারিখ জরুরি বৈঠক ডেকেছেন মুখ্যসচিব। মন্দির চত্বরে পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা, জাজেস কোর্ট রোড থেকে উড়ালপুল বানানো, কালীঘাট মন্দিরের বোর্ড গঠন এবং অর্থ সংস্থান কী ভাবে হবে— সব নিয়েই আলোচনা হতে পারে বৈঠকে। সেই সঙ্গে কথা হবে হাইকোর্টের নির্দেশ মতো আইন মেনে এগোতে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেলের পরামর্শ নেওয়ার বিষয়ে। পুর কর্তাদের ধারণা, বৈঠকের পরে দ্রুতই কাজ শুরু হবে।
নবান্ন সূত্রে খবর, ওই দিন পুর অফিসারদের সঙ্গে বৈঠকের পরেই এলাকার জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গেও নবান্নে একটি বৈঠক ঠিক করা হয়েছিল। কিন্তু সে দিন তৃণমূলের কোর কমিটির বৈঠক আছে। তাই সৌন্দর্যায়ন সংক্রান্ত দ্বিতীয় বৈঠকটির দিন বদলানোর কথা চলছে।