খানিকটা অভাবে পড়েই আধুনিক হতে ‘বাধ্য’ হচ্ছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ!
খড়্গপুরে রেলের নিজস্ব ছাপাখানা উঠে গিয়েছে মাস কয়েক আগেই। অন্য কোথাও থেকে টিকিট ছাপিয়ে নিয়ে আসার মতো সময়ও আর হাতে নেই।
ফলে পুজোর কয়েক দিন মেট্রোয় কাগজের টিকিট ব্যবহারের পরিকল্পনা এ বছর থেকে বাতিল করছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। তার বদলে বুকিং কাউন্টার থেকে প্লাস্টিকের টোকেনই দেওয়া হবে যাত্রীদের। এ জন্য কয়েক লক্ষেরও বেশি টোকেন সরবরাহের বরাত দিচ্ছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ।
মেট্রো সূত্রে খবর, পুজোর কয়েক দিনে মেট্রোয় উপচে পড়া যাত্রীদের ভিড় সামাল দিতে গত কয়েক বছর ধরে প্লাস্টিকের টোকেনের বদলে কাগজের টিকিট ব্যবহার করাই রেওয়াজ ছিল। সে জন্য পুজোর প্রায় তিন মাস আগে থেকে খড়্গপুরে রেলের নিজস্ব ছাপাখানায় কয়েক লক্ষ কাগজের টিকিট ছাপার বরাত দিতে হত। পুজোর চার দিন স্মার্ট কার্ডের পাশাপাশি একমাত্র ওই কাগজের টিকিটই ব্যবহার করা হত। টোকেন খোয়া যাওয়া ছাড়াও, বিভিন্ন মেট্রো স্টেশনে আচমকা আছড়ে পড়া ভিড়ের চাহিদা মতো টোকেন সরবরাহ করা যাবে কি না তা নিয়ে আশঙ্কায় ভুগতেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। ফলে কাগজের টিকিট ব্যবহার করা অসুবিধাজনক হলেও ওই ব্যবস্থা মেনে নিতে হত। ভিড়ের মধ্যে যাত্রীরা যথাযথ স্টেশনের টিকিট কাটছেন কি না তা-ও সব সময় যাচাই করা সম্ভব হত না।
কিন্তু টোকেন ব্যবহার করা গেলে ওই আশঙ্কা আর থাকে না। পাশাপাশি আশঙ্কা রয়েই গিয়েছে, পুজোয় যে পরিমাণ ভিড় হয় তা কী ভাবে সামলানো হবে?
মেট্রো কর্তাদের একাংশের দাবি, গত কয়েক বছর ধরেই পুজোর চার দিনের তুলনায় প্রাক্ পুজো দিনগুলিতে ভিড় অনেক বেশি হয়। তৃতীয়া থেকে পঞ্চমীর মধ্যে ভিড় রেকর্ড ছুঁয়ে ফেলে। শেষ মুহূর্তে পুজোর বাজার ছাড়াও মণ্ডপ দেখতে দর্শনার্থীদের ভিড় হয় ওই সময়েই। গত বছর ওই সময়ে এক দিনে সর্বোচ্চ যাত্রী সংখ্যা ছিল ৮ লক্ষ ৭৮ হাজারের কাছাকাছি। কার্ড এবং টোকেন ব্যবহার করেই ওই পরিস্থিতি সামাল দেওয়া গেলে পুজোর দিনগুলিতেই বা তা দেওয়া যাবে না কেন?
এ ছাড়া ১০-১২ লক্ষ কাগজের টিকিট ছাপার খরচও যথেষ্ট বেশি। ওই ব্যবস্থা যথেষ্ট পরিবেশ বান্ধব নয় বলেও জানান এক মেট্রো কর্তা। তুলনায় টোকেন ব্যবহার করা অনেক সুবিধাজনক। ওই মেট্রো কর্তা বলেন, “পুজোর কথা মাথায় রেখে বিশেষ ধরনের টোকেনের বরাত দেওয়া হচ্ছে। তাতে মেট্রোর খরচ খুব একটা বাড়বে না। বরং কাগজের টিকিটে খরচ বেশি হত। টোকেন পুনর্ব্যবহারের সুযোগ থাকায় অর্থ সাশ্রয়ও হবে।”