পুরসভার কাজ নিয়ে খোঁজ ববির

পুরসভা সূত্রের খবর, গত সপ্তাহেই ৯ নম্বর বরো অফিসে একটি বিশেষ বৈঠক ডেকেছিলেন পুরমন্ত্রী। সেখানে জল সরবরাহ, নিকাশি, আলো থেকে শুরু করে পুরসভার সমস্ত দফতরের কর্তাদের হাজিরা দিতে হয়েছিল।

Advertisement

দেবাশিস ঘড়াই

শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০২:১৩
Share:

পুরমন্ত্রী ফিরহাদ (ববি) হাকিম।

বৃষ্টি হলে কোথায় কোথায় জল জমার আশঙ্কা রয়েছে, মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে কী কী করতে হবে, কেন ঠিকাদার সংস্থা ঠিকমতো কাজ করছে না, এমন হাজারো রিপোর্ট তৈরি করতে হয়েছে পুরকর্তাদের! মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কে দেওয়ার জন্য নয়। পুরমন্ত্রী ফিরহাদ (ববি) হাকিমকে দেওয়ার জন্য!

Advertisement

পুরসভা সূত্রের খবর, গত সপ্তাহেই ৯ নম্বর বরো অফিসে একটি বিশেষ বৈঠক ডেকেছিলেন পুরমন্ত্রী। সেখানে জল সরবরাহ, নিকাশি, আলো থেকে শুরু করে পুরসভার সমস্ত দফতরের কর্তাদের হাজিরা দিতে হয়েছিল। বৈঠকে ফিরহাদ খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পুরকর্তাদের থেকে জানতে চান, তাঁর কলকাতা বন্দর ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রে পুরসভার যে সমস্ত প্রকল্পগুলির কাজ চলছে, সেগুলির কী পরিস্থিতি। কোনও কোনও প্রকল্পের ক্ষেত্রে মন্ত্রী ‘অসন্তোষ’ প্রকাশ করেন, কোথাও কাজের রূপরেখা তৈরি করে দেন। ওই দুই কেন্দ্রে পুর প্রকল্পের কাজগুলি কী ভাবে দ্রুত করা যায়, সে ব্যাপারেও পুরকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন তিনি।

তবে মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় থাকা সত্ত্বেও কেন ফিরহাদ পুরসভার কাজের অগ্রগতি নিয়ে জানতে চাইছেন, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে পুর মহলে। আধিকারিকেরা
জানাচ্ছেন, কিছু দিন আগে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসও তাঁর নিজের কেন্দ্রে পুরসভার কাজের অগ্রগতি নিয়ে আধিকারিকদের ডেকে বৈঠক করেছিলেন। ফলে সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে পুরসভার কাজ নিয়ে ববি-অরূপের রিপোর্ট চাওয়া ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলেই মনে করছেন অনেকে। তবে কি মেয়রের নেতৃত্বাধীন পুরসভার কাজে ভরসা রাখতে পারছেন না পুরমন্ত্রী? এই প্রশ্নও ঘুরপাক খাচ্ছে পুরসভার অন্দরে।

Advertisement

পুরসভা সূত্রের খবর, গত সপ্তাহের ওই বৈঠকে জল সরবরাহ, নিকাশি, আলো, উদ্যান, ইঞ্জিনিয়ারিং-সহ পুরসভার সমস্ত দফতরের কর্তাদের সঙ্গেই বৈঠকে বসেছিলেন ফিরহাদ। এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘এর আগে অক্টোবরে পুরসভার অফিসারদের সঙ্গে এক বার বৈঠক করেছিলেন বটে পুরমন্ত্রী। কিন্তু সেটা এত সার্বিক ভাবে নয়! কিন্তু এ বার সব কিছু খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে জানতে চেয়েছেন। এ ধরনের বৈঠক এই প্রথমই বলা যায়।’’ বৈঠকে উপস্থিত ৭৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দেবলীনা বিশ্বাস বলেন, ‘‘পুরসভার কাজ নিয়ে সামগ্রিক আলোচনা হয়েছে।’’ ১৩৩ নম্বর ওয়ার্ড তথা ১৫ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান রণজিৎ শীল বলেন, ‘‘খিদিরপুর, ভবানীপুর এলাকার নিকাশি ও রাস্তা সংস্কার নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’’

তবে আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, আটকে থাকা কাজ নিয়ে ‘অসন্তোষ’ও প্রকাশ করেন পুরমন্ত্রী। যে সব ঠিকাদার সংস্থা কাজ শুরু করেনি, তাদের ক্ষেত্রেও ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। কোথাও কোথাও একাধিক বার দরপত্র ডেকেও কেন সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না, তা-ও জানতে চেয়েছেন। এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘সব ব্যাপারেই সক্রিয় ছিলেন পুরমন্ত্রী।’’

ববি অবশ্য বলছেন, মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর এলাকায় পুরসভার কাজের দেখভালের দায়িত্ব তাঁরই। তাই এই বৈঠক। মন্ত্রীর কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর কেন্দ্র ও আমার কেন্দ্রে পুরসভার কী কী কাজ বাকি রয়েছে, কোন কোন কাজে অসুবিধা হচ্ছে, সেগুলি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। যাদবপুর, টালিগঞ্জ নিয়ে এর আগে অরূপ বিশ্বাসও বৈঠক করেছেন। শোভন চট্টোপাধ্যায় তো সার্বিক ভাবে মেয়র হিসেবে দেখভাল করেন। আমি শুধু বিধায়ক হিসেবে খোঁজ নিয়েছি।’’ আর মেয়র বলছেন, ‘‘সকলের সমন্বয়েই কাজ হচ্ছে। সবাই যদি নজর দেন, তা হলে তো কাজে সুবিধাই হয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন