রাজ্যের দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু। — ফাইল চিত্র।
পুর নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে রাজ্যের দমকলমন্ত্রী সুজিত বসুর স্ত্রী, কন্যা ও পুত্রকে তলব করেছে ইডি। শুধু তাঁদের নয়, সোমবার তাঁর জামাইকেও ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সেই প্রসঙ্গে মন্ত্রীর বক্তব্য, ‘‘যদি না-যায় তো বলবে, পালিয়ে যাচ্ছে।’’ সুজিত এ-ও জানান, তিনি পালিয়ে যাওয়ার লোক নন। বুধবার সুজিতের স্ত্রীকে তলব করা হয়েছিল। যদিও তিনি হাজিরা দেননি। ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে ইডিকে চিঠি দিয়েছেন তিনি।
পুর নিয়োগ মামলায় অনেক দিন ধরেই ইডির নজরে সুজিত এবং তাঁর পরিবার। অতীতে তাঁর বাড়ি, অফিসেও হানা দেয় ইডি। ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে লেকটাউনে সুজিতের দু’টি বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছিলেন ইডি আধিকারিকেরা। দীর্ঘ তল্লাশির পর উদ্ধার হয়েছিল বেশ কিছু নথি। সঙ্গে দমকলমন্ত্রীর মোবাইল ফোনও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। সম্প্রতি আবারও সুজিতের অফিস এবং পুত্রের ধাবায় তল্লাশি চালায় ইডি। সূত্রের খবর, বেশ কিছু নথি বাজেয়াপ্ত করেন তদন্তকারীরা। সেই সূত্র ধরেই একে একে সুজিতের পরিবারের লোকদের তলব করছে ইডি।
সোমবার সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরা দিয়েছিলেন সুজিতের জামাই। তাঁর পরিবারও ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। সে সব ব্যবসায় দুর্নীতির টাকা ব্যবহৃত হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতেই তাঁকে ডেকে পাঠায় ইডি। মঙ্গলবার ইডি দফতরে হাজিরা দেন সুজিত-কন্যা মোহিনী। প্রায় আট ঘণ্টা তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এ ছাড়াও, সুজিতের পুত্রকেও তলব করা হয়েছে। সকলকে ব্যাঙ্ক এবং ঋণের নথি নিয়ে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে।
হেনস্থার জন্য কি তলব পরিবারের সকলকে তলব করছে ইডি? সাংবাদিকদের প্রশ্নে সুজিতের জবাব, ‘‘দেখতেই পাচ্ছেন। আমার বলার অপেক্ষা রাখে না।’’ তার পরে একটু থেমে তিনি বলেন, ‘‘তারা গিয়েছে। নিজেদের কথা বলেছে। যদি না-যায় তো বলবে পালিয়ে যাচ্ছে। আমরা পালানোর লোক নই।’’
বুধবার বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন সুজিত। বিশ্ব সিওপিডি দিবস উপলক্ষে ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কী ভাবে ধূমপান ছাড়া যায়, তা নিয়ে একটি ক্লিনিক খোলার ঘোষণা করা হয়। শুধু তা-ই নয়, ওই ক্লিনিকে ফুসফুস জনিত নানা সমস্যারও চিকিৎসা হবে বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সেই অনুষ্ঠান শেষে সুজিতকে একাধিক প্রশ্ন করা হয়। তার মধ্যে যেমন ছিল ইডির তলব প্রসঙ্গ, তেমনই রাজ্যের মন্ত্রীর কাছে জানতে চাওয়া হয় কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যপালের দ্বন্দ্ব নিয়ে তাঁর মতামত। যদিও সুজিত এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনের (এসআইআর) কাজ কি এক মাসের মধ্যে শেষ হবে, সেই প্রশ্নের উত্তরে সুজিত বলেন, ‘‘আমার মনে হয় না এত তাড়াতাড়ি হয়ে যাবে।’’