নির্মাণ সংস্থার অস্থায়ী অফিসে ভাঙচুরের চিহ্ন। —নিজস্ব চিত্র।
নির্মীয়মান বহুতলে এসে পর পর গুলি চালিয়ে গেল এক দল দুষ্কৃতী। বুধবার ভোরবেলা ঘটনাটি ঘটেছে দমদম থানা এলাকার শ্যামনগর মালির বাগান এলাকায়। দুষ্কৃতীরা গুলি চালিয়ে নির্মাণকর্মীদের ভয় দেখানোর পাশাপাশি, নির্মাণ সংস্থার সাইট অফিসে ভাঙচুর চালায়। ওই বহুতলের সামনে রাস্তায় দাঁড়ানো একটি পুলকারেও ভাঙচুর চালায় দুষ্কৃতীরা।
এ দিন ওই নির্মান সংস্থার এক কর্মী জানান, ভোর সওয়া চারটে নাগাদ তিনজন অজ্ঞাত পরিচয় দুষ্কৃতী নির্মাণস্থলে আসে। তারা পর পর চার রাউন্ড গুলি চালায়। তখন ঘুমোচ্ছিলেন নির্মাণকর্মীরা। তাঁরা গুলির শব্দে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। এর পর ওই দুষ্কৃতীরা ওই নির্মাণ সংস্থার অস্থায়ী অফিসে ঢুকে ভাঙচুর চালাতে থাকে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সশস্ত্র দুষ্কৃতীদের বাধা দেওয়ার সাহস করেননি কেউ।ঘটনার সময় উপস্থিত এক কর্মী বলেন, ‘‘দুষ্কৃতীরা প্রোমোটার শুভায়ু ঘোষের নাম করে হুমকি দেয় এবং গালিগালাজ করে। শুভায়ু ঘোষ তাদের দাবি মতো টাকা না দিলে ফের এসে তারা হামলা চালাবে বলেও হুমকি দেয় বলে অভিযোগ নির্মাণকর্মীদের।’’
আরও পড়ুন: পড়ুয়াদের গাঁজা পাচার, ধৃত মহিলা
দুষ্কৃতীরা চলে যেতেই দমদম থানায় খবর দেওয়া হয় ওই নির্মাণসংস্থার পক্ষ থেকে। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। পুলিশের পরামর্শেই নির্মাণকর্মীদের এ দিন ওই ‘সাইট’ থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁদের বয়ান রেকর্ড করবে পুলিশ। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ মনে করছে, স্থানীয় দুষ্কৃতীদের কাজ। প্রাথমিক ভাবে বাবু নায়েক নামে এক দুষ্কৃতীর নাম উঠে এসেছে তদন্তে। এর আগেও বাবু নায়েকের লোকজন অন্য এক প্রোমোটারকে লক্ষ্য করে গুলি করেছিল।
বহুতলের সামনে দাঁড়ানো একটি পুলকারেও ভাঙচুর চালায় দুষ্কৃতীরা।
দমদমের এই নির্মাণস্থল দমদম পুরসভার ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে। ঘটনাস্থলের কাছেই বাড়ি পুরপ্রধান পাঁচু রায়ের। এ দিনের ঘটনার পর তিনি বলেন, ‘‘আমি ঘটনার কথাশুনেছি। যা খবর পেয়েছি, এলাকার কুখ্যাত দুষ্কৃতী রাজেশ নায়েকের ভাই বাবু তার দলবল নিয়ে এসেছিল। তোলা না পেয়ে ভয় দেখানোর চেষ্টা করেছে।”
আরও পড়ুন: ভুয়ো পরিচয়ে প্রতারণা, গায়েব লক্ষাধিক টাকা
পুরপ্রধানের অভিযোগ, বাবুকে সম্প্রতি ওই এলাকার এক বিজেপি নেতার সঙ্গে দেখা গিয়েছে। তাঁ কথায়,“আমি জানি না বাবু বিজেপি করে কি না। তবে বিজেপি নেতাদের সঙ্গে তাকে এলাকার মানুষ দেখেছে। আমি পুলিশকে বলেছি। তাঁরা ব্যবস্থা নিচ্ছেন এই দৌরাত্ম্য বন্ধ করার।”
তদন্তকারী এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, “যাঁরা ওই সময় উপস্থিত ছিলেন তাঁদের বয়ান নেওয়া হয়েছে। আমরা ওই প্রোমোটারের সঙ্গেও কথা বলছি। আগে কখনও টাকা চেয়ে কোনও হুমকি ফোন এসেছিল কি না তা জানতে চাওয়া হয়েছে।”
(কলকাতা শহরের রোজকার ঘটনার বাছাই করাবাংলা খবরপড়তে চোখ রাখুন আমাদেরকলকাতাবিভাগে।)