অভিজিৎ সিংহ
উধাও হয়েছিলেন কলকাতার ছাত্রাবাস থেকে। অপহরণের অভিযোগও দায়ের করেছিল পরিবার। আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের সেই নিখোঁজ ছাত্র অভিজিৎ সিংহের হদিস মিলল জম্মুর কাটরায়! মুজফ্ফরপুরে অভিজিতের প্রতিবেশী একটি পরিবার সেখানে দেখা পেলেন তাঁর।
পুলিশ জানায়, বৈষ্ণোদেবী মন্দির দর্শনে গিয়েছিল ওই পরিবারটি। অভিজিতের নিখোঁজ হওয়ার খবর তাঁদের জানা ছিল। জম্মুর কাটরায় পৌঁছে ওই তরুণের মতো দেখতে এক জনকে দেখে তাই সন্দেহ হয় তাঁদের। সঙ্গে সঙ্গেই ফোন করে ওই ছাত্রের পরিবারকে বিষয়টি জানান তাঁরা। অভিজিতের মতো দেখতে ওই যুবকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় তিনিই আর জি করের ওই নিখোঁজ ছাত্র। সোমবার সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ অভিজিতের ভাই অভিনব কলকাতা পুলিশকে গোটা বিষয়টি জানান। গোয়েন্দাপ্রধান পল্লবকান্তি ঘোষ বলেন, ‘‘খবর পেয়েই জম্মুর ভবন থানার সঙ্গে কথা বলি। তাঁরা যথেষ্ট সাহায্য করেন।’’
অভিজিৎকে আনতে পুলিশের একটি দল এ দিনই বিমানে কাটরার উদ্দেশে রওনা হয়েছে বলে লালবাজার সূত্রে খবর। পুলিশ এ-ও জানায়, প্রথমে পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি অভিজিৎ। যদিও পুলিশের সঙ্গে সহযোগিতা করেন। তবে কী ভাবে তিনি কাটরা পৌঁছলেন, তা ধন্দই। হস্টেলের ঘরে মোবাইল, এটিএম কার্ড ফেলে গেলেও অভিজিৎ নগদ টাকা নিয়ে যান— এমনটাই অনুমান পুলিশের। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ মনে করছে, কোনও বিষয়ে ক্ষোভ পুষে রাখাতেই এই কাণ্ড। মেধাবী ছাত্র অভিজিতের বরাবরই ইচ্ছে ছিল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার। যদিও সুযোগ পাননি। মেডিক্যালে ভাল ফল করে বিশেষ ‘কোটা’য় আসেন আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে। তবে চতুর্থ সেমেস্টারে তাঁর এমন আচরণের কারণ নিয়ে এখনই নিশ্চিত নয় পুলিশ।
দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র অভিজিৎ থাকতেন ললিত মেমোরিয়াল ছাত্রাবাসে। গত ৬ জুন দুপুরে তাঁকে ছাত্রাবাসের ঘরে শুয়ে থাকতে দেখেন সহপাঠীরা। কিন্তু বিকেল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত তিনি খেতে না যাওয়ায় রুমমেটের সন্দেহ হয়। ওই রাতেই ছাত্রাবাস কর্তৃপক্ষ টালা থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন। খবর পেয়ে গত রবিবার রাতেই কলকাতায় পৌঁছন অভিজিতের বাবা উমেশ্বর সিংহ এবং ভাই অভিনব। সোমবার এই ঘটনায় বিশেষ তদন্ত কমিটি গড়েন আরজিকর কতৃর্পক্ষ। তাঁর খোঁজ পেতে মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থও হয় পরিবার। এমনকী মঙ্গলবার অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিজিতকে অপহরণের অভিযোগও দায়ের করেন উমেশ্বরবাবু। এর পরই স্পেশ্যাল ব্রাঞ্চের ডিসি (২) সুজিত মিত্রের নেতৃত্বে এক বিশেষ তদন্তকারী দল গড়া হয়। তাতে গুন্ডাদমন শাখা, সাইবার শাখার অফিসাররাও ছিলেন।