থমকে যানবাহন। সোমবার, ধর্মতলায়। — নিজস্ব চিত্র।
অসুস্থ ছেলেকে নিয়ে ট্যাক্সিতে মেডিক্যাল কলেজে যাচ্ছিলেন খিদিরপুরের বাসিন্দা রমেশ রায়। আটকে পড়লেন ধর্মতলার মুখে। প্রায় চল্লিশ মিনিট যানজটে আটকে থাকার পরে অবশেষে গন্তব্যে পৌঁছতে তাঁকে গাড়ি ঘুরিয়ে নিতে হল এজেসি বসু রোডের দিকে। সোমবার দুপুরে একটি ধর্মীয় মিছিলের জেরে যানজটে এ ভাবেই ভুগতে হল সাধারণ মানুষকে। সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনে তা সামলাতে হিমশিম খেলেন পুলিশকর্মীরা।
লালবাজার সূত্রে খবর, রাস্তা জুড়ে ওই মিছিলের জেরে প্রথমে বন্ধ করে দেওয়া হয় মহাত্মা গাঁধী রোড এবং চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ে উত্তরমুখী যান চলাচল। মিছিল আসতে শুরু করলে দুপুর ১টার পরে বন্ধ করা হয় এসএন ব্যানার্জি রোড, লেনিন সরণি, জওহরলাল নেহরু রোড, বেন্টিঙ্ক স্ট্রিট, নির্মলচন্দ্র দে স্ট্রিট, এসপ্ল্যানেড ইস্ট, গণেশ অ্যাভিনিউ, স্ট্র্যান্ড রোডের মতো গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। কয়েক ঘণ্টার জন্য আটকে থাকে ব্রেবোর্ন রোড, রবীন্দ্র সরণি, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিট, কলেজ স্ট্রিট, স্ট্র্যান্ড রোড, লালবাজার-সহ বিস্তীর্ণ এলাকাও। ফলে যানজটে আটকে থাকে অসংখ্য বাস, মিনিবাস, ট্রাম, ট্যাক্সি-সহ বেসরকারি গাড়িও। আর এর জেরে ভুগতে হয় যাত্রীদের। এসএন ব্যানার্জি রোডে প্রায় পঁয়তাল্লিশ মিনিট আটকে ছিলেন কসবার বাসিন্দা রণিত মিত্র। বললেন, ‘‘কাজের দিনে এ ধরনের মিছিল বন্ধ না করলে এই হয়রানি কোনও দিন থামবে না।’’
রাস্তায় ট্রাফিকের দায়িত্বে থাকা পুলিশের একাংশের দাবি, রাজনৈতিক মিছিলের চেয়ে ধর্মীয় শোভাযাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। রাজনৈতিক মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা সাধারণত গন্তব্যের দিকে জোরে হেঁটে চলেন। কিন্তু ধর্মীয় শোভাযাত্রা তাতে অনেক বেশি সময় নেয়। রাস্তার মাঝে বার বার থেমেও যায়। এ দিনও তেমনই হয়েছে। বিকেলের দিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় বলে জানান লালবাজারের এক কর্তা।
এ দিকে, মিছিলের রেশ কাটতে না কাটতেই বিকেলে বৃষ্টির জেরে ফের কয়েক ঘণ্টা যানজট হয় আলিপুর, এক্সাইড মোড়, বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিট, এমজি রোড, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, ব্রেবোর্ন রোড ও স্ট্র্যান্ড রোডে। দুর্ভোগে পড়েন অফিস ফেরত যাত্রীরা। রাজভবনের সামনে ভেঙে পড়ে একটি গাছ। রাতের দিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।