কলকাতা জুড়েই ছড়িয়ে রয়েছে ভুয়ো ডাক্তার তৈরির কারখানা! এ বার তার হদিস মিলল বেহালায়।
বেহালার বীরেন রায় রোডে অল্টারনেটিভ মেডিক্যাল কাউন্সিলের একটি শাখা অফিসে সিআইডি শনিবার অভিযান চালায়। এর পরেই সিআইডি অফিসটি সিল করে দেয়। যাতে কেউ সেখান থেকে কোনও কাগজপত্র সরাতে না পারেন।
শুক্রবার রাতে বৌবাজারের বো স্ট্রিট, কলেজ স্ট্রিট ও চৌরঙ্গি রোডে ওই সংস্থার তিনটি অফিসই সিল করে দেয় সিআইডি। রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের থেকে অভিযোগ পেয়ে রাতেই সিআইডি-র তদন্তকারী দল বেহালার ৪১, বীরেন রায় রোডের ঠিকানায় হানা দেয়। সে সময়ে সংস্থার কোনও কর্মীই অফিসে ছিলেন না।
সিআইডি সূত্রে খবর, কয়েক বছর ধরে ওই ঠিকানায় চলছিল ‘ইনস্টিটিউট অব হেল্থ সায়েন্স কাউন্সিল অ্যান্ড অল্টারনেটিভ সিস্টেম অব মেডিসিন’। এখান থেকেই অল্টারনেটিভ মেডিক্যাল কাউন্সিলের নামে আড়াই থেকে তিন লক্ষ টাকায় ডাক্তারির শংসাপত্র দেওয়া হতো। অভিযোগ, সেই শংসাপত্র নিয়ে ভুরি ভুরি ভুয়ো ডাক্তার শহর ও শহরের বাইরে চেম্বার খুলেছেন। এমনকী, সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল, বিভিন্ন ক্লিনিকেও তাঁরা রোগী দেখছেন।
সিআইডি-র এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ওই সংস্থার এক কর্তাকে গ্রেফতার করে কিছু তথ্য মিলেছে। অনুমান, শুধু অল্টারনেটিভ মেডিক্যাল কাউন্সিল থেকেই প্রায় ২০০০ ভুয়ো শংসাপত্র বেরিয়েছে।’’ তিনি জানান, বেহালার অফিস থেকেও নথি, সিল ও প্যাড বাজেয়াপ্ত হয়েছে। নথি ঘেঁটে শংসাপত্র পাওয়া ব্যক্তিদের নাম, ঠিকানা পাওয়ার চেষ্টা চলছে।
কলকাতায় অল্টারনেটিভ মেডিক্যাল কাউন্সিলের এতগুলি শাখা কী ভাবে এত দিন ব্যবসা করছিল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সিআইডি। প্রয়োজনে তারা রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের সঙ্গেও কথা বলবে। আর কোথায় সংস্থাটির অফিস
রয়েছে, তা বার করতে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের সাহায্য চেয়েছে সিআইডি।
বৃহস্পতিবার রাতে পঞ্চসায়র ও বারুইপুর থেকে দুই ভুয়ো ডাক্তারকে ধরে পুলিশ। তদন্তকারীদের দাবি, ধৃতেরা অল্টারনেটিভ মেডিক্যাল কাউন্সিল থেকে শংসাপত্র নিয়ে বেআইনি ভাবে চিকিৎসা করতেন। ধৃত ইজাজ তিন বছর ধরে বারুইপুরের নার্সিংহোমে কাজ করতেন। ধৃত মহম্মদ আকবরও ভুয়ো ডিগ্রি ও রেজিস্ট্রেশন ব্যবহার করেছিলেন বলে অভিযোগ।