শীত নেই, পিছোল পুরসভার বার্ষিক পুষ্প প্রদর্শনী

কথায় বলে, ফুলের ঘায়ে মূর্ছা যায়। কিন্তু এবার তার উলট পুরাণ। এই বছর সময়ে শীত না পড়ার জন্য এ বার মরশুমি ফুল ঠিকভাবে পরিস্ফুট হচ্ছে না। ফলে প্রদর্শনীতে ফুল প্রেমীদের নজরে আসবে না।

Advertisement

কৌশিক ঘোষ

শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০১৫ ১৮:৪৮
Share:

কথায় বলে, ফুলের ঘায়ে মূর্ছা যায়। কিন্তু এবার তার উলট পুরাণ।

Advertisement

এই বছর সময়ে শীত না পড়ার জন্য এ বার মরশুমি ফুল ঠিকভাবে পরিস্ফুট হচ্ছে না। ফলে প্রদর্শনীতে ফুল প্রেমীদের নজরে আসবে না। এই ঘটনা ভাঁজ ফেলেছে প্রশাসনকে। বাধ্য হয়েই কলকাতা পুরসভা তাদের বার্ষিক পুষ্প প্রদর্শনীর নির্ঘন্ট পিছিয়ে দিল।

কলকাতা পুরসভার উদ্যান দফতরের মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার বলেন, ‘‘ অন্য বছর ডিসেম্বরের মাধামাঝি থেকেই পুরসভার পুষ্প প্রদর্শনী শহরের বিভিন্ন জায়গায় শুরু হয়ে যায়। কিন্তু এ বছর তার ব্যতিক্রম। শীত না পড়ায় মরশুমি ফুল এখনও উন্নতমানের হয়ে উঠতে পারেনি। সেই কারণেই প্রদর্শনীর সময় পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে শীত পড়লেই এই সমস্যার সমাধান হবে।’’

Advertisement

কলকাতা পুরসভার নার্সারিতে অন্যান্য মরশুমি ফুল ছাড়াও ‘ডালিয়া’ এবং ‘চন্দ্রমল্লিকা’ র মত সুদৃশ্য ফুল ফোটানো হয়। এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে গাছ এবং ফুল সম্বন্ধে সচেতনতা বাড়াতে বিভিন্ন এলাকায় পুষ্প প্রদর্শনী করা হয়। এই দু’টি ফুলই বাসিন্দাদের মূল আকর্ষন। এ ছাড়াও সরকারি এবং বেসরকারি নানান অনুষ্ঠানেও পুরসভার নার্সারি থেকে বিভিন্ন ফুল পাঠানো হয়।

কলকাতা পুরসভার উদ্যান বিভাগের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘কলকাতা পুরসভার নার্সারিতে তৈরি ফুল শহরে তো বটেই। এমনকি, সারা ভারতে এই ফুলের এবং গাছের সমাদর আছে। এই বছরেও নির্দিষ্ট সময়ে ফুলের চাষ শুরু করা হয়েছিল। কিন্তু প্রাকৃতিক কারণেই এবার ফুলের ফলন এখনও আশানুরূপ হয়নি। এই মূহূর্তে প্রদর্শনী করা হলে তা মনোগ্রাহী হবে না।’’

উত্তর কলকাতার টালা ছাড়াও দক্ষিণে মিন্টো পার্কেও একটি নার্সারি রয়েছে। তবে। টালা পার্কের নার্সারি সব চাইতে বড়। এখানে ডালিয়া, চন্দ্র মল্লিকা ছাড়াও নানা ধরনের ফলের এবং বাহারি গাছও তৈরি করা হয়। টালা পার্কের একটি অংশ জুড়ে তৈরি হয়েছে বনবীথি। এই নার্সারিতেই প্রায় চারশোরও বেশি ডালিয়া এবং চন্দ্র মল্লিকা রয়েছে। এছাড়া গাঁদা সহ অন্যান্য ফুল তো রয়েছেই।

এ বছর ‘ডালিয়া’ এবং ‘চন্দ্রমল্লিকা’ ফুলের ক্ষেত্রে সমস্যা কী হয়েছে?

উদ্যানবিদ রঞ্জিত সামন্ত জানান, শীতের সময়েই শিশির পেয়ে এবং দিনে কড়া রোদ পেয়ে এই ফুলগুলি ভালো করে সময় নিয়ে বড় হয়ে প্রস্ফুটিত হয়। কিন্তু এবার শীত না পড়ায় এবং বেশির ভাগ সময়ে আকাশ মেঘলা থাকায় সমস্যা তৈরি হয়েছে। রঞ্জিতবাবুর বক্তব্য, ‘‘ যে সমস্ত ডালিয়া এবং চন্দ্রমল্লিকা বসানো হয়েছিল সেগুলি অনুকুল পরিবেশ না পাওয়ায় সময়ের অনেক আগেই এই ফুলগুলি ফুটে গিয়েছে। ফলে, সেগুলি বড় করে প্রস্ফুটিত হতে পারেনি। তবে, মেঘ কেটে শীত পড়লেই এই সমস্যা কেটে যাবে। এই সমস্যা কেবলমাত্র কলকাতা পুরসভার নয়। সারা রাজ্যেই প্রকৃতির এই খামখেয়ালিপনায় মরশুমি ফুলের ক্ষেত্রে এই সমস্যা তৈরি হয়েছে।’’

এক পুর আধিকারিকের মতে, পুরসভায় এর আধটা নয়, অনেক ফুল গাছ বা ফলের গাছের চারা রয়েছে । মরশুমি ফুলের অনেক গাছ থাকায় শীত পড়লেই সেই গাছগুলিতে আশানুরূপ ফুল ফুটবে। ফলে, পুষ্পপ্রেমীদের আর কোনও আক্ষেপ থাকবে না।

মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার জানান, শীতের মুখেই বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলরা পুষ্প প্রদর্শনীর জন্য উদ্যান বিভাগকে আবেদন জানিয়েছেন। কোন এলাকায় কোনও সময়ে তা করা হবে তার সামগ্রিক পরিকল্পনা থাকলেও নির্ঘন্ট করা যাচ্ছে না।

তাই, শীতের অপেক্ষায় প্রহর গোনা ছাড়া আর কোনও রাস্তা নেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement