Mysterious death

কৈখালিতে মহিলা সিভিক ভলান্টিয়ারের রহস্য মৃত্যু, সন্দেহের তির স্বামীর দিকেই

শুক্রবার রাতে কৈখালির বাড়িতে শম্পার ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়। পুলিশ জানিয়েছে, তাঁকে প্রথমে শ্বাসরোধ করে পরে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০১৮ ১৫:১৬
Share:

শম্পা দাস।

সিভিক পুলিশকর্মী শম্পা দাসের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় তাঁর স্বামীর হাত থাকতে পারে। প্রাথমিক তদন্তের পর এমনটাই অনুমান পুলিশের।

Advertisement

শুক্রবার রাতে কৈখালির বাড়িতে শম্পার ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়। পুলিশ জানিয়েছে, তাঁকে প্রথমে শ্বাসরোধ করে পরে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের সন্দেহ, শম্পার স্বামী সুপ্রতিম অন্য কারও সাহায্য নিয়ে স্ত্রীকে খুন করিয়েছেন। ওই রাতে শম্পার দেহ থেকে বেশ খানিকটা দূরে সুপ্রতিমকে চেয়ারের সঙ্গে বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাঁর দেহেও অস্ত্রের আঘাত ছিল। আপাতত সুপ্রিতমকে জেরা করছে এয়ারপোর্ট থানার পুলিশ।

সুপ্রতিমের দাবি, শুক্রবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ কয়েক জন দুষ্কৃতী তাঁদের বাড়িতে এসে লুঠপাট চালায়। তারাই শম্পাকে মেরেছে। ঘরে লুঠপাট চালানোর পাশাপাশি তাঁদের মারধরও করে ওই দুষ্কৃতীরা। কিন্তু, তাঁর এই দাবি মানতে নারাজ তদন্তকারী অফিসারেরা। একটি সূত্রের মাধ্যমে পুলিশ জানতে পেরেছে, সুপ্রতিম ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেছিলেন। কিন্তু, সম্প্রতি তাঁর কোনও কাজ ছিল না। বেকার অবস্থাতেই বাড়ি বসেছিলেন। এই বিষয় নিয়ে প্রায়ই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে গণ্ডগোল হত। পাশাপাশি, সুপ্রতিম অন্য কারও সঙ্গে তাঁর স্ত্রীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে বলেও সন্দেহ করতেন। কোনও আক্রোশের জেরেই তিনি স্ত্রীকে খুন করেছেন কি না, তা-ও খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা। সুপ্রতিমের শরীরে ধারালো অস্ত্রের একাধিক আঘাত রয়েছে। পুলিশকে বিভ্রান্ত করতেই তিনি এই পরিকল্পনা করেছিলেন কি না, তা-ও ভাবাচ্ছে পুলিশকে।

Advertisement

আরও পড়ুন
নিজের বাড়িতেই খুন মহিলা সিভিক পুলিশ, কারণ নিয়ে ধন্দে পুলিশ

পুলিশকে সুপ্রতিমের মা মীরাদেবী জানিয়েছেন, তিনি ঘটনার সময় বাড়িতে ছিলেন না। রাতে ফিরে দেখেন, সিঁড়ির সামনে পড়ে রয়েছে বৌমার রক্তাক্ত দেহ। আর ঘরে ভিতর চেয়ারে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় বসে রয়েছে ছেলে। গোটা ঘর লন্ডভন্ড অবস্থা। পরিবারের তরফে ডাকাতির অভিযোগ তোলা হলেও, তাতে পুলিশের সন্দেহ রয়েছে। শম্পার দেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, সেই রিপোর্ট হাতে এলেই মৃত্যুর কারণ আরও স্পষ্ট হবে।

বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের সিভিক পুলিশকর্মী হিসাবে শম্পা নিউ টাউন থানায় কর্মরত ছিলেন। তদন্তে নেমে এয়ারপোর্ট থানার পুলিশ জানতে পেরেছে, স্বামী-শাশুড়ি এবং তিন বছরের ছেলেকে নিয়ে কৈখালির ফ্ল্যাটে থাকতেন শম্পা। ওই দিন রাত আটটা নাগাদ বাড়ির পরিচারিকা ও তিন বছরের নাতিকে নিয়ে বাজারে গিয়েছিলেন শম্পার শাশুড়ি। রাত ১০টা নাগাদ ফিরে দেখেন, সিঁড়িতে রক্তের দাগ। সিঁড়ি দিয়ে খানিকটা ওঠার পরই শম্পার রক্তাক্ত দেহ দেখতে পান তিনি। মাথা ও মুখে ভারী কিছু দিয়ে আঘাতের চিহ্ন। এর পরেই পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। কিন্তু দুষ্কৃতীরা যখন ‘তাণ্ডব’ চালাচ্ছে, তখন সুপ্রতিমের চিৎকার চেঁচামেচি শুনতে পাননি প্রতিবেশীরা। তদন্তকারীদের সেটাও ভাবাচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন