বিল্টু কোথায়? হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে শূন্য চোখে খুঁজছেন আহত মা

ছেলে বিল্টুর মৃতদেহ নিয়ে সৎকারের জন্য দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলপির গ্রামের বাড়িতে গিয়েছেন জন্মেজয় ঘোষ। ফাঁকা বাড়িতে ফিরতে চাইছেন না তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তাঁর আর্জি-‘‘স্ত্রী কোনও দিন কাজ করতে পারবেন কি না জানি না। এই অবস্থায় দিদি যদি আমাদের সাহায্য করেন, তা হলে বেঁচে যাই।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০১৮ ০৩:১৪
Share:

এসএসকেএম হাসপাতালে সীতা ঘোষ। —নিজস্ব চিত্র

এসএসকেএম হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের বিছানায় শুয়ে শূন্য চোখে কিছু একটা খুঁজছেন নাগেরবাজার বিস্ফোরণে আহত সীতা ঘোষ। বুধবার পর্যন্ত তিনি জানেন না, বিল্টু আর মা বলে বায়না জুড়বে না। কারণ, বিভাস ঘোষের (বিল্টু) মৃত্যুর কথা সীতাকে এখনও জানাতে পারেনি পরিবার।

Advertisement

বিভাসের কথা সীতা জানতে চাইলে প্রসঙ্গ বদলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছে পরিবার। বিভাসের কাকা দীপেঞ্জয় ঘোষের বক্তব্য, ‘‘বিল্টুর কথা উঠলে প্রসঙ্গ বদলে দিচ্ছি। এই পরিস্থিতিতে কান্নাকাটি করলে আরও সমস্যা বাড়বে। তবে কাল তো বৌদি দেখেছে বিল্টু ছিটকে পড়েছিল। কিছু একটা আন্দাজ করছে।’’

ছেলে বিল্টুর মৃতদেহ নিয়ে সৎকারের জন্য দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলপির গ্রামের বাড়িতে গিয়েছেন জন্মেজয় ঘোষ। ফাঁকা বাড়িতে ফিরতে চাইছেন না তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তাঁর আর্জি-‘‘স্ত্রী কোনও দিন কাজ করতে পারবেন কি না জানি না। এই অবস্থায় দিদি যদি আমাদের সাহায্য করেন, তা হলে বেঁচে যাই।’’

Advertisement

এ দিনও সীতার কয়েকটি এক্স-রে এবং রক্তের নমুনা পরীক্ষা হয়। বাঁ পায়ের হাঁটুর উপরের অংশে কিছু একটা নেই বলে দীপেঞ্জয়কে জানিয়েছেন সীতা। মঙ্গলবারের ঘটনার পর থেকে বাঁ-কানে শুনতে পাচ্ছেন না সীতা। তবে এ দিন স্বাভাবিক খাওয়াদাওয়ার চেষ্টা করেছেন তিনি। এসএসকেএম হাসপাতালের এক কর্তা বলেন, ‘‘পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। ৭২ ঘণ্টা না গেলে বলা যাবে না।’’

বাগুইআটির অর্জুনপুরের খালপাড়ে ভাড়া থাকত বিভাসেরা। বাবা-মা কাজে বেরিয়ে যাওয়ার পরে দুই ভাই বিভাস (বিল্টু)-বিকাশ বাড়িতে থাকত। ভাইয়ের অনুপস্থিতিতে ডুকরে কেঁদে উঠছে স্থানীয় কে কে হিন্দু অ্যাকাডেমির দশম শ্রেণির পড়ুয়া বিকাশ। ‘‘যাদের জন্য ভাইকে চলে যেতে হল। তাদের শাস্তি চাই,’’ এ দিন এসএসকেএম হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের গেটে দাঁড়িয়ে সে কথাই বললেন বিভাসের কাকা দীপেঞ্জয়। কান্নাকাটির কারণে অর্জুনপুরের বাড়িতে না রেখে মঙ্গলবার রাত থেকে এক বন্ধুর বাড়িতে বিকাশকে রাখা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন