—প্রতীকী চিত্র।
চলতি এসএসসি পরীক্ষায় অভিজ্ঞ শিক্ষকদের ১০ নম্বর বাতিলের দাবিতে ফের পথে নামলেন স্কুল সার্ভিস কমিশনের নতুন পরীক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার কলেজ স্ট্রিটের কলেজ স্কোয়ারের কাছ থেকে তাঁরা দুপুর ১টা নাগাদ মিছিল শুরু করেন। এ দিন তাঁদের যাওয়ার কথা ছিল বিধানসভা পর্যন্ত। তবে মিছিল সুবোধ মল্লিকস্কোয়ারের কাছে আটকে দেয় পুলিশ। চাকরিপ্রার্থীরা রাস্তায় বসেই স্লোগান দিতে থাকেন।
মিছিলে অংশগ্রহণকারী চাকরিপ্রার্থীরা জানান, তাঁদের মূলত চারটি দাবি।প্রথমত, অভিজ্ঞ শিক্ষকেরা যে ১০ নম্বর পেয়েছেন, তা বাতিল করতে হবে। দ্বিতীয়ত, কমপক্ষে এক লক্ষ শূন্য পদ দিতে হবে। নবম-দশমে ৫০ হাজার এবং একাদশ-দ্বাদশে ৫০ হাজার শূন্য পদ দিতে হবে।তৃতীয়ত, নবম-দশম এবং একাদশ-দ্বাদশের লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া সবার ওএমআর শিট প্রকাশ্যে আনতে হবে। চতুর্থত, ২০১৬ সালের মেয়াদ উত্তীর্ণদের প্যানেলজনসমক্ষে আনতে হবে। যত ক্ষণ না তাঁদের দাবি পূরণ হচ্ছে,তাঁরা রাজপথ ছাড়বেন না বলেই জানিয়েছেন।
অভিজ্ঞতার নিরিখে প্রাপ্ত ১০ নম্বর বাতিল করতে হবে, এই দাবিতে হাতে প্ল্যাকার্ড ধরা এসএসসি-র এক নতুন চাকরিপ্রার্থী সুমনামণ্ডল বলেন, ‘‘আমি একাদশ-দ্বাদশে ইতিহাসে ৬০-এর মধ্যে ৫৮ পেয়েছি। অথচ, ইন্টারভিউতে ডাক পাইনি। নবম-দশমে ইতিহাসে পেয়েছি ৫৭। আমার আশঙ্কা, নবম-দশমেও আমি ইন্টারভিউতে ডাক পাব না। কারণ, অভিজ্ঞ শিক্ষকেরা আমার চেয়ে কম নম্বর পেয়েও ১০ নম্বরেরসুবিধা নিয়ে ইন্টারভিউতে ডাক পাচ্ছেন।’’
কথা বলতে বলতে কেঁদে ফেলেন সুমনা। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘বহু বছর পরে এসএসসি হল। আমরা পড়াশোনা করে পরীক্ষা দিয়ে ভাল নম্বরও পেলাম। কিন্তুঅভিজ্ঞদের দশ নম্বর দেওয়ার জন্য আমি ইন্টারভিউ থেকে ছিটকে গেলাম। কেন এ রকম হবে?’’
এ দিনের মিছিলে খুন্তি দিয়ে থালা-বাটি বাজাচ্ছিলেন তাহিদুল রহমান নামে এক নতুনচাকরিপ্রার্থী। তিনি বলেন, ‘‘এসএসসি আমাদের মেধা চুরি করেছে। তাই আমরা লিখিত পরীক্ষায় ৬০-এ পূর্ণ নম্বর এবং শিক্ষাগত যোগ্যতায় ১০-এ পূর্ণ নম্বর পেয়ে মোট ৭০ পাওয়া সত্ত্বেও ইন্টারভিউতেযেতে পারছি না। কারণ, হয়তো কোনও বিষয়ে ৭০ পেয়েও দেখছি, সেই বিষয়ের কাট অফ ৭৩। আমরা তো আমাদের মেধা দিয়ে ৭০-এর মধ্যে ৭০ পেয়েছি। তা-ও কেনইন্টারভিউতে ডাক পাব না? এটা কি মেধা চুরি নয়?’’
তাহিদুলের মতে, ‘‘যোগ্য চাকরিহারা অভিজ্ঞ শিক্ষকদের ১০ নম্বর দিয়ে বর্ম পরে নিয়ে চাকরি চুরি ঢাকার চেষ্টা করছে এসএসসি। এই সরকার ডবল চাকরি দেওয়ার কথা বলেছিল। আসলে ডবল চাকরি চুরি করা হয়েছে।’’
যদিও ২০২৫ সালের জন্য এসএসসি যখন তার বিধি প্রকাশ করেছিল, তখন উল্লেখ ছিল যে, অভিজ্ঞ শিক্ষকদের ১০ নম্বর বরাদ্দ আছে। সেই সময়ে প্রতিবাদ করেননি কেন? উত্তরে শিশির দাস নামে এক নতুন চাকরিপ্রার্থী বলেন, ‘‘আমরা কিন্তু অনেক আগে থেকে এই বিষয়টি নিয়ে সরব।’’
নতুন চাকরিপ্রার্থীরা জানান, যত ক্ষণ না তাঁদের দাবি নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু আলোচনায় বসবেন, তত ক্ষণ তাঁরা রাস্তাছেড়ে উঠবেন না। এর পরে পুলিশের মধ্যস্থতায় চাকরিপ্রার্থীদের পাঁচ জন প্রতিনিধি বিকাশ ভবনে শিক্ষামন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি জমা দিতে যান।
প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর
সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ
সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে