NHRC

‘আপনারাই ফুটেজ সরিয়ে দিয়েছেন মামলা দুর্বল করতে’, মানবাধিকার কমিশনের তোপে কলকাতা পুলিশ

বুদ্ধদেব দাস নামেবোসপুকুরের বাসিন্দা এক যুবক জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কাছে অভিযোগ করেন যে, কসবা থানায় তাঁকে লক আপে ব্যাপক মারধর করা হয়। তাঁকে বিদ্যুতের শক দেওয়া হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৮ ২২:৫৬
Share:

—ফাইল চিত্র।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সামনে চূড়ান্ত ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হল কলকাতা পুলিশকে। কসবা থানার একটি অভিযোগের শুনানিতে এ দিন কমিশনের বিচারপতি কলকাতা পুলিশের নগরপালকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন।

Advertisement

বুদ্ধদেব দাস নামেবোসপুকুরের বাসিন্দা এক যুবক জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কাছে অভিযোগ করেন যে, কসবা থানায় তাঁকে লক আপে ব্যাপক মারধর করা হয়। তাঁকে বিদ্যুতের শক দেওয়া হয়। পুলিশের মারে তাঁর বাঁ কানের পর্দা ফেটে গেলেও পুলিশের ভয়ে তিনি প্রথমে চিকিৎসকদের কিছু বলেননি।

সেই মামলার শুনানি এ দিন হয় এনএউজেএস ক্যাম্পাসে। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তিনটি বেঞ্চে এদিন প্রায় এ রাজ্যের ১৫০টি মামলার শুনানি হয়। তার মধ্যে ছিল ওই মামলাটিও।

Advertisement

বুদ্ধদেব বলেন, এ বছর বিশ্বকর্মা পুজোর দিন তিনি পুজোর প্রসাদ দিতে গিয়েছিলেন থানাতে। তিনি প্রোমোটিংয়ের সঙ্গে যুক্ত। প্রসাদ দিয়ে ফেরার পর ফের ওই থানার এক সাব ইন্সপেক্টর পিনাকি দে সরকার তাঁকে ডেকে পাঠান। তিনি গেলে সেখানে তাঁকে একটি অন্য মামলার বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়। এ দিন তিনি বলেন,“আমাকে ওসির ঘরে গালিগালাজ করা হয়। আমি বলি ওই ঘটনার সঙ্গে আমার কোনও যোগ নেই। পুলিশ কোনও কথা না শুনে আমাকে লক আপে মারধর করে। বিদ্যুতের শক দেয়। একটি অন্য মামলায় আমাকে গ্রেফতার করে পরের দিন আদালতে পাঠায়।” ওই যুবক কমিশনে জানিয়েছেন, লক আপে পুলিশের মারে তাঁর কানের পর্দা ফেটে যায়। তিনি কমিশনকে জানিয়েছেন, যে মামলায় তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল, সেই মামলায় এফআইআরে তাঁর নামও ছিল না। কার্যত জোর করে তাঁকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ।

আরও পড়ুন: ইস্ট-ওয়েস্ট পাশ করল আরও এক পরীক্ষায়

সন্তোষ যাদব নামে এক মানবাধিকার কর্মী বুদ্ধদেবের হয়ে মামলাটি করেন। বৃহস্পতিবার বিচারপতি এইচ এল দাত্তু কলকাতা পুলিশের কমিশনারকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন। তবে পুলিশ কমিশনার যাননি। তাঁর বদলে ডিসি ডিডি স্পেশ্যাল বদনা বরুণ চন্দ্রশেখর হাজির ছিলেন। শুনানির সময়ে বিচারপতি ওই দিনের থানার সিসি ক্যামেরার ফুটেজের কথা জিজ্ঞাসা করেন পুলিশ কর্তাকে। তিনি বলেন ওই দিনের কোনও ফুটেজ নেই। জবাব শুনেই ক্ষুব্ধ বিচারপতি বলেন,“আপনারাই তাহলে মামলা দুর্বল করার জন্য ফুটেজ সরিয়ে দিয়েছেন।” তিনি এর পর বলেন, তাহলে আপনার পকেট থেকেই ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

পরিস্থিতি বেহাল দেখে উঠে দাঁড়ান রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্র। তিনি বিচারপতিকে আশ্বাস দেন যে জয়েন্ট কমিশনার পদমর্যাদার কোনও আধিকারিক এই গোটা অভিযোগের তদন্ত করবেন। কমিশন কলকাতা পুলিশকে চার সপ্তাহ সময় দেয় ওই তদন্ত রিপোর্ট পেশ করার জন্য। এ দিন এই মামলাটি ছাড়াও রাজ্যের অনেকগুলি মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের শুনানি হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন