চার্জশিট পেশ করেনি পুলিশ, জামিনে ছাড়া পেলেন অনিন্দ্য

সময়ের মধ্যে পুলিশ আদালতে চার্জশিট পেশ না করায় জামিন পেলেন তোলাবাজি, হুমকির ঘটনায় ধৃত বিধাননগর পুরসভার ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়। ফলে এই মামলায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে রীতিমতো প্রশ্ন উঠেছে। কেন সময় মতো চার্জশিট পেশ করা হল না? বিধাননগর পুলিশের তরফে সরকারি কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে বিধাননগরের এক উচ্চপদস্থ পুলিশকর্তার দাবি, ওই মামলায় এখনও কয়েক জনের খোঁজ চলছে। তদন্ত সম্পূর্ণ হয়নি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০০:৪৩
Share:

জেল থেকে বেরিয়ে।—নিজস্ব চিত্র।

সময়ের মধ্যে পুলিশ আদালতে চার্জশিট পেশ না করায় জামিন পেলেন তোলাবাজি, হুমকির ঘটনায় ধৃত বিধাননগর পুরসভার ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়।

Advertisement

ফলে এই মামলায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে রীতিমতো প্রশ্ন উঠেছে। কেন সময় মতো চার্জশিট পেশ করা হল না? বিধাননগর পুলিশের তরফে সরকারি কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে বিধাননগরের এক উচ্চপদস্থ পুলিশকর্তার দাবি, ওই মামলায় এখনও কয়েক জনের খোঁজ চলছে। তদন্ত সম্পূর্ণ হয়নি। কেস ডায়েরি আদালতে ছিল। তাই সবমিলিয়ে চার্জশিট পেশ করা যায়নি। রবিবার বিধাননগর আদালতের বিচারক শুভ্রসোম ঘোষাল ওই কাউন্সিলরকে জামিন মঞ্জুর করেন। সোমবার সন্ধ্যায় দমদম কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার থেকে বেরোন কাউন্সিলর অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়।

কাউন্সিলরের তরফে আইনজীবীরা রবিবার আদালতে জানান, ৬০ দিন পার হয়ে গিয়েছে। এখনও পুলিশ চার্জশিট পেশ করতে পারেনি। তাই তাকে জামিন দেওয়া হয়েছে। জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করেন সরকারি আইনজীবী সাবির আলি। আদালতে জামিনের বিরোধিতায় ‘অবজেকশন’ নোটে রাখার কথাও বলেছেন তিনি।

Advertisement

দু’পক্ষের সওয়াল জবাবের পরে দু’জন জামিনদার-সহ ৫০০০ টাকার ব্যক্তিগত বেলবন্ডে জামিন মঞ্জুর হয়। তবে একটি মহল থেকে প্রশ্ন উঠেছে, রবিবার ওই মামলার শুনানি ছিল না। তবু রবিবার কেন জামিন নিয়ে শুনানি হল? কাউন্সিলরের আইনজীবী সৌম্যজিৎ রাহা বলেন, ‘‘এই মামলার ক্ষেত্রে আইন মোতাবেক পুলিশকে ৬০ দিনের মধ্যে চার্জশিট আদালতে পেশ করার কথা। তা না হওয়ায় ৬১ দিনের মাথায় জামিনের আবেদন করা হয়েছে।’’ পুলিশ কেন চার্জশিট দিতে পারল না? সৌম্যজিৎবাবু বলেন, ‘‘সেটা পুলিশই ভাল বলতে পারবে। তদন্ত শেষ হয়নি বলেই হয়তো চার্জশিট দিতে পারেনি।’’

এই যুক্তি মানতে নারাজ বিরোধীরা। তাঁদের দাবি, সবটাই ‘আই ওয়াশ’। তদন্তের মাঝেই পুলিশ চার্জশিট পেশ করেছে এমনও উদাহরণ আছে।

১২ জুলাই অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতের বিরুদ্ধে সল্টলেকের এক ব্যবসায়ীকে হুমকি, তোলাবাজি-সহ একাধিক অভিযোগ আনা হয়েছিল। ওই ঘটনাতেই পরে কাউন্সিলেরর আরও দুই সঙ্গী মহম্মদ নাসিম ও সিন্ধু কুণ্ডুকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তারা বর্তমানে জেল হেফাজতে রয়েছেন।

গ্রেফতারির পরে বিধাননগর আদালত কাউন্সিলরের জামিনের আবেদন খারিজ করেছিল। পরে বারাসত আদালতে জামিনের আবেদন করে কাউন্সিলরের আইনজীবীরা। সেখানেও জামিন খারিজ হয়ে যায়।

ওই কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে শুধু একটি নয়, একাধিক অভিযোগ উঠেছে। একটি তোলাবাজি ও হুমকির অভিযোগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ থেকে পদক্ষেপ করার আর্জি করা হয়েছিল এই রাজ্যের প্রশাসনের কাছে। যদিও গ্রেফতারির আগে সে অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেন কাউন্সিলর। পুলিশের কাছে এক ব্যবসায়ীর লিখিত অভিযোগ এসেছিল, তার ভিত্তিতেই তিনি গ্রেফতার হন বলে পুলিশ সূত্রের দাবি।

বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচী দত্ত বলেন, ‘‘এটি আইনের বিষয়। তাই এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না।’’ প্রতিক্রিয়া মেলেনি তৃণমূলের উত্তর ২৪ পরগনার সভাপতি তথা খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকেরও। জেল থেকে বেরিয়ে কাউন্সিলর শুধু বলেন, ‘‘আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একনিষ্ঠ কর্মী। আইনের উপরে আমার আস্থা রয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement