পুরসভার জল ছুঁয়েও দেখছে না নোনাডাঙা

অন্য সময়ে কী করেন? রীতা নস্কর নামে এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘আমাদের বাড়ির গায়েই পুরসভার কল। সকাল, দুপুর ও বিকেলে তিন বার ধাপা থেকে জল আসে। সেই জলই তো খেতাম। পাড়ার ক’জনের পেটে ব্যথা, বমি শুরু হল। তাই আর ওই জল খাই না।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০২:১২
Share:

কলকাতা পুরসভা। —ফাইল চিত্র।

বস্তিতে পানীয় জলের জোগান কম। আর একেবারে পাশেই পুরসভার কল থেকে জল পড়ে চলেছে। তবু সেই জল মুখে দিতে নারাজ নোনাডাঙার তাপসী মণ্ডল, আরতি নস্করেরা। দিন কয়েক ধরে তাঁদের এলাকায় বেড়ে চলেছে আন্ত্রিকের প্রকোপ। তাই পুরসভার সরবরাহ করা জলে আর আস্থা নেই এলাকাবাসীর। ওঁরা স্পষ্ট বলে দিলেন, ‘‘ওই জল খেয়ে আমরা মরব নাকি?’’

Advertisement

গত শুক্রবার থেকে দক্ষিণ কলকাতার যে সমস্ত ওয়ার্ডে কয়েক হাজার মানুষ আন্ত্রিকে আক্রান্ত হয়েছেন, তার মধ্যে রয়েছে ই এম বাইপাস সংলগ্ন ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডের নোনাডাঙাও। সেখানকার লেকপল্লির বস্তিতে বাসিন্দারা রীতিমতো আতঙ্কে। বুধবার দুপুরে ওই বস্তিতে গিয়ে দেখা গেল, বালতি, বোতল, ঘড়া নিয়ে মহিলারা ভিড় করেছেন সৌরশক্তিতে জল পরিশোধনের এক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। সেখান থেকেই তাঁরা জল কিনে খাচ্ছেন। ২৫ টাকায় মাসে ৩০০ লিটার জল। ওই সংস্থা থেকে জলের কার্ড দেওয়া হচ্ছে। সেই কার্ড মেশিনে ছোঁয়ালেই মিলছে জল।

অন্য সময়ে কী করেন? রীতা নস্কর নামে এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘আমাদের বাড়ির গায়েই পুরসভার কল। সকাল, দুপুর ও বিকেলে তিন বার ধাপা থেকে জল আসে। সেই জলই তো খেতাম। পাড়ার ক’জনের পেটে ব্যথা, বমি শুরু হল। তাই আর ওই জল খাই না।’’

Advertisement

পুরসভা কি এসেছিল কলের জল পরীক্ষা করতে?

বাসিন্দারা জানালেন, পুরসভার কেউ এখনও আসেননি। যদিও পুরসভার জল সরবরাহ দফতর থেকে বলা হচ্ছে, তিন দিন ধরে আক্রান্ত এলাকার অনেক কল থেকে জল নিয়ে পরীক্ষা করা হয়েছে। তবে ওই এলাকার কোনও কলের জলই যে এখনও পরীক্ষা করা হয়নি, তার খবরই
রাখেন না একাধিক পুরকর্তা। প্রশ্ন করায় তাঁরা বললেন, ‘‘খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’

কলকাতা শহরে জবরদখল করে থাকা বাসিন্দাদের উচ্ছেদ করে পুনর্বাসন দেওয়া হয়েছিল নোনাডাঙায়। সেখানে অনেকগুলি ফ্ল্যাটও করে দিয়েছে সরকার। পুরসভা সূত্রের খবর, গত কয়েক দিনে ছ’শোরও বেশি বাসিন্দা আন্ত্রিকের উপসর্গ নিয়ে পুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়েছেন। এ দিনও দুপুর পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৭১। স্থানীয় এক চিকিৎসক জানান, সবাইকে জল ফুটিয়ে খাওয়ার কথা বলা হচ্ছে। ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের এক কর্মী জানান, লেকপল্লিতে জল পরিশোধনের প্রকল্প থাকায় এলাকার মানুষ কিছুটা নিশ্চিন্ত। সেখানে ওই প্রকল্প কারা করেছেন, জানতে চাইলে পুরসভার জল সরবরাহ দফতরের এক আধিকারিক জানান, সংস্থাটি পুরসভার অনুমতি নিয়েই প্রকল্প চালাচ্ছে। মানুষের উপকার হবে ভেবেই তাদের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করেই জল পরিশোধন করছে সংস্থাটি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement