Fish Market

করমণ্ডল দুর্ঘটনার জেরে জোগান কম, শহরের বাজারে বৃদ্ধি পাচ্ছে রুই, কাতলার দাম

দক্ষিণ ভারত থেকে থার্মোকলের বাক্সের মধ্যে রেখে, ট্রেনে করে মাছ আসে শহরের বাজারে। ওড়িশায় ট্রেন দুর্ঘটনার জেরে যে সব ট্রেন আটকে গিয়েছিল, তাতে থাকা মাছ ইতিমধ্যেই নষ্ট হয়ে গিয়েছে।

Advertisement

আর্যভট্ট খান

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০২৩ ০৬:৫৪
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

এক দিকে তীব্র গরমে কমেছে মাছের জোগান। তার উপরে ওড়িশায় করমণ্ডল এক্সপ্রেসে ভয়াবহ দুর্ঘটনার জেরে দক্ষিণ ভারতের সঙ্গে কলকাতার রেল যোগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন ছিল গত কয়েক দিন। ফলে, দক্ষিণ ভারত থেকে ট্রেনে করে যে মাছ কলকাতার বাজারে এসে পৌঁছয়, তাতে বিঘ্ন ঘটেছে। সব মিলিয়ে তাই শহরে এখন মাছের আকাল। জোগান কম থাকায় বেশ কিছু মাছ, যেমন অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে আসা রুই-কাতলার দাম বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। মাছ বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, গরম না কমলে এবং রেল যোগাযোগ পুরোপুরি স্বাভাবিক না হলে মাছের আকালের এই ছবিও সহজে যাবে না।

Advertisement

পাতিপুকুর পাইকারি মাছ বাজার কমিটির সদস্য উত্তম হাজরা বললেন, ‘‘অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে ৭০ শতাংশ রুই-কাতলা ট্রাকে করেই আসে। বাকি ৩০ শতাংশ মাছ আসে ট্রেনে। কিন্তু ট্রেন পরিষেবা এখনও স্বাভাবিক না হওয়ায় সেই মাছ আসাও বন্ধ। ওড়িশার পারাদ্বীপ থেকে মূলত ট্রেনে ট্যাংরা, পারশে, ভেটকি, আড় মাছ আসে শহরের বাজারে। তা-ও বন্ধ রয়েছে। ফলে এই সব মাছের জোগান বাজারে খুব কম।’’ ওই মাছ বাজারের এক বিক্রেতা তাপস দাস বলেন, ‘‘প্রতি বারই গরমের সময়ে মাছের জোগান কমে যায়। কিন্তু এ বার গরমের সঙ্গে যোগ হয়েছে রেল দুর্ঘটনাও। পাইকারিতে দেড় কেজির রুই যেখানে ১২০-১৩০ টাকায় পাওয়া যায়, সেখানে এখন তার দাম গিয়ে দাঁড়িয়েছে ১৫০-১৬০ টাকায়।’’

একই ছবি শহরের অন্যতম বড় মাছের বাজার মানিকতলাতেও। সেখানকার এক মাছ বিক্রেতা প্রদীপ মণ্ডল বলেন, ‘‘দক্ষিণ ভারত থেকে ট্রাকে বেশির ভাগ মাছ আসে। এক একটি ক্রেটে ৪০ কেজির মতো মাছের জন্য ২৫ কেজির মতো বরফ রাখতে হয়। কিন্তু এখন এতই গরম যে, ওই পরিমাণ বরফ রাখার পরেও ক্রেটে আট কেজির মতো মাছ পচা বেরোচ্ছে।’’ তিনি আরও জানান, দক্ষিণ ভারত থেকে থার্মোকলের বাক্সের মধ্যে রেখে, ট্রেনে করে মাছ আসে শহরের বাজারে। কিন্তু ওড়িশায় ট্রেন দুর্ঘটনার জেরে যে সব ট্রেন আটকে গিয়েছিল, তাতে থাকা মাছ ইতিমধ্যেই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। তবে স্থানীয় খড়িবাড়ি-সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে যে সব মাছ শহরে আসে, তার জোগান এখনও ঠিক রয়েছে। ফলে পরিস্থিতি কিছুটা সামাল দেওয়া যাচ্ছে।

Advertisement

গড়িয়াহাট বাজারের কয়েক জন মাছ বিক্রেতা জানালেন, দক্ষিণ ভারতের সঙ্গে শহরের রেল যোগাযোগ কবে ফের স্বাভাবিক হবে, আপাতত সে দিকেই তাকিয়ে আছেন তাঁরা। তবে রেল সূত্রের খবর, রবিবার রাত থেকে দক্ষিণের সঙ্গে পূর্ব ভারতের ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। দিনকয়েকের মধ্যে পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।

তবে শহরের মাছ বিক্রেতাদের একাংশের মতে, এই গরমে ক্রেতাদের মধ্যে মাছের চাহিদাও কিছুটা কম। বাগুইআটি বাজারের কয়েক জন মাছ বিক্রেতা জানালেন, তীব্র গরমে অনেকেই বাজারে আসছেন না। সকালে আটটার পর থেকে চড়া রোদের কারণে বাজার কার্যত ক্রেতাশূন্য হয়ে যাচ্ছে। ফের ক্রেতাদের দেখা মিলছে সন্ধ্যা সাতটার পরে। তখন মাছের বাজার ফের কিছুটা জমছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন