মুখোমুখি: ওসি-কে ঘিরে ধরে মারমুখী ভিড়। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র
কর্তব্য পালন করতে গিয়ে আবার নিগৃহীত হলেন এক পুলিশকর্মী। এ বার অবশ্য বেপরোয়া মোটরবাইক বা গাড়ি ধরতে গিয়ে নয়, বেআইনি পার্কিং বন্ধ করার ‘অপরাধে’। ওই ঘটনায় সরকারি কাজে বাধাদান এবং কর্তব্যরত পুলিশকর্মীকে মারধরের অভিযোগে দুই যুবককে গ্রেফতার করেছে দমদম থানার পুলিশ। আর এক অভিযুক্তকে ধরা যায়নি।
পুলিশ সূত্রের খবর, সেন্ট্রাল জেল মোড় সংলগ্ন যশোর রোডের দু’পাশে প্রায়ই সার দিয়ে লরি দাঁড়িয়ে থাকে। যার জেরে সেখানে যানজট নিত্যদিনের ঘটনা। ওই জায়গায় একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল রয়েছে। ব্যারাকপুর কমিশনারেট সূত্রের খবর, যানজটের কারণে ছাত্রছাত্রীদের যাতায়াতে অসুবিধার কথা জানিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ পুলিশের কাছে হস্তক্ষেপের আর্জি জানিয়েছিলেন। স্থানীয় বাসিন্দারাও এই প্রশ্নে প্রশাসনকে পদক্ষেপ করতে অনুরোধ করেছিলেন। সেই আর্জিতেই সাড়া দিয়ে ওই এলাকা থেকে বেআইনি পার্কিং সরাতে মঙ্গলবার অভিযানে নামে নাগেরবাজার ট্র্যাফিক গার্ড।
ট্র্যাফিক পুলিশের বক্তব্য, এর আগে একাধিক বার হুঁশিয়ারি দেওয়া সত্ত্বেও কাজ না হওয়ায় এ দিন কড়া পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই মতো বেলা ১২টা ৪০ মিনিট নাগাদ ক্রেনের সাহায্যে পেট্রোল পাম্পের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি লরি সরাতে গেলে গণ্ডগোল শুরু হয়। বেআইনি পার্কিং তোলা হচ্ছে দেখে লরির চালক ও মালিকেরা ট্র্যাফিক গার্ডের ওসি দেবাশিস কুমারকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। তাঁদের সঙ্গে কথা কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়েন দেবাশিস। এরই মধ্যে আচমকা ক্রেনের সাহায্যে আটক লরির চালক নেমে এসে ওসি-কে ধাক্কা মারেন বলে অভিযোগ। এক জন বিক্ষোভকারীর হাতে হেলমেট ছিল। সেই হেলমেট দিয়েও ওসি-কে মারধরের চেষ্টা হয় বলেও অভিযোগ। বিক্ষোভকারীদের ধাক্কায় ওসি বেসামাল হয়ে পড়লে তাঁর উপরে চড়াও হন বাকিরা। তাঁদের বক্তব্য ছিল, পেট্রোল পাম্পের আগে পুরো যশোর রোডের উপরে দাঁড়িয়ে থাকা সব গাড়ি সরাতে হবে। উত্তেজনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুই অভিযুক্তকে হেফাজতে নেয় দমদম থানার পুলিশ।
এ দিনের ঘটনা সম্পর্কে ব্যারাকপুর কমিশনারেটের এক কর্তা বলেন, ‘‘দমদম রোড ও যশোর রোডে পার্কিংয়ের অনুমতি নেই। রাস্তায় যান নিয়ন্ত্রণ পুলিশের দায়িত্ব। এটা সাধারণ মানুষকে বুঝতে হবে। এ ধরনের অভিযান ওই এলাকায় আরও হবে।’’