আবাসনের এই সিঁড়ি থেকেই পড়ে মৃত্যু হয় বৃদ্ধার। বুধবার, চৌরঙ্গি রোডে। নিজস্ব চিত্র।
এক বৃদ্ধার মৃত্যু ঘিরে দানা বাঁধল রহস্য। বুধবার চৌরঙ্গি রোডের এই ঘটনায় পুলিশ বৃদ্ধার ছেলেকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। দেহটি ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জানিয়েছে, চারতলা বাড়ির সিঁড়ি থেকে পড়ে গিয়েই মৃত্যু হয়েছে ওই বৃদ্ধার। তবে কী ভাবে তিনি পড়ে গিয়েছেন তা নিয়েই তৈরি হয়েছে রহস্য।
পুলিশ জানায়, ৬০/১ চৌরঙ্গি রোডের ‘আলেকজান্ডার কোর্ট’ আবাসনে থাকতেন প্রেমগতি ওবেরয় (৮৭) নামে ওই বৃদ্ধা। ওই আবাসনের ২৫ নম্বর ফ্ল্যাটে থাকতেন বৃদ্ধার পুত্র মহেশচন্দ্র। এ দিন বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ আবাসনের পিছন দিকে প্রেমগতিদেবীর দেহ পড়ে থাকতে দেখে প্রতিবেশীরাই পুলিশে খবর দেন। পুলিশ জানায়, আবাসনের সিঁড়ির নীচেই ছিল একটি অস্থায়ী টিনের ছাউনি। পাশে একটি গাছ। বৃদ্ধা প্রথমে গাছ এবং পরে টিনের ছাউনি ভেঙে মাটিতে পড়েন।
এ দিন দেখা যায়, বাড়ির যে অংশ দিয়ে বৃদ্ধা পড়ে গিয়েছেন, সেই অংশের ভঙ্গুর অবস্থা।দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে সিঁড়ির বেশির ভাগ অংশ ধসে গিয়েছে। যে দিকে দুর্ঘটনা ঘটেছে সে দিকের পাঁচিলও কয়েক বছর আগে ভেঙে গিয়েছে বলে জানান আবাসনের বাসিন্দারা। গৌতম মলহোত্র নামে এক বাসিন্দা বললেন, ‘‘এ দিকের সিঁড়ি আমরা সাধারণত ব্যবহার করি না। সকালে হঠাৎ জোরে আওয়াজ পেয়ে গিয়ে দেখি প্রেমগতিদেবীর দেহ সিঁড়ির নীচে মাটিতে পড়ে রয়েছে।’’ তবে ওই বৃদ্ধাকে কেউ নীচে পড়তে দেখেননি।
এতেই ধোঁয়াশায় তদন্তকারীরা। এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘‘বৃদ্ধা নিজে ঝাঁপ দিয়েছেন, নাকি পড়ে গিয়েছেন, নাকি কেউ ঠেলে ফেলে দিয়েছে তা দেখতে হবে।’’ আবাসনের সিসিটিভি ফুটেজও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। স্থানীয় সূত্রের খবর, বৃদ্ধার স্বামী কয়েক বছর আগে মারা গিয়েছেন। তিনি ছেলে মহেশচন্দ্রের সঙ্গেই থাকতেন। মহেশচন্দ্র একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতেন। তাঁর স্ত্রী শ্বাশুড়ি এবং স্বামীর সঙ্গে থাকতেন না। প্রতিবেশীদের একাংশ জানিয়েছেন, ছেলের সঙ্গে প্রেমগতিদেবীর সম্পর্ক ভালই ছিল। তবে ইদানীং তিনি নানা অসুখে ভুগছিলেন। এই মৃত্যুর সঙ্গে অসুখের কোনও যোগ রয়েছে কি না, পুলিশ তা-ও খতিয়ে দেখছে।