মেয়ে-জামাইয়ের হেফাজতে সম্পত্তি, ‘ঘরছাড়া’ বৃদ্ধা

বাড়ি বিক্রির টাকাই ছিল তাঁর শেষ সম্বল। কিন্তু স্বামী মারা যেতে সেই টাকা পেয়ে যান বড় জামাই। কী করে এমনটা হল, তার উত্তর জানেন না ব্যারাকপুর শঙ্খবণিক পাড়ার বাসিন্দা বছর আটষট্টির বৃদ্ধা নির্মলা নন্দী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:১৮
Share:

অসহায়: নির্মলা নন্দী। নিজস্ব চিত্র

বাড়ি বিক্রির টাকাই ছিল তাঁর শেষ সম্বল। কিন্তু স্বামী মারা যেতে সেই টাকা পেয়ে যান বড় জামাই। কী করে এমনটা হল, তার উত্তর জানেন না ব্যারাকপুর শঙ্খবণিক পাড়ার বাসিন্দা বছর আটষট্টির বৃদ্ধা নির্মলা নন্দী। বাধ্য হয়ে সেই মেয়ে-জামাইয়ের বাড়িতেই ছিলেন তিনি। কিন্তু অভিযোগ, তাঁরাই চরম অত্যাচার চালাচ্ছেন বলে সেই বাড়িও ছাড়তে বাধ্য হন বৃদ্ধা। আরও অভিযোগ, পুলিশের দ্বারস্থ হয়ে কোনও ফল হওয়া দূর অস্ত্, বৃহস্পতিবার রাতে থানা চত্বরেই অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে তাঁকে।

Advertisement

নির্মলাদেবী শুক্রবার জানিয়েছেন, তাঁদের বাড়ি ছিল ব্যারাকপুরের লালকুঠিপাড়ায়। বছর দুয়েক আগে বাড়িটি ২১ লক্ষ টাকায় বিক্রি হয়। তার মাস ছয়েক পরে স্বামীর মৃত্যু হলে নির্মলাদেবী জানতে পারেন, স্বামীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নমিনি ছিলেন তাঁর বড় জামাই সুজিত শূর।

সপ্তাহখানেক আগে তিনি সেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে পাড়ারই এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অফিসে হাজির হন। অভিযোগে জানান, মেয়ে-জামাই তাঁর উপরে চরম অত্যাচার চালাচ্ছেন। তাঁকে বাড়ি থেকে বারবার বার করে দিচ্ছেন তাঁরা। এমনকি, তাঁকে আত্মহত্যা করারও প্ররোচনা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। তার পরেই টিটাগড় থানায় মেয়ে-জামাইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান ওই বৃদ্ধা। কিন্তু পুলিশ কোনও পদক্ষেপই করেনি বলে তাঁর অভিযোগ।

Advertisement

পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে টিটাগড় থানায় তাঁদের ডাকা হয়। নির্মলাদেবী গেলেও সুজিতবাবুরা ছিলেন না। বৃদ্ধার অভিযোগ, তদন্তকারী অফিসারই সুজিতবাবুর হয়ে বৃদ্ধার সঙ্গে দরদাম শুরু করেন। দীর্ঘ কথাবার্তার মধ্যে অসুস্থ হয়ে থানা চত্বরেই অ়জ্ঞান হয়ে পড়ে যান নির্মলাদেবী। তাঁকে ব্যারাকপুর বি এন বসু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আত্মহত্যার জন্য চাপ দেওয়া বা অত্যাচারের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সুজিতবাবু। তিনি বলেন, ‘‘শ্বশুরমশাই আমাকে যা টাকা-পয়সা দিয়ে গিয়েছিলেন, তার কাগজপত্র রয়েছে। আমার মামাশ্বশুর লালবাজারে কর্মরত। তাঁকে সব জানিয়েছি। রবিবার তাঁর উপস্থিতিতেই শাশুড়িকে সব টাকা দিয়ে দেব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন