কালীঘাট-কাণ্ডে গ্রেফতার এক, মারধরের কথা কবুল

কালীঘাট থানা এলাকার গুরুপদ হালদার স্ট্রিট এবং এসপি মুখার্জি রোডের সংযোগস্থলের কাছে একটি গাছের সঙ্গে বাঁধা অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করা হয় শঙ্কর মণ্ডল (২৫) নামে এক যুবককে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৯ ০০:০০
Share:

শঙ্কর মণ্ডল

কালীঘাট এলাকার সেই যুবকের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করল পুলিশ।

Advertisement

রবিবার সকালে কালীঘাট থানা এলাকার গুরুপদ হালদার স্ট্রিট এবং এসপি মুখার্জি রোডের সংযোগস্থলের কাছে একটি গাছের সঙ্গে বাঁধা অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করা হয় শঙ্কর মণ্ডল (২৫) নামে এক যুবককে। পরে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে মৃত ঘোষণা করা হয়। প্রাথমিক ভাবে চিকিৎসকেরা ওই যুবকের দেহে কোন আঘাত নেই বলে জানান। কিন্তু তদন্তকারীরা সিসিটিভির ফুটেজ খতিয়ে দেখে শঙ্করকে মারধর করা হয়েছিল বলেই জানতে পারেন। এর পরে নিজে থেকেই অনিচ্ছাকৃত ভাবে মৃত্যু ঘটানোর মামলা রুজু করে কালীঘাট থানার পুলিশ।

তদন্তকারীরা জানান, সোমবার রাতে কানাই পাত্র নামে ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। ওই ব্যক্তি ঘটনাস্থলের কাছে অমৃত ব্যানার্জি রোডের বাসিন্দা। সেখানে সে একটি আবাসনের কেয়ারটেকারের কাজও করে। ঘটনার সময়ের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে কানাইকে শনাক্ত করেন পুলিশের এক সোর্স। এর পরে রাতেই কানাইয়ের বাড়িতে হানা দেয় পুলিশ। তাকে নিয়ে আসা হয় কালীঘাট থানায়। সেখানে কানাই প্রথমে ঘটনার কথা অস্বীকার করলেও সিসিটিভির ফুটেজে নিজের ছবি দেখে সব কথা স্বীকার করে নিতে বাধ্য হয়। মঙ্গলবার পুলিশ কানাইকে আলিপুর আদালতে হাজির করলে বিচারক তাকে ১লা এপ্রিল পর্যন্ত পুলিশি হেফজাতে রাখার নির্দেশ দেন।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, ওই সিসিটিভি ফুটেজ অনুযায়ী যে ক’জন ছিল তাদের মধ্যে কানাইয়ের এক ছেলে বিশ্বজিৎ রয়েছে। রাতে কানাইয়ের খোঁজ পেলেও বিশ্বজিৎ পালিয়েছে বলে দাবি পুলিশের। ফুটেজ দেখে এলাকার কয়েক জনকেও শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে বলে পুলিশ জানায়।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

তদন্তকারীদের দাবি, কানাই জেরায় জানিয়েছে যে ছেলের মোবাইল চুরি হয়েছিল। ঘটনার রাতে বিশ্বজিতের কয়েক জন বন্ধু এসে তাকে ডেকে নিয়ে যায় চোর ধরা পড়েছে বলে। কানাই পুলিশের কাছে দাবি করেছে যে ঘটনাস্থলে গিয়ে সে দেখে শঙ্করকে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর চলছে। বেধড়ক ভাবে কিল,চড়,ঘুষি,লাথি শঙ্করকে মারা হচ্ছিল বলে কানাই পুলিশের কাছে স্বীকার করে। তদন্তকারীরা জানান, সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ শঙ্করকে সেখানে ফেলে অভিযুক্তরা চলে যায়। পুলিশের কাছে কানাই দাবি করেছেন, মারার উদ্দেশ্যে তিনি মারধর করেননি। বারে বারে ওই এলাকায় চুরির ঘটনা ঘটছিল। তাই আটকানোর জন্য ভয় দেখাতেই শঙ্করকে মারধর করা হয়েছিল বলেও কানাই পুলিশকে জানিয়েছে।

রবিবারই শঙ্করের দিদি পুলিশকে জানান, মোবাইলের খোঁজে এসে চার যুবক শঙ্করকে মেরে ফেলবে বলে বাড়ি এসে শাসানি দেয়। অভিযুক্তেরাই সেই কাজ করেছে কি না তা, খতিয়ে দেখবে পুলিশ। তদন্তকারীদের দাবি, সোমবার ওই যুবকের দেহের ময়না-তদন্ত হয়েছে। সেখানকার চিকিৎসকেরা শঙ্করের মৃত্যুর কারণ না জানালেও মারধরের আঘাতে ওই যুবকের মৃত্যু হয়নি বলে মৌখিক ভাবে পুলিশকে জানিয়েছেন বলেই খবর। এক পুলিশ অফিসারের দাবি, চিকিৎসকদের মতে কিল-চড়-ঘুষির আঘাত মৃত শঙ্করের দেহে থাকলেও তার কারণে মৃত্যু হয়নি। মৃত্যুর কারণ পরে জানানো হবে বলে পুলিশ জানায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন