Coronavirus

জৈব আনাজ ও মাছ বেচে ভাঁড়ারে এল ৯০ লক্ষ

গ্রামের খামারে জৈব পদ্ধতিতে চাষ হচ্ছে চাল-ডাল-আনাজ থেকে শুরু করে মাছ-মাংস। ই-রিকশা এবং বড় গাড়িতে করে সেগুলি পৌঁছে যাচ্ছে বাড়ি বাড়ি।

Advertisement

মেহবুব কাদের চৌধুরী

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০২০ ০৩:১১
Share:

ছবি সংগৃহীত

করোনার সংক্রমণ থেকে বাঁচতে বাজার-দোকানে ভিড় এড়িয়ে চলতে বলছেন চিকিৎসকেরা। সেই পরিপ্রেক্ষিতে ঘরে বসেই লোকজন যাতে নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী পেয়ে যান, তার জন্য বাড়ি বাড়ি তা সরবরাহ করা শুরু করেছে রাজ্য পঞ্চায়েত দফতরের অধীনস্থ সামগ্রিক এলাকা উন্নয়ন পর্ষদ। গ্রামের খামারে জৈব পদ্ধতিতে চাষ হচ্ছে চাল-ডাল-আনাজ থেকে শুরু করে মাছ-মাংস। ই-রিকশা এবং বড় গাড়িতে করে সেগুলি পৌঁছে যাচ্ছে বাড়ি বাড়ি। এর ফলে এক দিকে যেমন ছোঁয়াচ বাঁচানো সম্ভব হচ্ছে, তেমনই ঘরে বসে টাটকা আনাজ-মাছ পাচ্ছেন ক্রেতারা। ইতিমধ্যেই রাজারহাট, নিউ টাউন, সল্টলেক এবং কলকাতায় এই পরিষেবা শুরু করেছে পর্ষদ।

Advertisement

পর্ষদ জানাচ্ছে, রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় তাদের ২২টি খামারে চাল, ডাল, আনাজ চাষ হচ্ছে। পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়ে পর্ষদের খামারে বাংলার কালো ছাগল (ব্ল্যাক বেঙ্গল গোট), কড়কনাথ ও বনরাজা মুরগি চাষ ছাড়াও তমলুক, বাঁকুড়া, হুগলি, বর্ধমানের জলাশয়ে চাষ হচ্ছে মাছ। থাকছে সাত রকমের চাল। রায়গঞ্জের তুলাইপাঞ্জি, জলপাইগুড়ির কালোনুনিয়া, বর্ধমানের গোবিন্দভোগ, বাঁকুড়ার বাদশাভোগ ছাড়াও স্বর্ণমাসুরি, দশকাঠি এবং কালোচালের স্বাদ পাচ্ছেন শহরবাসী। পর্ষদ সূত্রের খবর, লকডাউনের মধ্যে এই পরিষেবা দিয়ে প্রায় ৯০ লক্ষ টাকা আয় করেছে তারা।

রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘লকডাউন শুরু হওয়ার পর থেকে গত চার মাস ধরে আমার পরিবার এই জৈব খাদ্যসামগ্রীর নিয়মিত ক্রেতা। করোনার সময়ে বাজার যাওয়া খুবই ঝুঁকির। এ ক্ষেত্রে পর্ষদের গাড়িতে করে বাড়ি বাড়ি খাবার পৌঁছে যাওয়ায় বহু মানুষের সুবিধা হচ্ছে।’’ তিনি জানান, শীঘ্রই আরও দশটি বড় গাড়ি কলকাতায় নামবে এই পরিষেবা দিতে।

Advertisement

শুধু মন্ত্রী নন, গ্রামের খামারে উৎপন্ন হওয়া আনাজ-মাছ খেয়ে উপকার পাচ্ছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাসও। তাঁর কথায়, ‘‘এই কঠিন সময়ে ঘরে থেকে জিনিস কেনাই কাম্য। ঝড়বৃষ্টি উপেক্ষা করে পর্ষদের কর্মীরা ঠিক সময়ে এবং ন্যায্য মূল্যে এই খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছেন। আমি খুবই সন্তুষ্ট।’’

মন্ত্রী ও শিক্ষাবিদের পাশাপাশি ক্রেতার তালিকায় রয়েছেন চিকিৎসকেরাও। তেমনই এক চিকিৎসক মোনালিসা প্রামাণিক নন্দী বলেন, ‘‘রাত ১২টাতেও অর্ডার দিলে পরের দিন সকালে নির্দিষ্ট সময়ে জিনিস পৌঁছে যাচ্ছে বাড়িতে।’’ আর এক চিকিৎসক বহ্নিশিখা কায়েত জানান, এই পরিস্থিতিতে পঞ্চায়েতের ওই শাখার কর্মীরা যে ভাবে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন, তা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবি রাখে।

পর্ষদের প্রশাসনিক সচিব সৌম্যজিৎ দাস বলেন, ‘‘করোনা থেকে আমরা কবে মুক্ত হব, জানি না। এই বিষয়টি মাথায় রেখেই পর্ষদ শহরবাসীর বাড়ি বাড়ি পরিষেবা পৌঁছে দিতে আরও বেশি দায়বদ্ধ থাকবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন