উদ্ধত: রাত পর্যন্ত এ ভাবেই বিক্ষোভ চলেছে স্কুলে। শুক্রবার। ছবি: সুপ্রিয় তরফদার
স্কুল বা হাসপাতাল, কোথাও কোনও অভিযোগ উঠলে ভুক্তভোগীদের থেকে দাপট বা়ড়ে বহিরাগতদের। অনেক সময় যার জেরে মূল অপরাধও আড়ালে চলে যায়। শুক্রবার জি ডি বিড়লার ঘটানাতেও বহিরাগতদের দাপাদাপি সামনে এসেছে। অশ্লীল গালিগালাজ, শিক্ষিকাদের জুতো ছুড়ে মারার চেষ্টা কোনও কিছুই বাদ যায়নি।
চার বছরের পড়ুয়ার উপরে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে এ দিন সকাল থেকে ওই স্কুল চত্বরে ক্ষোভে ফেটে পড়েছিলেন অভিভাবকেরা। স্কুলের নিরাপত্তা নিয়ে বিক্ষোভ চলাকালীন কখনও অধ্যক্ষার ইস্তফার দাবি ওঠে, আবার কখনও স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন বিক্ষোভকারীদের একাংশ। যদিও অভিযোগ, এ দিন বিক্ষোভ চলাকালীন বহিরাগতরাও স্কুল চত্বরে ঢুকে পড়ে। যা ফের প্রশ্নের মুখে ফেলছে স্কুলের নিরাপত্তার ব্যবস্থাকে।
কয়েক মাস আগে ঢাকুরিয়া আমরি হাসপাতালে এক ডেঙ্গি রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় ভাঙচুর চলে। অভিযোগ ওঠে রোগীর পরিবার হাসপাতাল চত্বরে তাণ্ডব চালায়, মারধর করা হয় চিকিৎসক এবং হাসপাতালের কর্মীদের। পুলিশ গ্রেফতার করে মৃতার পরিজনদের। কিন্তু এই পুরো ঘটনায় আলোচনার আড়ালে চলে যায় চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগটাই। মৃতের পরিবার জানায়, এই ঘটনায় তাদের কেউ যুক্ত নয়। বরং তাদের অভিযোগকে গুরুত্ব দেওয়া হল না।
একই ভাবে সিএমআরআই হাসপাতালে রোগীর অস্ত্রোপচারে গাফিলতির অভিযোগে চিকিৎসকদের শারীরিক নিগ্রহের ঘটনায় রোগীর আত্মীয়ের তুলনায় বহিরাগতদের দাপট উল্লেখযোগ্য হয়ে উঠেছিল।
এ দিন সকাল এগারোটা নাগাদ স্কুলে ঢোকার দরজায় পাহারায় থাকা পুলিশের সামনেই তিন জন মহিলা নিরাপত্তার অভাব নিয়ে বিক্ষোভ দেখান। কখনও তাঁরা স্কুলের অধ্যক্ষার পদত্যাগ আবার কখনও তাঁকে গ্রেফতারের দাবি তোলেন। প্রশ্ন তোলেন, আমরি অগ্নিকাণ্ডে মালিক গ্রেফতার হলে, এই ঘটনায় অধ্যক্ষা কেন গ্রেফতার হবেন না? ওই তিন মহিলার একজন অর্পিতা সরকার, অধ্যক্ষার ঘরে ঢুকে তাঁর সঙ্গে কথা বলেও আসেন। কোন শ্রেণিতে পড়ে তাঁদের সন্তান? প্রশ্ন করলে জানা যায়, ওই তিন মহিলা শশী অগ্নিহোত্রী, অর্পিতা সরকার এবং চন্দনা বন্দ্যোপাধ্যায় মহিলা মোর্চার সদস্য। তাঁরা জানান, এই ঘটনার প্রতিবাদ করতে তাঁরা স্কুলে ঢুকেছেন।
এ দিন স্কুল চত্বরে ঢুকে পড়েছিলেন স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরাও। এমনকী একটা সময় তাঁরা বচসায় জড়িয়ে পড়েন। দফায় দফায় আরও বহু বহিরাগতকে এ দিন স্কুলের ভিতরে ঢুকতে দেখা গিয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, এ দিন স্কুলে উপস্থিত পড়ুয়াদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হলে তার দায় কার?