—ফাইল চিত্র
মাথায় রক্ত জমাট বেঁধে রয়েছে। খুলির হাড় ভেঙেছে। চোট রয়েছে ঘাড় এবং ডান পায়েও। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, ছোট্ট পালোক্ষী পাণ্ডার অবস্থা আশঙ্কাজনক। আপাতত সে এসএসকেএমের ট্রমা কেয়ারের ‘রেড জ়োনে’-ই চিকিৎসাধীন। সেখানে তার দেখাশোনার জন্য রয়েছেন মা উপাসনা পাণ্ডা।
শনিবার সকালে বাবার হাত ফস্কে সে ছাদ থেকে পাশের বাড়ির একটি গাছের উপরে পড়ে গিয়েছিল। ওই ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে পালোক্ষীর বাবা, দক্ষিণ-পূর্ব রেলওয়ের ভিজিল্যান্সে কর্মরত সুভাষচন্দ্র পাণ্ডার। ছিটকে যাওয়া মেয়েকে ছাদ থেকে ঝুঁকে ধরতে গেলে টাল সামলাতে না পেরে সোজা নীচে পড়ে যান তিনি। নীচে আবাসনের ঘেরা পাঁচিলে মাথা ঠুকে যাওয়ায় ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। ঘটনার পরে পরিজন ও প্রতিবেশীরা পালোক্ষীকে প্রথমে কোথাও খুঁজে পাননি। পরে এক প্রতিবেশী মহিলাই দেখেন, পাশের বাড়ির পাঁচিল লাগোয়া গাছের উপরে নিস্তেজ অবস্থায় পড়ে রয়েছে সে। প্রতিবেশী শুক্লা ভট্টাচার্য জানান, শিশুটির মা উপাসনা মেয়েকে কোলে তুলতেই সে যন্ত্রণায় কেঁদে উঠেছিল। তবে ঘাড়টা এক দিকে হয়ে গিয়েছিল।
সুভাষবাবু-উপাসনাদেবীর প্রথম সন্তানের প্রায় দশ বছর পরে পালোক্ষীর জন্ম হয়েছিল। তার এখন বয়স এক বছর তিন মাস। পড়শিরা জানাচ্ছেন, পালোক্ষীর দাদা, ১২ বছরের অর্ণব অনিমেষ রবিবার সকাল পর্যন্ত জানতই না যে বাবা নেই। এ দিন সুভাষবাবুর দেহ পরিবারের সদস্যেরা হাতে নেওয়ার পরেই তাকে জানানো হয়। পড়শিরা জানাচ্ছেন, সন্ধ্যায় বাবার অন্ত্যেষ্টির পরে অর্ণবকে নিয়ে তার মামারা ওড়িশায় চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ঘটনার রাতেই ভুবনেশ্বর এবং পুরী থেকে গাড়ি করে কলকাতায় এসে পৌঁছেছিলেন সুভাষবাবু ও উপাসনাদেবীর পরিজনেরা। এখন তাঁদের একটাই প্রার্থনা, ছোট্ট মেয়েটি সুস্থ হয়ে ফিরে আসুক।