Kolkata Bus Fare

Bus Fare: কখনও ভাড়া ১০ টাকা আবার কখনও ১২, নিয়ম ভেঙে বেশি ভাড়া নিচ্ছে বাস, অভিযোগ যাত্রীদের

বাসমালিকদের দাবি, সরকার বার বার বেসরকারি বাসের আয়কে নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে। অথচ, খরচের উপরে সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০২২ ০৬:১৭
Share:

ফাইল চিত্র।

হাওড়া থেকে বাসে রোজ ডালহৌসি যান বেসরকারি সংস্থার মধ্যবয়সি এক কর্মী। লকডাউনের আগে বেসরকারি বাসে চেপে ওই পথ যেতে তাঁকে ভাড়া দিতে হত সাত টাকা। এখন কোনও বাস নেয় ১০ টাকা, কোনও বাসে আবার দিতে হচ্ছে ১২ টাকা।

Advertisement

বারাসতের বাসিন্দা, শপিং মলে কর্মরতা এক তরুণী রুবি থেকে বাসে উল্টোডাঙা স্টেশনে ফেরেন। বছর দুই আগে তাঁকে দিতে হত ন’টাকা। লকডাউনের পর থেকে একই পথ যেতে দিচ্ছেন ১২ টাকা। একটু রাত হলে সেটাই বেড়ে হয় ১৫। অভিযোগ, রেট চার্ট দেখতে চাইলেই উত্তর আসে, ‘‘পিছনের বাসে আসুন।’’

শিয়ালদহ থেকে কলেজ স্ট্রিট মোড় যেতে বাসে সাত টাকায় কাজ মিটত বারুইপুরের বাসিন্দা, বইপাড়ার এক কর্মীর। এখন দিতে হচ্ছে দশ টাকা। এটুকু দূরত্বে এত? ওই ব্যক্তিকে শুনতে হয়েছে, ‘‘বাসে উঠলেই দশ!’’

Advertisement

শহরের বেসরকারি বাস এবং মিনিবাসে বেশি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে কি না, জানতে চেয়ে রাজ্য সরকারের কাছে সম্প্রতি দু’সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট চেয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। বলা হয়েছে, বাস-মিনিবাসে নির্ধারিত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে কি না, বাসগুলিতে রেট চার্ট আছে কি না, রিপোর্টে তা থাকতে হবে। ফেব্রুয়ারিতে করা এক জনস্বার্থ মামলার সূত্রেই ওই নির্দেশ।

তবে যাত্রীদের কাছে বাস্তব চিত্রটা পরিষ্কার। তাঁদের অভিযোগ, অধিকাংশ বাসে রেট চার্ট সাঁটানোর বালাই নেই, নির্ধারিত ভাড়া মানারও তোয়াক্কা নেই। রাত হলেই অনেক রুটে ভাড়া প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ। বাসকর্মীদের বক্তব্য, জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি ও লকডাউনে বাস বন্ধ থাকায় বিপুল ক্ষতিই এই বাড়তি ভাড়ার কারণ।

আরও অভিযোগ, সরকার-নির্ধারিত ন্যূনতম ভাড়া নেওয়ার নির্দেশিকাও মানা হয় না। শেষ বার সরকার ভাড়া বাড়িয়েছে ২০১৮ সালে। বেসরকারি বাসের ন্যূনতম ভাড়া বেঁধে দেওয়া হয়েছিল সাত টাকা এবং মিনিবাসের ক্ষেত্রে আট টাকা। অভিযোগ, কোনও ক্ষেত্রেই সেটা মানা হচ্ছে না। বরং ‘বাসে উঠলেই দশ’— এটাই কার্যত নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। শনিবার শহরের একাধিক রুটের বাসে উঠে এমনই ছবি দেখা গেল। হাওড়ার বাসিন্দা সুমন্ত বিশ্বাসের দাবি, ‘‘ভাড়া বাড়েনি শুধু সরকারি খাতায়। কোনও বাসেই ওই ভাড়া নেওয়া হয় না।’’

বাসমালিকদের দাবি, সরকার বার বার বেসরকারি বাসের আয়কে নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে। অথচ, খরচের উপরে সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই। ‘সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিস’-এর সম্পাদক টিটু সাহা বলেন, ‘‘লকডাউনের আগের সঙ্গে তুলনা করলে জ্বালানির দাম ৩০ টাকা বেড়েছে। অথচ, ভাড়া একই আছে। এ ছাড়াও অন্যান্য খরচ বেড়েছে। এ ভাবে বাসমালিকদের লোকসান হলে বেসরকারি পরিবহণ তো শেষ হয়ে যাবে। আমাদের দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে। বহু বার সরকারকে ভাড়া বাড়াতে বলা হয়েছে।’’ তবে বেআইনি ভাবে ভাড়া বৃদ্ধিকে সমর্থন করছেন না ‘অল বেঙ্গল বাস-মিনিবাস সমন্বয় সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায়। তবে তাঁর বক্তব্য, ‘‘বাসের আয় এবং ব্যয়ের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষায় সরকারেরও ভূমিকা থাকা উচিত।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তেফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন