Metro

স্মার্ট কার্ড ফেরানোর হিড়িক মেট্রোয়

কিন্তু যাত্রীদের এমন প্রবণতা কেন? মেট্রো সূত্রের খবর, যাতায়াতের সুবিধার কারণে স্মার্টফোন ব্যবহারকারী যাত্রীরা মেট্রোকেই এগিয়ে রাখছেন।

Advertisement

ফিরোজ ইসলাম

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০২০ ০৪:০১
Share:

প্রতীকী ছবি।

করোনা পরিস্থিতিতে স্পর্শজনিত সংক্রমণের আশঙ্কা কমাতে টোকেনের বদলে শুধুমাত্র স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে যাতায়াতের ব্যবস্থা চালু করেছিলেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। কিন্তু শহরতলির ট্রেন চালু হওয়ার পরে যাত্রীদের একাংশ স্মার্ট কার্ডে যাতায়াতের পরে তা সরাসরি ফিরিয়ে দিয়ে যাচ্ছেন কর্তব্যরত স্টেশন মাস্টারের ঘরে। দিনের দিন কার্ড কিনে ব্যবহারের পরে তা ফিরিয়ে দিয়ে টাকা ফেরত নেওয়া যাত্রীর সংখ্যা বাড়ছে মেট্রোয়। যা নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন কর্তারা। গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনগুলির ক্ষেত্রে দৈনিক ৪০-৫০ জন যাত্রী আসছেন স্মার্ট কার্ড ফেরত দিতে। দমদম বা কবি সুভাষের মতো প্রান্তিক স্টেশনে ওই সংখ্যা প্রায়ই ১০০ ছাড়িয়ে যাচ্ছে বলে খবর। পরিস্থিতি এমনই যে, সংক্রমণ ঠেকাতে ফেরত পাওয়া স্মার্ট কার্ড জীবাণুমুক্ত করা নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন মেট্রোকর্তারা।

Advertisement

কিন্তু যাত্রীদের এমন প্রবণতা কেন? মেট্রো সূত্রের খবর, যাতায়াতের সুবিধার কারণে স্মার্টফোন ব্যবহারকারী যাত্রীরা মেট্রোকেই এগিয়ে রাখছেন। আগের তুলনায় ট্রেনের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় ই-পাসের জন্য অপেক্ষাও কমেছে। এই অবস্থায় স্মার্টফোনে সড়গড়, অথচ মেট্রোর নিয়মিত যাত্রী নন, এমন লোকজনই স্মার্ট কার্ড ফিরিয়ে দিচ্ছেন বেশি। স্মার্ট কার্ডের সিকিওরিটি ডিপোজ়িট এবং ব্যালান্স বাবদ যে টাকা ফেরত পাওয়া যাচ্ছে, তাতে ওই যাত্রীদের ভাড়াতেও সাশ্রয় হচ্ছে। করোনা আবহ এবং আর্থিক টানাটানির মধ্যে অনেকেই স্মার্ট কার্ডে টাকা রেখে দিতে নারাজ।

মেট্রোর এক আধিকারিক জানান, ন্যূনতম ১০০ টাকা দিয়ে স্মার্ট কার্ড কিনলে সিকিওরিটি ডিপোজ়িট লাগে ৬০ টাকা। বাকি ৪০ টাকার উপরে ১০ শতাংশ ছাড় যুক্ত হয়ে ব্যালান্সের অঙ্ক দাঁড়ায় ৪৪ টাকা। এ বার কোনও যাত্রী ১০ টাকার দূরত্বে যাতায়াত করলে ভাড়া বাবদ তাঁর মোট খরচ হচ্ছে ২০ টাকা। যাত্রা শেষে তিনি ওই স্মার্ট কার্ড যখন ফেরত দিচ্ছেন, তখন ব্যালান্স পরীক্ষা করে দেখা গেল, ২৪ টাকা পড়ে আছে। ওই টাকার ১০ শতাংশ কেটে নিয়ে (ভগ্নাংশ পরিহার করে) বাকি টাকা যাত্রীকে ফিরিয়ে দেওয়াই নিয়ম। ওই টাকার ১০ শতাংশ ২.৪০ টাকা হলেও যাত্রীর থেকে কাটা হচ্ছে দু’টাকা। যাত্রী ২২ টাকা ছাড়াও ফেরত পাচ্ছেন সিকিওরিটি ডিপোজ়িটের ৬০ টাকা। ফলে তাঁর মোট প্রাপ্তি ৮২ টাকা। অর্থাৎ, যাতায়াতে ২০ টাকার পরিবর্তে ১৮ টাকা খরচ হল তাঁর। মেট্রোর এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘যাত্রীর প্রাপ্য ছাড় নিয়ে বলার কিছু নেই। কিন্তু, কার্ড ফেরানোর ভিড় যে ভাবে বাড়ছে, তাতে মেট্রোকর্মীদের সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়ছে।’’

Advertisement

প্রাক্-করোনা পরিস্থিতির তুলনায় এখন কার্ড ফেরানোর সংখ্যা কয়েক গুণ বেড়েছে বলে দাবি মেট্রোর। বারাসতের বাসিন্দা, ছোট ব্যবসায়ী অঙ্কুশ সাহা বললেন, ‘‘মাসে দু’বার বড়বাজারে যাই। মেট্রোয় প্রতিদিন যখন চড়ব না, তখন কার্ডে টাকা ফেলে রাখব কেন?’’

আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা সত্ত্বেও সংক্রমণ ঠেকাতে সীমিত সংখ্যক যাত্রী নিয়ে পরিষেবা চালানোর পরিকল্পনা করেছিলেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এখন এমন পরিস্থিতির মোকাবিলায় টোকেন ফিরিয়ে আনার কথাও ভাবছেন তাঁরা। মেট্রোর এক কর্তা বলেন, ‘‘স্কুল-কলেজ বন্ধ। যাত্রীর সংখ্যা এখনও কম রয়েছে। তাই এ নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন