বচসা: বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশ। শনিবার। নিজস্ব চিত্র
ফের রোগী মৃত্যুতে উঠল চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগ। ফের হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ দেখালেন মৃতের পরিজনেরা। শনিবার সকালে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে নিউ আলিপুরের বি পি পোদ্দার হাসপাতালের সামনে রাস্তা অবরোধও করা হয়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পুলিশ জানায়, মহেশতলার বাসিন্দা, অবসরপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সরকারী কর্মী বিজয়কুমার কুর্মি (৬৩) পায়ে ব্যথা নিয়ে ২৮ এপ্রিল বি পি পোদ্দার হাসপাতালে ভর্তি হন। বিজয়বাবুর ছেলে অজয়কুমার কুর্মির অভিযোগ, ‘‘বাবা ২৮ মে পর্যন্ত টানা এক মাস হাসপাতালে ছিলেন। কিন্তু ভর্তি হওয়ার পর থেকে পায়ের ব্যাথা কমা তো দূর, উল্টে কিডনির সমস্যা শুরু হয়।’’ বিজয়বাবুর পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, এক মাসে চিকিৎসার খরচ বাবদ হাসপাতালকে প্রায় কুড়ি লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে।
২৮ মে ছাড়া পেলেও বিজয়বাবুকে ডায়ালিসিসের জন্য নিয়মিত ওই হাসপাতালে নিয়ে আসা হতো। অভিযোগ, ৫ অগস্ট ডায়ালিসিস করার পর বিজয়বাবুর জ্বর আসে। তাঁর আত্মীয় মোনালিসা ঘোষের অভিযোগ, ‘‘প্রবল জ্বর এসেছে দেখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বারবার অনুরোধ করি ওঁকে ভর্তি করে নিতে। কিন্তু কোনও কথা না শুনেই রোগীকে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়।’’ অভিযোগ, ৫ অগস্ট বাড়ি ফিরে বিজয়বাবুর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। সেই রাতেই ফের তাঁকে হাসপাতালে আনা হয়। পুলিশ জানায়, ৫ অগস্ট রাত থেকে বিজয়বাবু হাসপাতালের ইনটেনসিভ থেরাপি ইউনিটে (আইটিইউ) ছিলেন। তাঁকে ভেন্টিলেশনেও রাখা হয়। শনিবার সকালে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় বাড়িতে খবর দেওয়া হয়। এ দিন দুপুরে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এর পরেই হাসপাতালের সামনের রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বিজয়বাবুর পরিবারের লোকজন।
মৃতের ছেলে অজয়বাবুর অভিযোগ, ‘‘বাবার কিডনির কোনও সমস্যা ছিল না। হাসপাতালে নিয়ে আসার পর কী এমন হল যে তাঁর ডায়ালিসিস করাতে হল? দীর্ঘ দিন ধরে ভর্তি থাকলেও বাবার কী ধরনের শারীরিক সমস্যা হচ্ছে, সে বিষয়ে হাসপাতালের তরফে আমাদের কিছু জানানো হয়নি। চিকিৎসার গাফিলতির জন্যই বাবাকে অকালে হারালাম।’’ এ দিন দুপুরেই বি পি পোদ্দার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ–সহ তিন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে নিউ আলিপুর থানায় চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগ দায়ের করেছে মৃতের পরিবার। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে।
এ দিন বি পি পোদ্দার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাঁরা রোগী-মৃত্যু নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।