Durga Puja 2023

সরেছে করোনার ছায়া, ফের পুরনো ছন্দে শহরের আবাসনের পুজো

করোনা পরিস্থিতি কাটিয়ে অনেকটাই ছন্দে ফিরেছিল গত বছরের পুজো। এ বছর আবার পুরোদস্তুর আগের মতো বাজেট, আয়োজনের জাঁকজমক ফিরেছে শহরের একাধিক আবাসনের পুজোয়।

Advertisement

চন্দন বিশ্বাস

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০২৩ ০৯:২২
Share:

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

মহালয়ার আগে থেকেই শহরের পুজোর ঢাকে কার্যত কাঠি পড়ে গিয়েছে। উদ্বোধন হয়ে গিয়েছে শহরের একাধিক বারোয়ারি পুজোর। দর্শনার্থীদের আনাগোনাও শুরু হয়েছে মণ্ডপে মণ্ডপে। কোনও বারোয়ারির মণ্ডপে আবার চলছে শেষ মূহূর্তের ব্যস্ততা। প্রস্তুতি শেষ করতে তাড়াহুড়ো চলছে শহরের একাধিক আবাসনের পুজোতেও। কোথাও চলছে প্রতিমা আনার তোড়জোড়। কোথাও আবার পুজোর চার দিনের খাদ্যতালিকা তৈরিতে ব্যস্ত উদ্যোক্তারা।

Advertisement

করোনা পরিস্থিতি কাটিয়ে অনেকটাই ছন্দে ফিরেছিল গত বছরের পুজো। এ বছর আবার পুরোদস্তুর আগের মতো বাজেট, আয়োজনের জাঁকজমক ফিরেছে শহরের একাধিক আবাসনের পুজোয়। কোথাও আবার প্রয়াত বাসিন্দার স্মরণে বন্ধ থাকছে পুজো।

বি টি রোডের রথতলার কাছে বহুতল আবাসন ক্লাবটাউন হাইট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের পুজোয় গত কয়েক বছরের তুলনায় বাজেট কিছুটা বেড়েছে বলে জানাচ্ছেন উদ্যোক্তারা। মহিলা পরিচালিত এই পুজোয় প্রতিমা থেকে মণ্ডপ— সবেতেই থাকছে অভিনবত্বের ছোঁয়া। পুজোর পাঁচ দিনই থাকছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সঙ্গে কচিকাঁচাদের জন্য বিভিন্ন প্রতিযোগিতা। আবাসিকরা মাতবেন একসঙ্গে খাওয়াদাওয়া থেকে বিসর্জনের সিঁদুর খেলায়।
অন্যতম উদ্যোক্তা ইন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘করোনার পরে এই প্রথম সেই পুরনো আয়োজন ফিরছে। আবাসিকেরাই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের অন্যতম প্রাণ। সব মিলিয়ে এ বারের পুজো জমজমাট।’’

Advertisement

রাজারহাট মেন রোডের কালী পার্কের সিলভার ওক আবাসনের পুজোর এ বার অষ্টম বর্ষ। পুজোয় থাকছে থিমের ছোঁয়া। বেত এবং বাঁশের মাধ্যমে তৈরি হয়েছে মণ্ডপ। এই পুজোর প্রেসিডেন্ট অমিত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মহালয়ায় মণ্ডপে প্রতিমা আসার পর থেকেই আমাদের উৎসবের শুরু। আমাদের আবাসনে বিভিন্ন ধর্মের মানুষ থাকেন। কোনও বিভেদ নেই। প্রত্যেককে নিয়েই আমাদের পুজো।’’

কবি সুভাষ মেট্রো স্টেশন সংলগ্ন উপহার আবাসনের পুজোয় খাওয়াদাওয়া, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি প্রতিযোগিতার আয়োজন থাকছে পুজোর ক’দিন। পুজোর অন্যতম উপদেষ্টা সুবীর বসাক বলেন, ‘‘করোনার সময় থেকেই আমাদের পুজোয় নানা বিধিনিষেধ ছিল। এমনকি, গত বছরও তা পালন করা হয়েছে। কিন্তু এ বছর শুধুই উৎসব। তার জন্য বাজেট অনেকটা বেড়েছে।’’

ই এম বাইপাস সংলগ্ন রুচিরা আবাসনের পুজো এ বার ১৭তম বছরে পা দিল। আয়োজনের দায়িত্বে রয়েছেন মহিলারা। পঞ্চমী থেকেই পুজোর আবহে মাতবে আবাসন। পুজোর থিম ‘নহি দেবী, নহি সামান্যা নারী’। গামছা এবং লাল পাড়, সাদা শাড়িতে উঠে এসেছে হিমাচল প্রদেশের পাহাড়ি মন্দিরের আদল। পুজোকে কেন্দ্র করে আবাসিক এবং কচিকাঁচাদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, নাটক, খাওয়াদাওয়া মিলে যেন জমজমাট কার্নিভাল। একই ছবি গড়িয়া হিন্দুস্থান মোড় সংলগ্ন ভিক্টোরিয়া গ্রিন আবাসনেও। এই আবাসনের পুজো এ বার ২০ বছরে পা দিয়েছে। আবাসনের পুজো হলেও থিমে থাকছে সাবেকিয়ানার ছোঁয়া। গ্রামের পরিবেশে, ঠাকুরদালানের আদলে তৈরি মণ্ডপে থাকবে একচালা প্রতিমা এবং সম্পূর্ণ লোকায়ত পুজোর আবহ। পুজোকে কেন্দ্র করে চার দিন ধরে চলে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, খাওয়াদাওয়া, জমজমাট আড্ডা। রাজারহাটের ড্রিম পালাজ্জো হাউজ়িংয়ের পঞ্চম বর্ষের পুজোয় থাকবে নবদুর্গার ব্যাখ্যা। সঙ্গে থাকছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও।

তবে উৎসবের আলো কিছুটা হলেও স্তিমিত মুকুন্দপুরের অভিদীপ্তা এইচআইজি-র ফেস্টিভ্যালস অ্যান্ড কালচারাল কমিটির পুজোয়। ওই আবাসনে তিনটি পুজো হয়।
গত বছর লক্ষ্মী পুজোয় আবাসনের এক যুবকের আকস্মিক মৃত্যুর পরে এ বছর একটি পুজো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই আবাসনের উৎসব কমিটির অন্যতম সদস্য সোমা ঘোষের কথায়, ‘‘হয়তো আবার আগামী বছরে সব পুরনো ছন্দে ফিরবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন