উৎসবের আনন্দে বাধা হল না পকেটের পুঁজি

যেন এক মায়া-নগরী! এক্কেবারে রূপকথার নগর! মাথার উপরে রুপোলি আলোর চাদর। চিকন সাদা রঙের আলোর দরজায় মিটমিট করছে সহস্র নক্ষত্র।

Advertisement

তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০১৬ ০১:১০
Share:

বড়দিন উপলক্ষে সেন্ট পলস ক্যাথিড্রালে বিশেষ প্রার্থনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশে তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন। বিশ্বনাথ বণিকের তোলা ছবি।

যেন এক মায়া-নগরী! এক্কেবারে রূপকথার নগর!

Advertisement

মাথার উপরে রুপোলি আলোর চাদর। চিকন সাদা রঙের আলোর দরজায় মিটমিট করছে সহস্র নক্ষত্র। সে দরজা পেরোলেই মায়া-নগরীতে প্রবেশ। যেখানে গাছ থেকে ঝ়রে পড়ে হাজার আলোর তারা। আলোর ময়ূর পেখম মেলে ধরে। আটটা হরিণের গাড়িতে চড়ে পেট মোটা বুড়ো হাসতে হাসতে শুভেচ্ছা জানায়।

সত্যিই সান্তা ক্লজের ঝুলি থেকে উপহার বেরিয়েছে। না, আমজনতা এখন যার সন্ধানে ব্যাঙ্কে, এটিএমে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, সেটা নয়। সান্তার ঝুলি থেকে বেরিয়েছে, সব কিছু ভুলে এক দিন উৎসবে মেতে ওঠার শক্তি। তাই পার্ক স্ট্রিট মেতে উঠেছে চেনা ছন্দে।

Advertisement

বড়দিনের আগের সন্ধ্যায় পার্ক স্ট্রিটে চেনা ছবি। রাত যত বাড়ছে, পা রাখার জায়গার অভাব ততই বাড়ছে। জনপ্রিয় বার্গার-পিৎজা চেনের বিপণি হোক কিংবা অভিজাত কেকের দোকান— সর্বত্রই ভিড় জমিয়েছে আমজনতা। রাতের খাবার সময় মতো পেতে সন্ধ্যে হতেই বিভিন্ন রেস্তোরাঁর সামনে লাইন দিয়েছেন মানুষ।

তবে ফুটপাথ ছেড়ে রাস্তায় নামার উপায় নেই। কড়া পাহারায় রয়েছে কলকাতা পুলিশ। তাই পার্ক স্ট্রিটের দু’পাশের ফুটপাথে থিকথিক করছে লাল টুপির মাথা।

এ বছর নোটের চোটে কিছুটা কাহিল আমজনতা। হাতে নগদের অভাবে খরচের খাতা ছোট হচ্ছে। কিন্তু বড়দিনের আগে সেই যন্ত্রণা একটু ভুলতে চাইছে মধ্যবিত্ত বাঙালি।

উৎসবমুখর বো-ব্যারাক ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

সন্ধ্যে হতেই পার্ক স্ট্রিটে সপরিবার হাজির হয়েছেন শোভাবাজারের অনিন্দ্য রায়। নগদ টাকা বাঁচাতে ট্যাক্সি ভাড়া করে নয়, মেট্রোয় চড়েই পার্ক স্ট্রিটে আগমন। কিন্তু খাবারের মেনুতে কোনও আপস হবে না, সাফ জানালেন রায় গিন্নি। বেসরকারি সংস্থার কর্মী অনিন্দ্যবাবু বললেন, ‘‘বছরে এই দিনটা পরিবারের সঙ্গে আনন্দ করে কাটাব না! নগদের অভাবে সারা মাসই তো খুব হিসেব করে খরচ করতে হচ্ছে। একটা দিন আর এ সব নিয়ে ভাবতে চাই না। রেস্তোরাঁয় কার্ডে টাকা নেবে। আশা করি, সেখানে অন্তত ইচ্ছে মতো খাবার খেতে পারব।’’

কলেজপড়ুয়াদের একটা দল সন্ধ্যে হতেই ভিড় জমিয়েছে আন্তর্জাতিক বার্গার চেনের বিপণিতে। ওই একুশের দলের বেশির ভাগ সদস্যই অনেক কষ্টে জোগাড় করেছেন নগদ টাকা। দলের এক সদস্য পৌলমী দত্তের কথায়, ‘‘ক্রিসমাস পার্টির জন্য মায়ের কাছে টাকা চাইতেই বেজায় রেগে গেলেন। বললেন, সর্ষের তেল থেকে মাছ পর্যন্ত খাতায় কিনে আনতে হচ্ছে, পার্টির টাকা হবে না। তবে বাবা যেন আমার সান্তা ক্লজ। নতুন ৫০০ টাকার দু’টো নোট দিয়েছেন। বললেন, এটা দিয়েই চালিয়ে নিস। এ বার তাই ছোট পার্টি।’’

পার্ক স্ট্রিটে পুলিশের নজরদারি।ছবি: রণজিৎ নন্দী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন