উৎসবের আগেই শুরু বাজি ফাটানো

কালীপুজো ও দীপাবলির রাতে বাজির দাপট রুখতে কোমর বাঁধছে পুলিশ, দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ ও পরিবেশকর্মী সংগঠন। কিন্তু রবিবার রাত থেকেই কলকাতা ও লাগোয়া এলাকায় বাজির দাপট টের পেতে শুরু করলেন মানুষজন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০১৮ ০১:৩৭
Share:

কালীপুজো ও দীপাবলির রাতে বাজির দাপট রুখতে কোমর বাঁধছে পুলিশ, দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ ও পরিবেশকর্মী সংগঠন। কিন্তু রবিবার রাত থেকেই কলকাতা ও লাগোয়া এলাকায় বাজির দাপট টের পেতে শুরু করলেন মানুষজন। সোমবার রাতেও ফেটেছে শব্দবাজি । যা দেখে পরিবেশপ্রেমীদের প্রশ্ন, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরেও কালীপুজো-দীপাবলিতে বাজির দাপট রোখা যাবে কি?

Advertisement

এ বছর বাজি পোড়ানোর সময় বেঁধে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। কলকাতা-সহ গোটা রাজ্যেই কালীপুজো ও দীপাবলিতে রাত আটটা থেকে দশটা পর্যন্ত বাজি পো়ড়ানো যাবে। ৯০ ডেসিবেলের বেশি শব্দমাত্রার বাজি নিষিদ্ধ। তা সত্ত্বেও রবিবার রাত থেকে বাজি ফাটল কী ভাবে? ভবানীপুরের বাসিন্দা এক তরুণী জানান, রবিবার সন্ধ্যা থেকেই আশপাশে দুমদাম বাজি ফাটানো শুরু হয়। সেই শব্দে অসুস্থ মায়ের কী হবে, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছিলেন তিনি। দমদম ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনের আশপাশেও বাজি ফাটার আওয়াজ মিলেছে বলে খবর মেলে।

এ সব অভিযোগ শুনে পরিবেশকর্মীদের যৌথ সংগঠন ‘সবুজ মঞ্চ’-এর আহ্বায়ক নব দত্ত বলছেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্ট পুলিশকে বাজি রোখার দায়িত্ব দিয়েছে। এই উপদ্রব আটকানোর দায়িত্ব তাদেরই। রবিবার থেকে যা অভিযোগ পাচ্ছি, তাতে কালীপুজোর রাতে আদৌ আদালতের নির্দেশ কতটা পালন করা হবে, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।’’ যদিও কলকাতা পুলিশের দাবি, নিয়ম মেনে বাজি ফাটাতে প্রচার চালানো হয়েছে। সচেতনতা বাড়াতে সোমবার স্থানীয় শিশুদের নিয়ে এক পদযাত্রার আয়োজন করে গড়িয়াহাট থানা। প্রচুর নিষিদ্ধ বাজি ধরাও হয়েছে। বিমানবন্দর লাগোয়া এলাকায় এ বার ফানুস নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের এক কর্তা জানান, বিভিন্ন দোকান থেকে বাজি ও ফানুস বাজেয়াপ্ত করেছেন তাঁরা।

Advertisement

রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ সূত্রে বলা হচ্ছে, বাজি পোড়ানোকে নিয়মে বাঁধতেই হবে। না হলে সরাসরি সংশ্লিষ্ট থানার ওসি-দের উপরে তার দায় বর্তাবে। ‘‘বাজি ও শব্দদূষণ নিয়ে অভিযোগ শুনতে আজ, কালীপুজো ও কাল, দীপাবলির রাতে কন্ট্রোল রুম খুলছি আমরা,’’ বললেন দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র।

লালবাজারের কর্তাদের আশ্বাস, বাজিকে নিয়মে বাঁধতে সব রকম চেষ্টা হবে। কলকাতার যে সব এলাকা থেকে নিষিদ্ধ বাজি ফাটানোর বেশি অভিযোগ মেলে, কালীপুজো ও দীপাবলির রাতে সেখানে অতিরিক্ত নজরদারি চালানো হবে। কলকাতা পুলিশের এক পদস্থ কর্তার মন্তব্য, ‘‘রবিবার রাত পর্যন্ত বাজি ফাটানো নিয়ে লালবাজারের কন্ট্রোলে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। তবে নজরদারি চলছে।’’

পুলিশ জানিয়েছে, অশোককুমার আগরওয়াল নামে বালিগঞ্জের এক ব্যক্তি অভিযোগ করেছেন, স্থানীয় কিছু যুবক তাঁর দোকানের সামনে চকলেট বোমা ফাটিয়েছে, প্রতিবাদ করলে হুমকিও দিয়েছে। তিনি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। লালবাজারের দাবি, পয়লা অক্টোবর থেকে নভেম্বরের পাঁচ তারিখ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে সাত হাজার কিলোগ্রাম বাজি আটক করা হয়েছে। বম্ব স্কোয়াডের সদস্যেরা বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চালিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন