আমার পাড়া: কসবা নারকেল বাগান

মিলমিশ আছে, তবে কোলাহল নেই

আমার ডালের বাটি, তোমার রান্নঘরে, তোমার কৃষ্ণচূড়া আমার উঠোনেও ঝরে। এমন পাড়া কি সত্যি আর আছে? আমার পাড়া নারকেলবাগান, এও বেশ এক মজার পাড়া।

Advertisement

অনিন্দ্য দে

শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০১৭ ০১:৪৯
Share:

মশগুল: পাড়ার রাস্তায় বিকেলের আড্ডা। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

আমার ডালের বাটি, তোমার রান্নঘরে, তোমার কৃষ্ণচূড়া আমার উঠোনেও ঝরে। এমন পাড়া কি সত্যি আর আছে?

Advertisement

আমার পাড়া নারকেলবাগান, এও বেশ এক মজার পাড়া। আসলে এর বয়স তো খুব বেশি নয় সেই অর্থে, এ নিজেই নবীন তাই এর চরিত্রটিও ভারী মিশ্র। এর এক দিকে রয়েছেন হাতে গোনা কিছু আদি বাসিন্দা, আর অন্য দিকে দল ভারী এক শ্রেণি যাঁরা মোটামুটি গত ১০-১২ বছরের মধ্যে এসে এখানে বাসা বেঁধেছেন। বলে রাখা ভাল যে আমিও এই দ্বিতীয় দলের।

যখন বাইপাসের কাছাকাছি এই পাড়ায় ফ্ল্যাট কিনেছিলাম, অনেকেই ভয় দেখিয়েছিলেন। তবে এখানকার শান্ত, নিরিবিলি পরিবেশ আমায় আকৃষ্ট করেছিল। সেটা আজও অটুট।

Advertisement

নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি থেকে এই অঞ্চলে একে একে গড়ে উঠতে থাকে হাসপাতাল, স্কুল, বাজার বহুতল ইত্যাদি। আরও একটা বড় সুবিধে, তখন এই অঞ্চলে সব কিছু মধ্যবিত্তের সাধ্যের মধ্যে ছিল।

এ পাড়ায় চায়ের দোকান, সেলুনের আড্ডাটা এখনও জমজমাট। সকালে স্বাস্থ্য অন্বেষণে বেরোনো বিভিন্ন বয়সের মানুষের মধ্যে কুশল বিনিময় ভাল মতোই আছে। পাড়ার পুজো, বাৎসরিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, উজ্জ্বল আলোকিত খেলার মাঠ, সবই রয়েছে। অর্থাৎ, যা কিছু একটা অঞ্চলকে পাড়া করে তোলে, তার সবই মজুত এখানে। হাত বাড়ালেই রয়েছে স্টেডিয়াম এবং একাধিক শপিং মল। তবে এ পাড়ার মূল মজাটা এখানেই— এর এক দিকে যেমন সাজানো রয়েছে আধুনিক শহরের বৈভবের সব হাতছানি, তেমনই অন্য দিকে রয়েছে মধ্যবিত্তের পুরনো পিছুটান— তেলেভাজা আর ফুচকার একাধিক দোকানও।

তবে কিছু কিছু সমস্যাও আছে। যেমন রাস্তায় জুড়ে নির্মীয়মাণ বাড়ির ইমারতি সামগ্রী পড়ে থাকা আর কাছেই একটি নিকাশি খাল থাকায় শীতকালে মশার উপদ্রপ বাড়ে। এ ছাড়া পার্কিং সমস্যা তো আছেই। মিলেমিশে সকলেই এক সঙ্গে কাটাই দুর্গাপুজো, কালীপুজো, সরস্বতীপুজো কিংবা বর্ষবরণের রাত। খেলাধুলোর চল কমলেও হারিয়ে যায়নি। এখানে যোগাযোগটা আবাসন কেন্দ্রীক। সকলে এক সঙ্গে আপ্লুত হই। সুখ-দুঃখে পাশে থাকা আমাদের মজ্জায়।

লেখক শিক্ষক

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন