প্রতীকী ছবি
চিকিৎসক-সহ স্বাস্থ্যকর্মীদের সম্মান জানিয়ে সরকারি ছুটি ঘোষণার দিনেই সল্টলেকের একটি বেসরকারি কোভিড হাসপাতালের চিকিৎসকদের হেনস্থা করার অভিযোগ উঠল বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার কমিশনারেটে লিখিত ভাবে নিজেদের বক্তব্য জানিয়েছেন ওই চিকিৎসকেরা। তাঁদের একাংশের দাবি, করোনায় আক্রান্ত এক পুলিশকর্মীকে রবিবার শয্যা দিতে পারেননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরের দিনই চিকিৎসকদের গাড়িতে কাঁটা লাগিয়ে দেওয়া হয়। সোশ্যাল সাইটে ভুক্তভোগী চিকিৎসকদের দাবি, দু’টি ঘটনার মধ্যে যোগসূত্র রয়েছে।
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, সোমবার দুপুরে হাসপাতালের সামনের রাস্তায় রাখা তাঁদের গাড়িতে কাঁটা লাগিয়ে দেন কমিশনারেটের পুলিশকর্মীরা। পুলিশের তরফে জানানো হয়, গাড়িগুলি নো-পার্কিং জ়োন-এ ছিল। চিকিৎসকেরা জানান, গত ১০ বছর ধরে ওই জায়গায় তাঁরা গাড়ি রাখেন। স্ত্রী-রোগ চিকিৎসক গৌতম দত্তশর্মার অভিযোগ, ‘‘হাসপাতালের পাশের ফাঁকা জমিতে রাখা গাড়িতেও কাঁটা লাগানো হয়েছে। পুলিশের তরফে বলা হয়, এখন থেকে ওই জায়গা ‘নো-পার্কিং জ়োন’!’’ চিকিৎসকদের বক্তব্য, বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা যেত। কিন্তু দিনভর ‘কোভিড যোদ্ধা’ হিসেবে কাজ করার পরে সোমবার যে পরিস্থিতিতে তাঁদের পড়তে হয়েছে, তা দুর্ভাগ্যজনক।
কোভিড নমুনা পরীক্ষাগারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক শেলি শর্মা জানান, সন্ধ্যাতেও গাড়িতে কাঁটা লাগানো ছিল। তাঁর দাবি, বিধাননগর (দক্ষিণ) থানায় ফোন করলে গাড়িতে কাঁটা লাগানোর কারণ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের থেকে জেনে নিতে বলা হয়। ঘণ্টা দেড়েক রাস্তায় অপেক্ষা করার পরে ক্যাব ধরে বাড়ি ফেরেন শেলি। মঙ্গলবার তিনি বলেন, ‘‘মানসিক চাপ সামলে গত সাড়ে তিন মাস কোভিড চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত রয়েছি। এমন ব্যবহারে কাজ করার ইচ্ছেটাই চলে যায়!’’
কমিশনারেটে জমা দেওয়া বক্তব্যে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, অতিমারির সময়ে স্বাস্থ্যকর্মী ও পুলিশের যখন মানুষের স্বার্থে কাজ করা উচিত, তখন এমন ঘটনা মনোবল ভেঙে দেয়। চিকিৎসক সংগঠন ‘ডক্টর্স ফর পেশেন্টস’ (ডোপা)-এর তরফে চিকিৎসক শারদ্বত মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘বেছে বেছে হাসপাতালের চিকিৎসকদের গাড়িতেই কাঁটা লাগানো হয়েছে। জরিমানা দেওয়ার পরেও অনেক গাড়ির কাঁটা খোলা হয়নি। পুলিশ-প্রশাসনই হাসপাতাল তৈরির অনুমতি দিয়েছে। তা হলে চিকিৎসকেরা গাড়ি রাখবেন কোথায়?’’
বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের এক শীর্ষ কর্তা জানান, ‘নো-পার্কিং জ়োনে’ গাড়ি রাখা নিয়ে পদক্ষেপের অন্য অর্থ করা অনুচিত। চিকিৎসক-পুলিশ সকলে মিলেই লড়াই করছেন। তিনি জানান, বিষয়টি দেখা হবে।