Examination

আদালতের পরীক্ষায় ব্লুটুথ দিয়ে হাইটেক টোকাটুকি, ধৃত প্রায় ৫০ পরীক্ষার্থী

ঘাড় গুঁজে তখন পরীক্ষার্থী মন দিয়ে শুনছেন প্রশ্নের উত্তর। কানে গোঁজা ছোট্ট ব্লু টুথে ভেসে আসছে কোনটা সঠিক উত্তর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৮:০৫
Share:

অলঙ্করণ: তিয়াসা দাস।

পরীক্ষার হলে প্রশ্নপত্র পাওয়ার শুধু অপেক্ষা। হাতে প্রশ্ন আসার সঙ্গে সঙ্গেই চালু হয়ে যাচ্ছে পকেটে থাকা ছোট্ট মোবাইল ফোন। বাইরে থেকে দেখে বোঝার কোনও উপায় নেই। হলে থাকা পরিদর্শক হঠাৎ করে দেখলে ভাববেন, পরীক্ষার্থী মন দিয়ে ঘাড় গুঁজে উত্তর লিখছেন।

Advertisement

আদতে ঘটনাটা তেমন নয়। ঘাড় গুঁজে তখন পরীক্ষার্থী মন দিয়ে শুনছেন প্রশ্নের উত্তর। কানে গোঁজা ছোট্ট ব্লু টুথে ভেসে আসছে কোনটা সঠিক উত্তর। রবিবার এমনটাই হল দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা আদালতের গ্রুপ-ডি পদে নিয়োগের পরীক্ষায়। দক্ষিণ কলকাতার বিভিন্ন স্কুলে রবিবার এই পরীক্ষা হয়।

ওই দিন বেহালা, পর্ণশ্রী, নেতাজি নগর, বালিগঞ্জ, ভবানীপুর, গড়িয়াহাট, রবীন্দ্র সরোবর থানা এলাকার বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে প্রায় ৫০ জন পরীক্ষার্থীকে পাকড়াও করেন পরিদর্শকরা। ধৃতদের সবার কাছে ব্লু টুথ এবং ছোট্ট মোবাইল পাওয়া গিয়েছে।

Advertisement

আরও পড়ুন: তিন কংগ্রেসি মুখ্যমন্ত্রীর শপথে বিরোধী জোটের হাওয়া, নেই শুধু মায়া-মমতা-অখিলেশ​

আরও পড়ুন: ভানুভবনে হামলার ঘটনায় বিমল গুরুং-সহ ৭২ জনের নামে চার্জশিট সিআইডির​

পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতদের জেরা করে জানা গিয়েছে, তাঁদের মধ্যে একজন কেউ গোটা প্রশ্নপত্রের ছবি তুলে হোয়াটস্অ্যাপে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন বাইরে। মূলত মাল্টিপল চয়েস প্রশ্ন ছিল।তার পর সেই প্রশ্নের উত্তর বাইরে থেকে আসছিল। তদন্তকারীদের সন্দেহ, এর পেছনে রয়েছে বড়সড় কোনও সংগঠিত চক্র। টাকার বিনিময়ে তাঁরা পেশাদারের মতোই বাইরে থেকে উত্তর দিয়েছে মোবাইলে। ধৃতদের সকলেই নদিয়া এবং মুর্শিদাবাদ জেলার বাসিন্দা। এক তদন্তকারী আধিকারিক বলেন, “চক্রটি সম্ভবত ওই দুই জেলারই। পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে বেশ কিছু ফোন নম্বর পাওয়া গিয়েছে। সেই নম্বর থেকেই ফোন করে উত্তর বলে দেওয়া হচ্ছিল। সেই নম্বর ধরে তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।”

ধৃতদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪২০,৪১৭ এবং ১২০বি ধারায় মামলা করা হয়েছে। সোমবার আলিপুর আদালতের মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট এবং অতিরিক্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের এজলাসে তোলা হয় ধৃতদের। অভিযুক্তদের আইনজীবী হিসাবে ছিলেন দিব্যেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তীর্থঙ্কর রায়। দিব্যেন্দুবাবু বলেন,“আমরা জামিনের আবেদন করেছিলাম। মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের আদালত ধৃতদের জামিন দিয়েছে। তবে অতিরিক্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট ধৃতদের মধ্যে ১৯ জনকে দু’দিনের পুলিশ হেফাজতে রাখারনির্দেশ দিয়েছেন।” নেতাজিনগর থানার এক তদন্তকারী বলেন, “আমরা ধৃতদের জেরা করে চক্রের পাণ্ডার খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন