উধাও ৫০ লক্ষ টাকার আরও কিছুটা উদ্ধার হয়েছে। ট্যাক্সিতে তুলে ছিনতাইয়ের ঘটনায় গ্রেফতারও হয়েছে আরও এক জন। পুলিশ জানায়, ধৃতের নাম মহম্মদ হুসেন। এন্টালির মতিঝিল কলোনিতে ট্যাক্সিটিও পাওয়া গিয়েছে।
পুলিশি সূত্রের খবর, ২০ ফেব্রুয়ারি পার্ক স্ট্রিটের একটি সংস্থায় জমা দেবেন বলে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা নিয়ে বেরিয়েছিলেন বিষ্ণুপদ বণিক নামে এক ব্যক্তি। তাঁর অফিসের এক কর্মী রীতিমতো ছক কষেই সেই টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে গোয়েন্দাদের সন্দেহ। পুলিশের কাছে অভিযোগে জানানো হয়েছে, বিষ্ণুবাবু তপসিয়া থেকে ট্যাক্সি নিয়ে পার্ক স্ট্রিটের উদ্দেশে রওনা হন। কিছু দূর যাওয়ার পরে তাঁর আপত্তি অগ্রাহ্য করেই তিন জন যুবককে ট্যাক্সিতে তোলে চালক। প্রতিবাদ জানালে বিষ্ণুবাবুকে মারধর করে তাঁর সব টাকা কেড়ে নেওয়া হয়। চিংড়িহাটার মোড়ে তাঁকে নামিয়ে দিয়ে ট্যাক্সিটি পালিয়ে যায়।
তদন্তে নামেন গোয়েন্দারা। ওই ঘটনায় বিষ্ণুবাবুর পরিচিত লোকজন বা পরিচিতদের নিয়োগ করা দুষ্কৃতীরা জড়িত বলে সন্দেহ হয় তাঁদের। কারণ, ওই ব্যক্তি যে অত টাকা নিয়ে বেরোচ্ছেন, ঘনিষ্ঠ লোকজন ছাড়া অন্যদের তা জানার কথা নয়। সেই সন্দেহ থেকে গোয়েন্দারা প্রথমে বিষ্ণুবাবুর অফিস থেকে শঙ্কর সিংহ নামে এক কর্মীকে গ্রেফতার করেন। তাকে জেরা করে মার্ক জোসেফ ও মহম্মদ সুরজ নামে আরও দু’জনকে ধরা হয়। ধৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার হয় প্রায় দেড় লক্ষ টাকা।
বাকি টাকা এবং অন্য দুষ্কৃতীদের হদিস মিলছিল না। তবে তদন্ত চলছিলই। শুক্রবার ধরা পড়ে হুসেন। পুরো চক্রান্তে সে জড়িত বলে সন্দেহ করছে পুলিশ। এ দিন আটক করা হয় ট্যাক্সিটিকেও। কিন্তু ট্যাক্সিচালক এখনও পলাতক। তার খোঁজ চলছে। প্রাথমিক ভাবে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, ছিনতাইয়ের পুরো ছক কষেছিল শঙ্করই। এবং সে-ই তিন দুষ্কৃতীকে রাস্তায় দাঁড় করিয়ে রেখেছিল। গোয়েন্দাদের ধারণা, সে-দিন অফিস থেকেই বিষ্ণুবাবুর গতিবিধির উপরে নজরদারি চালানো হচ্ছিল। টাকার ব্যাগ নিয়ে তিনি কখন কোন দিকে যাচ্ছেন, কী ভাবে যাচ্ছেন, খুঁটিয়ে দেখে যাচ্ছিল দুষ্কৃতীরা। তিনি তপসিয়া থেকে ট্যাক্সি ধরে কিছুটা এগোতেই তিন দুষ্কৃতী পথ আটকায়। ট্যাক্সিতে ওঠে। গোয়েন্দা-প্রধান পল্লবকান্তি ঘোষ বলেন, “এ দিন আরও ১২ লক্ষ টাকা উদ্ধার হয়েছে। ট্যাক্সিচালককে ধরতে পারলে সে-দিনের ঘটনাটি পরিষ্কার হবে।”