সল্টলেকে ভবঘুরে চোর নিয়ে নাজেহাল পুলিশ

পুরনো দুষ্কৃতীরা সল্টলেকের পিছু ছাড়ছে না। উপরন্তু সল্টলেকের নতুন বিপদ এখন ভবঘুরের দল। না আছে তাদের কোনও ঠিকানা, না আছে মোবাইল। ফলে তাদের সম্পর্কে তথ্য জোগাড়ে হিমশিম খাওয়ার মতো অবস্থা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০১৫ ০০:৫৬
Share:

উদ্ধার হওয়া ফোন ও ল্যাপটপ।

পুরনো দুষ্কৃতীরা সল্টলেকের পিছু ছাড়ছে না। উপরন্তু সল্টলেকের নতুন বিপদ এখন ভবঘুরের দল। না আছে তাদের কোনও ঠিকানা, না আছে মোবাইল। ফলে তাদের সম্পর্কে তথ্য জোগাড়ে হিমশিম খাওয়ার মতো অবস্থা।

Advertisement

পরপর চুরির ঘটনার তদন্তে নেমে এমনই ছ’জন ভবঘুরেকে গ্রেফতার করেছে সল্টলেক পুলিশ। সঙ্গে পুরনো দুই দুষ্কৃতীকেও চুরির ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে। মোট সাতটি চুরির কিনারা হয়েছে বলে দাবি পুলিশের। তদন্তে নেমে পুলিশ উদ্ধার করেছে ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা, ২০টি মোবাইল, দু’টি ল্যাপটপ, একটি ট্যাব, কিছু গয়না ও পুরনো মুদ্রা।

বৃহস্পতিবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে সল্টলেক পুলিশ এই তথ্য জানায়। পাশাপাশি বাসিন্দাদের কাছে পুলিশের আবেদন, ভবঘুরে দেখলেই সতর্ক হোন। সন্দেহজনক গতিবিধি দেখলে পুলিশকে খবর দিন। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, কেন ভবঘুরেদের উপরে নজর রাখা যাচ্ছে না? কেনই বা অপরাধের আগে পুলিশের কাছে আগাম কোনও তথ্য থাকছে না?

Advertisement

বিধাননগরের এডিসিপি দেবাশিস ধরের দাবি, এই ধরনের ভবঘুরেদের কোনও স্থায়ী বাসস্থান নেই, মোবাইল নেই। গ্রেফতার হলেও জেল থেকে মুক্তি পেয়ে বেরোনোর পরে তাদের উপরে নজর রাখা খুব মুশকিল। পুলিশের দাবি, সল্টলেকের বিভিন্ন চুরির ঘটনায় ধৃতেরা জেরায় স্বীকার করেছে যে, সল্টলেকের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরতে ঘুরতে নজরে কোনও ফাঁকা বাড়ি পড়লে তারা চুরি করেছে। যে সব জিনিস সহজে পকেটে নেওয়া যায়, সে সব জিনিসই চুরি করছে। পুলিশের দাবি, চুরি যাওয়া জিনিস কোনও নির্দিষ্ট জায়গায় বিক্রি করেনি ধৃতেরা। যখন যেমন জায়গায় পেয়েছে বিক্রি করে দিয়েছে।

পুলিশের দাবি, তারা নজরদারি চালালেও বাসিন্দাদের সহযোগিতা প্রয়োজন। সেখানেই সেই পুরনো সমস্যা ফিরে আসছে। তা হল, পুলিশ ও বাসিন্দাদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব।

পুলিশকর্তাদের একাংশের অভিযোগ, সল্টলেকের পরিকাঠামো বিবেচনায় রেখে সিসিটিভি-র নজরদারির প্রস্তাব দিয়েছিল কমিশনারেট। বিভিন্ন আবাসন, ব্লক থেকে শুরু করে সমস্ত সরকারি অফিস— জানানো হয়েছিল সব জায়গায়। কিন্তু প্রস্তাবে সবাই সম্মত হলেও কাজের কাজ হয়নি। তবু আরও এক বার পুলিশ প্রশাসন সিসিটিভি বসানোর প্রস্তাব দিতে চলেছে।

পুলিশের দাবি, সিসিটিভি নজরদারিতে ইতিমধ্যে সাফল্য এসেছে। পুলিশের প্রস্তাবে সাড়া দিয়েছিল ৯ নম্বর ওয়ার্ড। কিন্তু ওইটুকুই। বাকি সল্টলেক সেই তিমিরেই। বাসিন্দাদের একটি সংগঠনের কর্মকর্তা কুমারশঙ্কর সাধু বলেন, ‘‘নজদারির কাজ পুলিশের একার পক্ষে সম্ভব নয়। সুরক্ষার প্রশ্নে বাসিন্দাদেরও দায়িত্ব নিতে হবে।’’

বাসিন্দাদের বক্তব্য, পুলিশের প্রস্তাব ভাল। কিন্তু কেন তাতে সাড়া মিলছে না, তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। ব্লক বা আবাসন কমিটিরও কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। তবুও পুলিশের তরফে প্রস্তাব নিয়ে স্থানীয় ব্লক বা আবাসন কমিটি কিংবা ওয়ার্ড কমিটির একযোগে কাজ করা প্রয়োজন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement