সাইবার বিপদ এড়াতে পড়ুয়াদের পাঠ দিল পুলিশ

বৃহস্পতিবার সরকারি স্কুলের শিক্ষক সমিতির উদ্যোগে বেথুন কলেজিয়েট স্কুলে সাইবার ক্রাইম নিয়ে একটি সচেতনতা শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল। সন্তানদের মোবাইল-কম্পিউটারে আসক্তি নিয়ে চিন্তিত-আতঙ্কিত অভিভাবকেরা ভিড় করেছিলেন সেখানেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০১৮ ০১:৪৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

সারাদিন একটা চিন্তাই মাথায় ঘুরছে, ছেলে মোমো খেলছে না তো!

Advertisement

চিন্তা প্রকাশ করলেন এক স্কুলপড়ুয়ার মা, শম্পা কর্মকার। তিনি একা নন, এমন আতঙ্কে যে ভুগছেন আরও কত অভিভাবক, কথায় কথায় উঠে এল সে সবও।

বৃহস্পতিবার সরকারি স্কুলের শিক্ষক সমিতির উদ্যোগে বেথুন কলেজিয়েট স্কুলে সাইবার ক্রাইম নিয়ে একটি সচেতনতা শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল। সন্তানদের মোবাইল-কম্পিউটারে আসক্তি নিয়ে চিন্তিত-আতঙ্কিত অভিভাবকেরা ভিড় করেছিলেন সেখানেই। যেমন হুগলি থেকে ছুটে এসেছিলেন শম্পাদেবী। বিশেষজ্ঞদের সামনে তাঁরা সকলে মন খুলে জানালেন, সাইবার দুনিয়ার নানা কীর্তিকলাপে কী পরিমাণ চিন্তিত তাঁরা! হাজির ছিল সরকারি স্কুলের বেশ কিছু পড়ুয়াও। লালবাজারের সাইবার থানার প্রতিনিধিরা সেখানেই সাইবার দুনিয়ার কীর্তিকলাপ সম্পর্কে সবিস্তার বোঝালেন পড়ুয়া ও অভিভাবকদের।

Advertisement

এ দিন পড়ুয়াদের অনেকের কথা শুনেই বিশেষজ্ঞেরা বুঝলেন, মোবাইলে গেম খেলায় কতটা অভ্যস্ত তারা। নিজের ফোন যে সকলের আছে, তেমন নয়। অভিভাবকদের ফোনেও গেম খেলে তাদের অনেকেই। বেথুন কলেজিয়েট স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী চন্দ্রিমা দাস যেমন বলল, ‘‘বাবার মোবাইল নিয়ে অনেক সময়েই খেলি। এখন মাঝেমধ্যেই বাবা আমাকে বলে, মোমো এলে আমাকে জানাস কিন্তু।’’ সেখানেই উপস্থিত উত্তরপাড়া গভর্নমেন্ট স্কুলের পড়ুয়া অনলজ্যোতি ভদ্রও বাবার ফোন নিয়েই খেলে। সে বলে, ‘‘সব গেম খেলি না। তবু এখন যা সব হচ্ছে, তাতে ভয়ই লাগে।’’

চন্দ্রিমার বাবার মতোই চিন্তিত অন্য অভিভাবকেরাও। তাঁদের অধিকাংশের বক্তব্য, কোনও ভাবেই বাড়িতে মোবাইল ফোনের ব্যবহার বন্ধ করা সম্ভব নয়। কিন্তু মোবাইল গেমের খারাপ প্রভাব থেকে কী ভাবে সন্তানকে বাঁচাবেন, তা ভেবেই দিশাহারা তাঁরা। এখন যেমন মোমো নিয়ে রীতিমতো আতঙ্কিত অনেকেই। এই শিবিরে লালবাজারের প্রতিনিধিরা অবশ্য জানিয়েছেন, আসলে মোমো নামের কোনও খেলাই নেই। এটা একেবারেই গুজব। কোনও অসুবিধা হলেই পুলিশকে যেন জানানো হয়।

এ দিন বাণীপুর গভর্নমেন্ট বেসিক কাম মাল্টিপারপাস স্কুলের শিক্ষিকা পর্ণা চৌধুরী বলেন, ‘‘হাবরা থানা থেকেও এ ভাবে সাইবার সচেতনতার অনুষ্ঠান করা হয়েছিল। এগুলি খুবই জরুরি।’’ পশ্চিমবঙ্গ সরকারি বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৌগত বসু জানালেন, বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকেই তাঁরা এই শিবিরের আয়োজন করেছিলেন। ভবিষ্যতে আরও বড় আকারে করা হবে।

তবে শুধু মোমোই নয়, এ দিনের শিবিরে সতর্ক করা হল সাইবার দুনিয়ার আরও বেশ কিছু বিষয় নিয়ে। ব্যাঙ্ক থেকে অনলাইনে টাকা তোলা, ফেসবুকে অচেনা মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত কি না— এ সব নিয়েও পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বললেন লালবাজারের প্রতিনিধিরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন