এনআরএস কুকুর-কাণ্ডে চার্জশিট পেশ ন’মাস পরে

পুলিশ জানায়, চার্জশিটে মৃত কুকুরগুলির ময়না-তদন্তের ও ভিসেরা রিপোর্ট যুক্ত করা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০১৯ ০৪:০৯
Share:

এনআরএস-কাণ্ডে উদ্ধার হয়েছিল ১৬টি কুকুরছানার দেহ। ফাইল চিত্র

এনআরএস হাসপাতালের ভিতর কুকুরছানাদের পিটিয়ে মারার মামলায় ন’মাস পেরিয়ে শিয়ালদহ আদালতে চার্জশিট পেশ করল এন্টালি থানার পুলিশ। তিন দিন আগে ওই চার্জশিট পেশ করা হয়েছে। ঘটনায় অভিযুক্ত হাসপাতালের দুই নার্সিং পড়ুয়াই বর্তমানে জামিনে রয়েছেন। পুলিশ জানায়, তাঁদের এক জন কাকদ্বীপের বাসিন্দা সোমা বর্মণ। অন্য জন বাঁকুড়ার মৌটুসি মণ্ডল। সোমা দ্বিতীয় বর্ষের এবং মৌটুসি প্রথম বর্ষের ছাত্রী।

Advertisement

শিয়ালদহ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি অরূপ চক্রবর্তী জানান, চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি হাসপাতালের নার্সিং পড়ুয়াদের আবাসনের সামনে ১৬টি সদ্যোজাত কুকুরছানাকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে পুতুল রায় নামে এক মহিলা এন্টালি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। হাসপাতালের কর্মী আবাসনের বাসিন্দা ওই মহিলার অভিযোগ ছিল কুকুরছানাগুলিকে পিটিয়ে মারা হয়েছে। তদন্তে পুলিশ জানতে পারে ঘটনায় জড়িত ওই দুই নার্সিং পড়ুয়া। তাঁদের বিরুদ্ধে পশুহত্যা ও তথ্যপ্রমাণ লোপাট এবং পশু ক্লেশ নিবারণ আইনে মামলা দায়ের হয়েছে।

পুলিশ জানায়, চার্জশিটে মৃত কুকুরগুলির ময়না-তদন্তের ও ভিসেরা রিপোর্ট যুক্ত করা হয়েছে। দুই রিপোর্টেই উল্লেখ, কুকুরগুলিকে মারা হয়েছে শক্ত ও ভারী জিনিস দিয়ে। আঘাত পেয়ে হৃৎপিণ্ড বন্ধ হয়ে রক্ত জমে মারা যায় তারা।

Advertisement

কৌঁসুলি জানান, চার্জশিটে ২৩ জন সাক্ষীর নাম রয়েছে। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন বেলগাছিয়ার পশু হাসপাতালের ময়না-তদন্তকারী চিকিৎসক মলয় মাইতি, হাসপাতালের অভ্যন্তরীণ তদন্তকারী সদস্য তথা ডেপুটি সুপার চিকিৎসক দ্বৈপায়ন বিশ্বাস এবং ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ পি বি মাইতি। ওই আইনজীবী জানান, ২০৪ পাতার চার্জশিটে রাখা হয়েছে ঘটনাস্থলের স্কেচ বা নকশাও।

ঘটনার পরে এনআরএস হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ‘এথিক্স কমিটি’ গড়ে অভ্যন্তরীণ তদন্ত করান। সেই রিপোর্টও চার্জশিটের সঙ্গে পেশ হয়েছে। তাতে লেখা রয়েছে, ওই দুই নার্সিং পড়ুয়া-সহ হাসপাতালের বেশ কয়েক জন কর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তখন দুই ছাত্রী নিজেদের দোষ স্বীকারও করেন। তার জেরে দু’জনকেই ‘সাসপেন্ড’ করতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে সুপারিশ করে ওই কমিটি।

এ দিকে একটি পশুপ্রেমী স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষে জনৈক তিতাস মুখোপাধ্যায় আদালতে একটি আবেদনপত্র জমা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, কুকুরছানাগুলিকে পিটিয়ে মারায় কেবল দুই ছাত্রী নন। আরও অনেকে জড়িত বলে তাঁর সন্দেহ। পুলিশকে আরও তদন্ত করতে নির্দেশ দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন তিনি।

সরকারি কৌঁসুলি জানান, ৪ নভেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে। ওই দিন অভিযুক্তদের আইনজীবীদের হাতে চার্জশিট-সহ মামলার সব নথি তুলে দেওয়া হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন