কলেজ স্ট্রিটের বর্ণপরিচয় মার্কেটের একটি দোকানে সস্তায় পাওয়া যাচ্ছে বৈদ্যুতিক মোটর। খবর পেয়ে দামি গাড়ি চেপে সেখানে হাজির হয়েছিলেন কয়েক জন ক্রেতা। বইয়ের দোকানের ভিতর দিয়ে গিয়ে তাঁরা পৌঁছন এক দোকানের সামনে। ক্রেতা দেখে খুশি হয়ে দোকান-মালিক একের পর এক মোটর দেখাতে শুরু করেন। আর তখনই ক্রেতার খোলস সরিয়ে নিজেদের পুলিশ বলে পরিচয় দিয়ে হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয় দোকান-মালিক ও আরও দু’জনকে। শুক্রবার এ ভাবেই একটি মোটর চুরি চক্রের তিন জনকে পাকড়াও করল চিৎপুর থানার পুলিশ। উদ্ধার হয়েছে ১৫২টি বৈদ্যুতিক মোটর।
পুলিশ সূত্রের খবর, ধৃতদের নাম ইসমাইল সর্দার, সঞ্জয় জয়সওয়াল ও দিলীপ গুপ্ত। গত ২৩ নভেম্বর রামগোপাল ঘোষ রোডের একটি গুদামের মালিক চিৎপুর থানায় অভিযোগে জানান, একই দিনে তাঁর গুদাম থেকে দেড়শোর উপর মোটর চুরি হয়েছে। কিন্তু একসঙ্গে এত মোটর কে চুরি করবে, তা প্রথমে বুঝতে পারছিলেন না তদন্তকারী অফিসারেরা। এর মধ্যেই তাঁরা খবর পান, এক ব্যক্তি এলাকায় কম দামে বৈদ্যুতিক মোটর বিক্রি করছে। আর সেই খবর ঘুরছে হোয়াটসঅ্যাপে। এক পুলিশকর্মীর মোবাইলেও ছবি-সহ মোটর বিক্রির খবর আসে। সেই সূত্র ধরে মোটর কিনতে গিয়ে গ্রেফতার হয় কাশীপুরের জ্যোতিনগর বস্তির বাসিন্দা ইসমাইল।
ইসমাইলকে জেরা করে অফিসারেরা জানতে পারেন, সে আরও কয়েক জনকে নিয়ে রামগোপাল ঘোষ রোডে ওই গুদামের ঘুলঘুলি ভেঙে ঢুকে মোটরগুলি চুরি করেছিল। তার পরে সেগুলি নিয়ে গিয়েছিল একটি ছোট মালবাহী গাড়িতে। অভিযুক্ত আরও জানিয়েছে, ওই মোটরগুলি তার কাছ থেকে কিনেছিল সঞ্জয় ও দিলীপ। তারাই বলেছিল, চুরির মাল কম দামে মিলবে কলেজ স্ট্রিট মার্কেটে।
ইসমাইলের থেকে এই তথ্য পাওয়ার পরেই চিৎপুর থানার তদন্তকারী অফিসারেরা ঠিক করেন, ক্রেতা সেজে বর্ণপরিচয়
মার্কেটে যাবেন। সেই মতো শুক্রবার একটি গাড়ি ভাড়া করে, ধোপদুরস্ত পোশাক পরে ঘটনাস্থলে পৌঁছন কয়েক জন অফিসার। মার্কেটের ভিতরে একের পর এক বইয়ের দোকান পেরিয়ে তাঁরা পৌঁছন একটি দোকানের সামনে। সেখানেই মজুত করা ছিল বৈদ্যুতিক মোটর। ভাল ক্রেতা পেয়ে দোকান-মালিকও একের পর এক মোটর দেখাতে থাকেন। আর তখনই ক্রেতার ছদ্মবেশ ছেড়ে বেরিয়ে আসেন পুলিশ অফিসারেরা। হাতেনাতে ধরা হয়
সঞ্জয় ও দিলীপকে।