মেঝেতে পড়ে রয়েছে রক্ত। দেখাচ্ছেন আহত আলোকরঞ্জন চক্রবর্তীর(ইনসেটে) মেয়ে মৌমিতা। সোমবার, তেঘরিয়ায়। নিজস্ব চিত্র
তেঘরিয়ার নন্দনকাননে বৃদ্ধ দম্পতির উপরে হামলার ঘটনায় দুষ্কৃতীদের উদ্দেশ্য নিয়ে এখনও ধন্দ কাটল না। সোমবার থেকে একাধিক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও ধোঁয়াশার বৃত্তেই আটকে বিধাননগর সিটি পুলিশের তদন্তকারী অফিসারেরা।
গত শনিবার রাতে নিজের বাড়িতে দুই দুষ্কৃতীর হাতে আক্রান্ত হন ৬৮ বছরের বৃদ্ধ আলোকরঞ্জন চক্রবর্তী এবং তাঁর স্ত্রী রত্না চক্রবর্তী। আলোকরঞ্জনবাবু জানিয়েছিলেন, জানলার কাচে আঁচড় কাটার শব্দ পেয়ে প্রথমে তিনি ভেবেছিলেন, সেটা ভামের কাজ। উৎস সম্পর্কে নিশ্চিত হতে বৃদ্ধ বারান্দার দরজা খোলেন। কিন্তু অন্ধকারে কিছু বুঝতে না পেরে ফের আলো জ্বালিয়ে এসে দেখেন, দুই যুবক এসি-র পিছনে লুকিয়ে। তৎক্ষণাৎ দরজা বন্ধ করতে গেলে আলোকরঞ্জনবাবুর উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে এক দুষ্কৃতী। ধস্তাধস্তির শব্দে রত্নাদেবীর ঘুম ভেঙে গেলে তাঁকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয় আর এক জন।
পুলিশ সূত্রের খবর, এই বিবরণে তদন্তকারীরা কিছু প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন। এক আধিকারিক জানান, জানলা দিয়ে ঢোকাই দুষ্কৃতীদের উদ্দেশ্য হলে গ্রিল কাটল না কেন? বৃদ্ধের দাবি অনুযায়ী, তিনি কাচে আঁচড় কাটার শব্দ পেয়েছেন। তদন্তকারীদের বক্তব্য, বৃদ্ধ যাতে বারান্দায় আসেন, সে জন্যই কি আঁচড় কাটছিল দুষ্কৃতীরা?
লুটের উদ্দেশ্য খারিজ করে তদন্তকারীদের বক্তব্য, বৃদ্ধ যখন আলো জ্বালানোর জন্য ঘরে ঢোকেন, তখনই দুষ্কৃতীরা পালাতে পারত। কিন্তু তারা বৃদ্ধের ফেরা পর্যন্ত অপেক্ষা করেছে। ফলে পুলিশের অনুমান, হামলা চালিয়ে ‘উচিত শিক্ষা’ দেওয়াই লক্ষ্য ছিল। আর একটি বিষয়ও ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। আলোকরঞ্জনবাবু জানিয়েছেন, তিনি বারান্দার দরজা খুলে অন্ধকারে অন্তত দু’মিনিট দাঁড়িয়েছিলেন। হামলা করাই উদ্দেশ্য হলে দুষ্কৃতীরা তখন আক্রমণ করতে পারত। কারণ, অন্ধকারে তাদের মুখ দেখার সুযোগ ছিল না। এই পরিস্থিতিতে সব দিক খতিয়ে দেখার পক্ষপাতী তদন্তকারীরা। মঙ্গলবার ওই বৃদ্ধ বলেন, ‘‘দোষীরা যাতে শাস্তি পায়, পুলিশ তা নিশ্চিত করুক।’