রাত প্রায় ১১টা। বিবাহ মণ্ডপে পাত্র-পাত্রীর হাতের উপর হাত। পুরোহিত মশাই মন্ত্রপাঠ করছেন। বাড়ির উঠোনের চারদিকে ঝিকমিক করছে টুনি লাইট। ভেসে আসছে সানাইয়ের সুর। হঠাৎই বাড়ির সদর দরজায় এসে দাঁড়াল একটি পুলিশের জিপ। মুহূর্তে কেটে গেল তাল। ভেস্তে গেল বিয়েবাড়ির মেজাজ। মন্ত্রপাঠ ছেড়ে পুরোহিত মশাই দে ছুট।
জিপ থেকে জনা চারেক পুলিশকর্মী বিয়ের আসরে হাজির হতেই পাত্র দু’হাত জড়ো করে দাঁড়িয়ে। পাশে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে পাত্রী। পুলিশের আগমনে নিমেষে বিয়ের আসর ফাঁকা।
বৃহস্পতিবার রাতে এমনই দৃশ্যের সাক্ষী থাকল মহেশতলা থানা এলাকার চকমির। কিন্তু বিয়ের আসরে এমন ব্যাঘাত কেন ঘটাল পুলিশ?
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই রাতে সাড়ে ১০টা নাগাদ মহেশতলা থানায় ফোন করে জানানো হয়, চকমির এলাকায় এক নাবালিকার বিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ঠিকানা খুঁজে সর্দারপাড়ার ওই বাড়িতে হাজির হয় পুলিশ। গভীর রাতে মহেশতলা থানার আইসি শুভাশিস চৌধুরীর নেতৃত্বে বিশাল বাহিনী পৌঁছে উদ্ধার করে ওই নাবালিকাকে। এক তদন্তকারী অফিসার জানান, পাত্রীর বয়সের প্রমাণপত্র যাচাই করা হয়। তার পরেই জানা যায়, থানার ফোনে আসা স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগই ঠিক। পাত্রীর বয়স ১৭। বিশ্বজিৎ সর্দার নামে পাত্রকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তার বয়স ৩৫। এবং সে বিবাহিত। এর পরেই বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ আইনে পাত্র ও পাত্রীর অভিভাবকদেরও গ্রেফতার করা হয়। ধৃতদের শুক্রবার আলিপুর আদালতে হাজির করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ওই নাবালিকাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গিয়েছে, তার অমতেই ওই বিয়ে দেওয়া হচ্ছিল।