মাত্র এগারো দিন আগে মুখ্যমন্ত্রী প্রকল্পের শিলান্যাস করেছেন। শুক্রবার কাজ শুরু করতে গিয়েই বাধার মুখে পড়লেন কেএমডিএ-র আধিকারিকেরা। ঘটনাস্থল দক্ষিণেশ্বর।
মন্দিরে ঢোকার রাস্তায় যানজট কমাতে ‘স্কাই ওয়াক’ প্রকল্পের শিলান্যাস করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার মন্দিরে ঢোকার একমাত্র রাস্তা রানি রাসমণি রোডে ফলক লাগাতে এলে কেএমডিএ কর্তাদের বাধা দেন দোকানদারেরা। তাঁদের অভিযোগ, আলোচনা না করেই প্রকল্পের শিলান্যাস করা হয়েছে। প্রকল্প হলে ব্যবসায় লোকসান হবে বলেও দাবি তাঁদের।
যদিও পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “প্রকল্পের নকশা দোকানদারদের দেখানো হয়েছিল। কামারহাটি এলাকায় পুরভোট থাকায় এখনই কিছু করা যাচ্ছে না। দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের ট্রাস্টি কুশল চৌধুরী ও কামারহাটির চেয়ারম্যান গোপাল সাহাকে দায়িত্ব দেওয়া রয়েছে। ভোট মিটলে আলোচনা হবে।”
এ ব্যাপারে কেএমডিএ-র এক কর্তা বলেন, “দোকানদারেরা কিছু দিন সময় চেয়েছেন। তার পরেও বাধা এলে অন্য ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রয়োজন কড়া হাতে মোকাবিলা করতে হবে।”
প্রকল্পের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে শুক্রবার দিনভর ওই রাস্তার সব দোকান ছিল। আজ, শনিবারও সব দোকান বন্ধ থাকবে। সোমবার থেকে লাগাতার আন্দোলনেরও হুমকি দিয়েছেন দোকানদারেরা।
রানি রাসমণি রোডের দু’ধারে প্রসাদ, ফুল-মালা, খাবার ও গয়না-সহ প্রায় ১৩৭টি দোকান। দর্শনার্থী ও যানবাহনের দৌলতে সেখানে যানজট লেগেই থাকত। সমস্যা সমাধানে দীর্ঘ দিন ধরে মন্দির কর্তৃপক্ষের তরফে প্রশাসনের কাছে আবেদন জানানো হচ্ছিল। ২০১২ সালে দক্ষিণেশ্বরে এক অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন, ওই রাস্তায় আন্ডারপাস হবে। কিন্তু প্রযুক্তিগত জটিলতায় তা হয়নি। পরে ‘স্কাই ওয়াক’ তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। ১৭ মার্চ শিলান্যাসের পরে কেএমডিএ সূত্রে জানানো হয়, স্কাই ওয়াকের উপরে থাকবে হাঁটার জায়গা ও দোকান। নীচ দিয়ে শুধু গাড়ি যাবে।
এই সিদ্ধান্তেরই বিরোধিতা করেছেন দোকানদারেরা। দক্ষিণেশ্বর রানি রাসমণি রোড দোকানদার সমিতির সদস্য চঞ্চল শীল বলেন, “এর ফলে ব্যবসায় লোকসান হবে।” সংগঠনের সভাপতি কালীপদ বর্মণ বলেন, “তিন বছর আগে পুরসভা ও কেএমডিএ-কে বলেছিলাম মন্দির কমিটিকে চিঠি দিয়ে বিকল্প প্রস্তাব জানাতে। কিন্তু আলোচনা ছাড়াই আচমকা স্কাই ওয়াকের শিলান্যাস হয়ে গেল। আমরা শুধু পরিকল্পনাটা বদলানোর আবেদন করছি। গাড়ি সেতুর উপর দিয়ে চলুক। নীচে দোকান থাকুক। পথচারীরাও যাতায়াত করুক।”