সেই জায়গা। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল।
জমি জটে আপাতত আটকে গেল ৮৯ নম্বর ওয়ার্ডে কমিউনিটি হল এবং ওয়ার্ড অফিস তৈরির পুর-প্রকল্প। কারণ, নির্মাণের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের প্রয়োজনীয় অনুমতি এখনও পাওয়া যায়নি। ভোটের মুখে এ নিয়ে বাসিন্দাদের মধ্য ক্ষোভ রয়েছে।
টালিগঞ্জের চারুচন্দ্র ইস্ট অ্যাভিনিউ সংলগ্ন ৮৯ নম্বর ওয়ার্ডে একটি কমিউনিটি হল তৈরির জন্য কলকাতা পুরসভা অনেক দিন আগে থেকেই জমির খোঁজ করছিল। পুরসভা সূত্রের খবর, এই ওয়ার্ডে কমিউনিটি হল ছাড়াও একটি ওয়ার্ড অফিস তৈরির কথা ভাবা হয়েছিল। ঠিক হয়েছিল লেকগার্ডেন্স উড়ালপুল সংলগ্ন ফাঁকা জায়গায় দু’টিই তৈরি হবে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমতি না পাওয়ায় এই প্রকল্প আটকে রয়েছে।
ওয়ার্ড অফিস না থাকায় এলাকার বাসিন্দারা সরাসরি বরো অফিসে যোগাযোগ করেন। সেখানেই তাঁরা পুরসভা পুর-পরিষেবা সংক্রান্ত নানা বিষয়ের খবর পান। বাসিন্দাদের দাবি, এলাকায় একটি নির্দিষ্ট ওয়ার্ড অফিস তৈরি হলে তাঁরা সরাসরি সেখানেই স্থানীয় কাউন্সিলরের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন।
অন্য দিকে, এই ওয়ার্ডে কোনও কমিউনিটি সেন্টার নেই। এই দু’টি ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলরকে জানালে তিনি পুরকর্তৃপক্ষকে জানান। পুরসভা স্থানীয় বরো চেয়ারম্যান এবং কাউন্সিলরকে এলাকায় জমি দেখার ব্যাপারে আর্জি জানান। দেখা যায় উড়ালপুলের পাশেই ফুড কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া লাগোয়া বেশ কিছুটা জমি ফাঁকাই পড়ে রয়েছে। পুরসভা সূত্রের খবর, জমিটি কেন্দ্রীয় খাদ্য মন্ত্রকের। সেখানেই প্রাথমিক ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, এই জমিতেই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত করা হবে। এই দু’টি প্রকল্পের জন্য প্রাথমিক ভাবে একটি নকশাও তৈরি করা হয় বলেও পুরসভার এক আধিকারিক জানান।
বিদায়ী পুরবোর্ডের ১০ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান তপন দাশগুপ্ত বলেন, “এখানে কোনও ফাঁকা জমি নেই। সেই কারণেই আমরা কেন্দ্রীয় সরকারের জমিতে এই প্রকল্প গ্রহণ করার চেষ্টা করি। কিন্তু কোনও অনুমতি না মেলায় তা হচ্ছে না। আমরা এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে চাই। পুরসভার নির্বাচন এসে পড়ায় আপাতত বিষয়টি স্থগিত রইল।”
বিদায়ী বোর্ডের স্থানীয় কাউন্সিলর তৃণমূলের মমতা মজুমদার বলেন, “এখানে ওয়ার্ড অফিস এবং বাসিন্দাদের জন্য কমিউনিটি হলের প্রয়োজন রয়েছে। নির্দিষ্ট কোনও জায়গা না থাকায় স্থানীয় ক্লাব বা পার্টি অফিসে বসেই কাজ চালাতে হয়।” মমতাদেবী জানান, এই জমিটি ফুড কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়ার। পুরসভাকে এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছি। এমন কী রাজ্যের খাদ্য দফতরকেও কেন্দ্রীয় খাদ্য মন্ত্রকের সঙ্গে আলোচনার জন্য অনুরোধ জানিয়েছি। যদিও কেন্দ্রীয় খাদ্যমন্ত্রক সূত্রে খবর, এ ব্যাপারে আমাদের কাছে কোনও খবর নেই।
অন্য দিকে, লেকগার্ডেন্স উড়ালপুল যে জায়গায় অবস্থিত তার নীচেও বেশ কিছু জমিই খালি পড়ে রয়েছে। সেই জমিটির মালিক রাজ্য পূর্ত দফতর। সেই জমিটিতে পার্ক তৈরির জন্যও পুরসভার পরিকল্পনা রয়েছে। আপাতত যাতে জায়গাটি নোংরা না হয় সেই কারণে পুরসভার পক্ষ থেকেই জায়গাটি ঘিরে দেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছে। এর মধ্যই একাংশ ঘিরে ফেলা হয়েছে বলে পূর্ত দফতরের দাবি।