‘গেট’ পরীক্ষায় ফেল শহরের দুই হাসপাতাল

এ দিন জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত কর্মীদের জন্য সিলেবাস বহির্ভূত প্রশ্ন তুলে রেখেছিলেন কলকাতা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (কমব্যাট) নভেন্দ্র সিংহ পাল এবং স্বাস্থ্য দফতরের অতিরিক্ত সচিব সঞ্জয় বনসল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০১৯ ০০:৩৭
Share:

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নভেন্দ্র সিংহ পাল-সহ পরিদর্শক দল। শনিবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

প্রবেশপথেই আটকে গেলেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এবং আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ!

Advertisement

শনিবার ওই দুই মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্বাস্থ্য ভবন এবং কলকাতা পুলিশের কর্তাদের যৌথ পরিদর্শন ছিল। শুক্রবার যে পরিদর্শনে চাবি-বিভ্রাট ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষকে বিড়ম্বনায় ফেলেছিল। ঘটনাচক্রে, এ দিনও ‘গেট পরীক্ষায়’ উত্তীর্ণ হতে পারেনি দুই হাসপাতাল।

ঘণ্টাখানেক বৈঠক শেষে দুপুরে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শুরু হয় পরিদর্শন। এ দিন জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত কর্মীদের জন্য সিলেবাস বহির্ভূত প্রশ্ন তুলে রেখেছিলেন কলকাতা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (কমব্যাট) নভেন্দ্র সিংহ পাল এবং স্বাস্থ্য দফতরের অতিরিক্ত সচিব সঞ্জয় বনসল। পরিদর্শক দলের কয়েক জন সদস্য ভিতরে ঢুকতেই ডেপুটি কমিশনার কোল্যাপসিবল গেট বন্ধের নির্দেশ দেন। তখনও পরিদর্শকদের অনেকে বাইরে। তাঁদের জন্য কর্মীরা ফের গেট খুলে দিলে ডেপুটি কমিশনার ধমকে বলেন, ‘‘কাউকে ঢুকতে দিতে নিষেধ করেছি তো? তাহলে ঢুকতে দিলেন কেন!’’ এক কর্মী বলেন, ‘‘ওঁরা পরিদর্শক দলেরই সদস্য।’’ ডেপুটি কমিশনার পাল্টা বলেন, ‘‘যে-ই হোক! যখন নিষেধ করেছি তখন কাউকে ঢুকতে দেবেন না।’’ ডেপুটি কমিশনারের মুখের কথা শেষ হতে না হতেই আসরে নামেন অতিরিক্ত সচিব। গেটের তালা কোথায় তা তিনি জানতে চান। জরুরি বিভাগের কোল্যাপসিবল গেটের তালার হদিস কেউ দিতে না পারায় দৃশ্যতই বিরক্ত হন সচিব। তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘এখানে নিরাপত্তারক্ষী আছেন কি নেই? কেউ যদি জরুরি বিভাগে হামলা করেন, তা হলে গেট বন্ধ করবেন কী ভাবে!’’

Advertisement

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে তো তবু কোল্যাপসিবল টানা গিয়েছিল। আর জি করে সেটুকুও হয়নি। জরুরি বিভাগের প্রবেশপথে পৌঁছে গেট বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়। কর্তব্যরত রক্ষী তড়িঘড়ি কাঠের দরজা বন্ধ করতে সক্রিয় হন। অতিরিক্ত সচিব তাঁকে থামিয়ে জানান, তিনি কোল্যাপসিবল গেট বন্ধ করতে বলছেন। এক বার চেষ্টার পরেই রক্ষী বলেন, ‘‘স্যার, কোল্যাপসিবল জ্যাম!’’ হাসপাতালে গোলমালের প্রশ্নে স্পর্শকাতর এলাকা হিসাবে চিহ্নিত জরুরি বিভাগ। স্বাভাবিক ভাবে নিরাপত্তার প্রশ্নে সে দিকে নজর দিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে পরামর্শ দেওয়া হয়।

অন্য হাসপাতালগুলির মতো এ দিনের পরিদর্শনেও পার্কিং, হাসপাতালের ঢোকা-বেরোনো, ওয়ার্ডে রোগীর যাতায়াত, রক্ষীদের প্রশিক্ষণ নিয়ে কথা হয়। চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ থেকে বিধান সরণিতে পৌঁছতে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজকে অনেকে করিডর ভাবেন, সে কথাও পরিদর্শকদের জানান কর্তৃপক্ষ। আর জি করে মেটারনিটি ব্লকের

সামনের এলইডি ডিসপ্লে বোর্ড কেন কাজে লাগানো হচ্ছে না তা জানতে চায় পরিদর্শক দল। স্বাস্থ্য ভবন সূত্রের খবর, তিন দিনের এই পরিদর্শন শেষে শহরের হাসপাতালগুলির জন্য নিরাপত্তা সংক্রান্ত আদর্শ আচরণবিধি তৈরি করা হবে।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন