ধূর্তদের ফাঁদে ফেলতে রেডিও কলার

প্রথম রাউন্ডের এই ফলে হাল না ছেড়ে এ বার ফিরতি ম্যাচের প্রস্তুতিতে উঠেপড়ে লেগেছেন বিমানবন্দর-কর্তৃপক্ষ। প্রতিপক্ষের গতিবিধি নজরে রাখতে তৈরি নতুন স্ট্র্যাটেজিও।

Advertisement

সুনন্দ ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০১৬ ০০:৩৯
Share:

অঙ্কন: অশোক মল্লিক

শেয়াল ১ : বিমানবন্দর ০।

Advertisement

প্রথম রাউন্ডের এই ফলে হাল না ছেড়ে এ বার ফিরতি ম্যাচের প্রস্তুতিতে উঠেপড়ে লেগেছেন বিমানবন্দর-কর্তৃপক্ষ। প্রতিপক্ষের গতিবিধি নজরে রাখতে তৈরি নতুন স্ট্র্যাটেজিও।

শুরুতে খানিক সাফল্য এলেও ইদানীং ২০টি খাঁচা সাজিয়ে ভিতরে জ্যান্ত মুরগির টোপ দিয়েও ধরা যাচ্ছিল না তাদের। কখনও মুরগি থাকছে অক্ষতই, কখনও শেয়াল খাঁচায় ধরা না দিলেও ভিতরে বেঁধে রাখা মুরগি হাপিস। আশ্চর্য দক্ষতার ও চাতুরির মেলবন্ধনে অবাক অফিসারেরা। তাই এ বার ঠিক হয়েছে, শেয়ালদের গলায় পরানো হবে রেডিও কলার। ঠিক যেমনটা পরানো হত সুন্দরবনের বাঘের গলায়। দূর থেকে মনিটরের মাধ্যমে কোনও প্রাণীর গতিবিধি নজরে রাখতে যা পরানো হয়।

Advertisement

বিমানবন্দরের অধিকর্তা অতুল দীক্ষিত জানান, জুলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার (জেডএসআই) কাছে সাহায্য চাওয়া হয়। এপ্রিলে বিমানবন্দরেই বন দফতরের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের পরে জেডএসআই ও বন দফতরের প্রতিনিধিরা বিমানবন্দর ঘুরে দেখেন। জেডএসআই-এর পক্ষ থেকেই শেয়ালদের গলায় রেডিও কলার লাগানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়। এ নিয়ে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে জেডএসআই-এর একটি চুক্তি হওয়ার কথা। ঠিক হয়েছে, চুক্তির পরে প্রথম যে তিনটি শেয়াল খাঁচায় ধরা পড়বে, তাদের বন দফতরের হাতে তুলে না দিয়ে রেডিও কলার পরিয়ে ছেড়ে দেওয়া হবে বিমানবন্দরের ভিতরেই। তার পরে শুরু হবে আসল খেলা।

অতুল বলেন, ‘‘ধৃত শেয়ালদের গতিবিধি দেখতে জেডএসআই-এর তিনটি দল থাকবে বিমানবন্দরে। রেডিও কলারের মাধ্যমে শেয়ালদের লুকনো ডেরার হদিস পাব।’’

জেডএসআই-এর বিজ্ঞানী মহেশ্বরন গোপীনাথের কথায়, ‘‘প্রথমে দেখতে হবে, যে শেয়ালরা রানওয়ে পর্যন্ত আসছে, তারা বিমানবন্দরেই ঘাঁটি গেড়েছে না বাইরে থেকে আসছে। যদি সুড়ঙ্গ খুঁড়ে বাইরে থেকে যাতায়াত করে, তবে সুড়ঙ্গ বন্ধ করতে হবে। আর যদি দেখা যায় বিমানবন্দরের ভিতরেই তারা ডেরা বেঁধে রয়েছে, তখন ডেরাগুলির কাছে ক্যামেরা বসানো হবে। তাতে স্পষ্ট দেখা যাবে তাদের গতিবিধি।’’ শেয়ালদের গোপন ডেরার হদিস পেয়ে ঘুমপাড়ানি গুলি ছুড়ে তাদের দেওয়া হবে বন দফতরের হাতে।

সম্প্রতি বিমানবন্দরের ভিতরে শেয়ালের সংখ্যা বেড়েছে, যখন-তখন সেগুলি চলে আসছে রানওয়েতে। এতে যেমন বিমান ওঠা-নামায় অসুবিধা হচ্ছে, তেমনি থেকে যাচ্ছে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা। শেয়াল ধরার নতুন ব্যবস্থায় এ সবই এড়ানো যাবে বলে আশা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের। তাই দ্বিতীয় রাউন্ডের খেলার প্রস্তুতি চলছে জোরকদমে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন