বাজেয়াপ্ত বন্দুক ও কার্তুজ।
দক্ষিণ শহরতলির রবীন্দ্রনগর থানা এলাকার খানকুলি এলাকা এক অস্ত্র কারখানার হদিস পেল পুলিশ। নাইনএমএম ও ওয়ান শটার-সহ প্রায় শতাধিক অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে বলে জানান দক্ষিণ ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার সুনীল চৌধুরী।
মুঙ্গেরের দুই কারিগর-সহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ। ওই এলাকায় একটি ঘরে অস্ত্র তৈরি করা হত। আর একটি ঘরে তৈরি অস্ত্র রাখা হয়। এ দিন দুপুরে ওই কারখানায় হানা দেয় দক্ষিণ ২৪ পরগনার স্পেশাল অপারেশনস্ গ্রুপ। তখন কারখানায় অস্ত্রও তৈরিও হচ্ছিল। পুলিশের কথায়, হাতে নাতে ধরা হয়েছে ওই কারিগরদের। কারখানায় লেদ মেশিন, গ্যাস সিলিন্ডার ও নানা যন্ত্র মিলেছে। পুলিশ জানায়, কারখানাটি থেকে দক্ষিণ শহরতলি এলাকায় অস্ত্র পাচার করা হত বলে জেরায় কবুল করেছে ধৃতেরা।
এক তদন্তকারী অফিসারের কথায়, ঘরের মধ্যে থরে থরে ওয়ান শটার সাজিয়ে রাখা ছিল। কয়েকটি ঝুড়িতে রাখা ছিল নাইনএমএম ও কার্তুজ। পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকায় ওয়ান শটার ও ২২ থেকে ২৫ হাজার টাকায় নাইনএমএম বিক্রি করা হত বলে জেরায় জানিয়েছে ধৃতেরা। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, প্রায় বছর খানেক ধরে মুঙ্গের থেকে কারিগর এসে ওই কারখানায় অস্ত্র তৈরি করছে।
জেলা পুলিশ সূত্রে খবর, সোমবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ের ঘটকপুকুর এলাকা থেকে অস্ত্র-সহ তিন জনকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার স্পেশাল অপারেশনস্ গ্রুপের অফিসাররা গ্রেফতার করে। রেজ্জাউল মোল্লা নামে ওই পাচারকারী দলের পাণ্ডা জীবনতলার বাসিন্দা। ধৃতদের কাছে মিলেছে দুটি একনলা বন্দুক উদ্ধার।
পুুলিশের কথায়, রেজাউলের বাবার একটি বন্দুকের বৈধ লাইসেন্স রয়েছে। মুঙ্গের থেকে আনা নানা বন্দুকের বাটে ওই লাইসেন্স নম্বর খোদাই করে পাচার করত রেজাউল। ধৃতরা গত নির্বাচনে বিভিন্ন এলাকায় অস্ত্র পাচার করেছে বলে দাবি তদন্তকারীদের। কলকাতার একটি সরকারি বন্দুকের দোকানের মালিকের সঙ্গে রেজাউলের যোগসাজস মিলেছে। ধৃতদের জেরায় করে মঙ্গলবার ক্যানিং থানা এলাকা থেকে মহম্মদ সেলিম ও নিজাম পুরকাইত নামে আরও দু’জনকে ধরা হয়। তাঁদের কাছেও অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। নিজামের কাছে মিলেছে একটি ডায়েরি। সেখানে কিছু ঠিকানা ও নম্বর পাওয়া যায়। ওই সব ফোন নম্বরের সূত্র ধরে কলকাতা বন্দর এলাকা লাগোয়া রবীন্দ্রনগর থানার খানকুলি এলাকার ওই অস্ত্র কারখানার হদিস পাওয়া যায়।
অন্য দিকে, সোমবার ওয়াটগঞ্জ স্ট্রিট থেকে সাহাবুদ্দিন ওরফে রফি নামে আগ্নেয়াস্ত্র-সহ এক ব্যক্তিকে ধরল পুলিশ। পুলিশ জানায়, তাঁর কাছ থেকে একটি দেশি পিস্তল এবং এক রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার হয়েছে। মঙ্গলবার তাঁকে আলিপুর আদালতে তোলা হলে চোদ্দো দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়।