পাঁচিল ভেঙে, হুমকি দিয়ে উচ্ছেদের চেষ্টা

১৫ বছর আগে কিনেছিলেন এক চিলতে জমি। পরে বুঝতে পারেন, সেই দেড় কাঠা জমি খালি ফেলে রেখে দিলে তা যে কোনও সময়ে বেদখল হয়ে যেতে পারে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০১৬ ০৬:১০
Share:

সেই জমি। বৃহস্পতিবার, আনন্দপুরে। — নিজস্ব চিত্র

১৫ বছর আগে কিনেছিলেন এক চিলতে জমি। পরে বুঝতে পারেন, সেই দেড় কাঠা জমি খালি ফেলে রেখে দিলে তা যে কোনও সময়ে বেদখল হয়ে যেতে পারে।

Advertisement

দেড় বছর আগে জমিটিকে পাঁচিল ও টিন দিয়ে কোনওমতে ঘিরে একটিমাত্র ঘর তুলেছিলেন প্রৌঢ় দম্পতি। তা-ও মাথার উপরে চাল নেই। কোথাও থেকে মোটা প্লাস্টিকের পোস্টার জোগাড় করে দশ ফুট বাই দশ ফুট সেই ঘরের মাথা ঢাকা রয়েছে।

অভিযোগ, সেই জমির দখল নিয়ে চান স্থানীয় এক ব্যক্তি। পুলিশের মতে, তিনি ছোটখাটো জমি কেনাবেচাও করেন। ওই পরিবারের কর্ত্রী, বছর পঞ্চান্নের সরস্বতী দেবনাথের দাবি, ওই ব্যক্তির থেকেই জমিটি তাঁরা কেনেন। অভিযোগ, তাঁদের বেদখল করতে এক দল দুষ্কৃতী বুধবার রাত বারোটা নাগাদ জমির পাঁচিল ও টিন-লোহার গেট ভেঙে দেয়। তদন্ত শুরু করেছে আনন্দপুর থানার পুলিশ।

Advertisement

সরস্বতীদেবী বৃহস্পতিবার জানান, ২০০১ সালে দেড় লক্ষ টাকা দিয়ে তিনি ও তাঁর ছেলে বিশ্বজিৎ মাদুরদহ-হুসেনপুর এলাকায় জমিটি কেনেন। তিনি বলেন, ‘‘সম্প্রতি জমিটির চারদিক পাঁচিল এবং টিন দিয়ে ঘিরে একটি অস্থায়ী ঘর গড়ে অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে থাকতে শুরু করেছি। যাঁর থেকে জমি কিনেছিলাম, সেই সুকুমার মণ্ডলের লোকজনই তার পর থেকে জমি ছাড়ার জন্য আমাদের হুমকি দিতে শুরু করে।’’

এ দিন গিয়ে দেখা যায়, ওই জমির পাঁচিল ও গেট ভাঙা। যে সব অংশ টিন দিয়ে ঘেরা ছিল তা-ও উপড়ে ফেলা হয়েছে। সরস্বতীদেবীর অভিযোগ, বুধবার রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ মুখে গামছা বাঁধা জনা ছয়েক যুবক ঘেরা জমির ভিতরে ঢোকে। দম্পতিকে কোনও শব্দ করতে বারণ করে, হাতুড়ি দিয়ে পাঁচিল গুঁড়িয়ে, টিন উপড়ে তারা চলে যায়। প্রৌঢ়া বলেন, ‘‘ওরা বলে যায় মুখ খুললে প্রাণে মেরে দেবে।’’

পুলিশ জানায়, গড়ফার বাসিন্দা সুকুমারের জমি রয়েছে এই জমির পাশেই। তিনি এ দিন জানান, তাঁর মোট ৫ কাঠা জমি রয়েছে। তাঁর অভিযোগ, সেই জমির মধ্যেই দেড় কাঠা নিজেদের বলে দাবি করছেন ওই দম্পতি। ফলে, ওই দেড় কাঠা জমি ঘিরে উভয় পক্ষের বিবাদ আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কিছু স্থানীয় বাসিন্দার অভিযোগ, ওই প্রৌঢ়় দম্পতি স্থানীয় কিছু বাধায় বাড়ি তৈরি করতে পারছেন না।

আনন্দপুর থানার এক পুলিশ অফিসার জানান, যারা এই কাণ্ড ঘটিয়েছে তাদের খোঁজ শুরু হয়েছে। ওই জমির উপরে রাতেও পুলিশের নজরদারি থাকবে। ওই প্রৌঢ়় দম্পতির নিরাপত্তা যাতে বিঘ্নিত না হয় সেদিকেও পুলিশ কড়া নজর রাখবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন