মাদুরদহ-সার্ভে পার্ক

খন্দপথে জমা জলই চেনা ছবি

রাস্তা বলতে বড় বড় গর্ত। সেখানেই জল জমে তৈরি হয়েছে ডোবা। পিচ রাস্তা কার্যত কিছু নেই। বেশির ভাগ জায়গাতেই রয়ে গিয়েছে কাঁচা মাটির সড়ক। ফলে, অল্প বৃষ্টিতেই প্যাচপ্যাচে কাদা এলাকা জুড়ে। ভারী বৃষ্টিতে যেন জল থই থই নদী। গ্রাম নয়, খাস কলকাতা শহরে ই এম বাইপাস সংলগ্ন মাদুরদহ অঞ্চলের ছবিটা এ রকমই।

Advertisement

কৌশিক ঘোষ

শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৫ ০০:৩১
Share:

গর্ত বাঁচিয়ে এ ভাবেই যাতায়াত। মাদুরদহে। —নিজস্ব চিত্র।

রাস্তা বলতে বড় বড় গর্ত। সেখানেই জল জমে তৈরি হয়েছে ডোবা।
পিচ রাস্তা কার্যত কিছু নেই। বেশির ভাগ জায়গাতেই রয়ে গিয়েছে কাঁচা মাটির সড়ক। ফলে, অল্প বৃষ্টিতেই প্যাচপ্যাচে কাদা এলাকা জুড়ে। ভারী বৃষ্টিতে যেন জল থই থই নদী। গ্রাম নয়, খাস কলকাতা শহরে ই এম বাইপাস সংলগ্ন মাদুরদহ অঞ্চলের ছবিটা এ রকমই। শুধু মাদুরদহ-ই নয়, একটু এগোলে খাল সংলগ্ন সার্ভে পার্ক এলাকার রাস্তার চেহারাও একই।
এই রাস্তার দু’ধারেই অসংখ্য বহুতল। বৃষ্টিতে বহুতলগুলির ভিতরে জল ঢুকে সমস্যায় পড়তে হয় বাসিন্দাদের। মাদুরদহের বাসিন্দা মঙ্গল সর্দার বলেন, ‘‘রাস্তার সমস্যাতেই মানুষ জেরবার হচ্ছেন। খাস কলকাতা পুরসভার অন্তর্গত এই এলাকার চারপাশ বদলে গেলেও এখানকার সমস্যাটা একই রকম থেকে যাচ্ছে।’’

Advertisement

একই অভিযোগ সার্ভে পার্ক এলাকার বাসিন্দা অপূর্ব ভট্টাচার্যেরও। তিনি বলেন, ‘‘একেই রাস্তা খানা খন্দে ভরা। তার পরে অল্প বৃষ্টিতেই জল জমে যায়। সেই জল জমে থাকায় প্রচণ্ড দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হয় বাসিন্দাদের। পুরসভা কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।’’

কিন্তু কেন পরিষেবা দিতে পারছে না পুরসভা? পুর কর্ত়ৃপক্ষের বক্তব্য, মাদুরদহ, আনন্দপুর ও বাইপাস সংলগ্ন পাটুলির একাংশে জমি কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটির। কিছু জমি কলকাতা পুরসভারও অন্তর্গত। তাই এলাকার সামগ্রিক উন্নয়নে কেএমডিএ-এর অনুমতি প্রয়োজন। অনেক অংশই বর্তমানে পুরসভা কেএমডিএ-র কাছ থেকে নিয়ে সামগ্রিক পরিকল্পনা করছে। কিন্তু প্রশাসনিক জটিলতা থাকায় পুরো বিষয়টাই সময়সাপেক্ষ হয়েছে। তার ফলেই পরিষেবায় কিছু ঘাটতি থেকে গিয়েছে বলে দাবি পুরসভার।

Advertisement

পুরসভা সূত্রে খবর, সম্প্রতি আনন্দপুর-সহ বাইপাস সংলগ্ন বিস্তীর্ণ অংশ কলকাতা পরিবেশ উন্নয়ন প্রকল্প (কেইআইপি)-র অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কলকাতা পুরসভার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এখানে সামগ্রিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে কিছু জটিলতা থাকায় সমস্যা ছিল। অর্থের ক্ষেত্রেও সমস্যা ছিল। কী ভাবে দ্রুত কাজ করা যায়, সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।’’ কলকাতা পুরসভার ১২ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান সুশান্তকুমার ঘোষ বলেন, ‘‘এলাকার বেশ কিছু রাস্তা খারাপ ঠিকই। কয়েকটি রাস্তায় পুরসভা কাজ করছে। কেইআইপি-র কাজ শেষ হলে এই সমস্যা থাকবে না।’’

কিন্তু মাদুরদহ ও সার্ভে পার্কে রাস্তা তৈরিতে দেরি হচ্ছে কেন? পুরসভার রাস্তা দফতরের এক আধিকারিক জানান, এই অঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকায় নিকাশির সংযোগ নেই। ফলে জল জমে যাচ্ছে। জল জমে থাকায় রাস্তা তৈরি করাও সম্ভব হচ্ছে না। রাস্তা তৈরির আগে তাই প্রয়োজন এলাকার নিকাশির উন্নয়ন। সেই কারণেই কেইআইপি কর্তৃপক্ষকে এই কাজ করতে বলা হয়েছে। কেইআইপি-র এক আধিকারিক জানান, এই প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ে এই অঞ্চলে কাজ করা হবে বলে তালিকাভুক্ত হয়েছে।

মেয়র পারিষদ (রাস্তা) রতন দে জানান, তিনি এবং রাস্তা দফতরের আধিকারিকরা এলাকাগুলি পরিদর্শন করেছেন। যত দ্রুত সম্ভব এই কাজ শুরু করার জন্য কেইআইপিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বর্ষা শেষ হলেই আপাতত কিছুটা রাস্তা মেরামতি করা হবে বলে রতনবাবুর দাবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন